পাসপোর্ট জটিলতার কারণে যে খেলোয়াড়কে আনতে পারছে না বার্সেলোনা

উরুগুয়ের এই তারকাকে দলে চাইছে বার্সেলোনা। ছবি: টুইটার
উরুগুয়ের এই তারকাকে দলে চাইছে বার্সেলোনা। ছবি: টুইটার
>লুইস সুয়ারেজের বয়স হয়ে গেছে ৩২। ফর্ম কিছুটা হলেও পড়তির দিকে। আগের মতো প্রতি ম্যাচেই তাঁর কাছ থেকে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখা যায় না। বার্সেলোনাও বুঝতে পারছে, নতুন স্ট্রাইকার আনার সময় হয়েছে। সে জন্য বার্সেলোনার মূল পছন্দ উরুগুয়ের আরেক স্ট্রাইকার। কিন্তু সেই স্ট্রাইকারের পাসপোর্ট নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা।

ম্যাক্সি গোমেজ। স্প্যানিশ লা লিগা যারা নিয়মিত অনুসরণ করেন তাদের কাছে মোটামুটি পরিচিত এই তরুণ। মৌসুমের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই স্ট্রাইকার নজরে এসেছেন বার্সেলোনার। লুইস সুয়ারেজ পরবর্তী যুগে সুয়ারেজের স্বদেশি এই গোমেজকেই দলে আনতে চাচ্ছে তারা। কিন্তু বাধ সাধছে পাসপোর্ট।

স্প্যানিশ লা লিগার নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ক্লাবের তিনজনের বেশি অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড় থাকতে পারবেন না। বার্সেলোনার স্কোয়াডে অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড় হিসেবে এর মধ্যেই আছেন ফিলিপ কুতিনহো, আর্থার মেলো, লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ, মালকম, হেইসন মুরিয়ো ও আর্তুরো ভিদাল। তবে এর মধ্যেও কাহিনি আছে। কোনো অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড়ের কাছে যদি ইউরোপীয় কোনো দেশের নাগরিকত্ব থাকে বা সে দেশের পাসপোর্ট থাকে, তবে সে খেলোয়াড় ইউরোপীয় হিসেবে পরিগণিত হবেন। যে কারণে মেসি, সুয়ারেজ, কুতিনহো, মুরিয়ো সবাই ইউরোপীয় খেলোয়াড়, কেননা তাদের সকলেরই ইউরোপীয় কোনো না কোনো দেশের পাসপোর্ট আছে। ন্যূনতম দুই বছর স্পেনে খেলার কারণে স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন মেসি, সুয়ারেজ ও মুরিয়ো। স্ত্রী পর্তুগিজ হওয়ার কারণে পর্তুগিজ পাসপোর্ট জোগাড় করতে পেরেছেন কুতিনহো। তা সত্ত্বেও বার্সা দলে এখনো তিনজন অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড় রয়ে গেছেন - ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার মালকম ও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার আর্থার মেলো, এবং চিলিয়ান সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার আর্তুরো ভিদাল। যে কারণে বার্সেলোনা চাইলেও ম্যাক্সি গোমেজকে দলে আনতে পারছে না। কিন্তু, এর মধ্যে মালকম-ভিদাল-আর্থার ত্রয়ীর মধ্যে কেউ যদি ইউরোপীয় পাসপোর্ট জোগাড় করে ফেলতে পারেন, তবে তিনি অ-ইউরোপীয় খেলোয়াড় হিসেবে পরিগণিত হবেন, মেসিদের মতোই। তা না হলে এই তিনজনের মধ্যে যেকোনো একজনকে বিক্রি করে দিতে হবে, যদি বার্সা আসলেই ম্যাক্সি গোমেজকে চায়। আর্থার মেলোকে ভাবা হচ্ছে পরবর্তী জাভি হার্নান্দেজ, তাই আর্থার ক্লাব ছাড়বেন, এ আশা করা বৃথা। আর্তুরো ভিদালের বয়স হয়ে গেলেও এখনো এক-দুই মৌসুম ভালোই খেলার সামর্থ্য আছে তাঁর, যে কারণে এখনই ভিদালকে হয়তো বার্সা বিক্রি করবে না। তিনজনের মধ্যে কেউ ক্লাব ছাড়লে সেটা মালকমই হবেন। যদিও এটা নিশ্চিত নয়। কাউকে না বিক্রি করতে পারলে ম্যাক্সি গোমেজকে চাইলেও পাবে না বার্সা।

২০১৭ থেকে স্প্যানিশ ক্লাব সেল্টা ভিগোতে খেলা গোমেজ এ পর্যন্ত লিগে ৫৯ ম্যাচ খেলে ২৬ গোল করেছেন। যদিও উরুগুয়ের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলে ফেললেও এখনো গোলের খাতা খোলা হয়নি তাঁর। এই মৌসুমে সেল্টার হয়ে ১৪ ম্যাচ খেলে ৯টি গোল ও ৫টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। লিগে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষেও গোল আছে তাঁর। সেল্টা তাঁর মূল্য ৫০ মিলিয়ন ইউরো হাঁকালেও এই মৌসুমে তারা যদি অবনমিত হয়ে যায়, তবে গোমেজের দাম কমে অর্ধেক হয়ে যাবে। লিগে ১৮ নম্বরে থাকার কারণে সেল্টা ভিগোর অবনমিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।

বার্সা ম্যাক্সি গোমেজ ছাড়াও আরো বেশ কিছু স্ট্রাইকারকে নজরে রাখছে। যেমন আইনট্র্যাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের সার্বিয়ান তারকা লুকা ইয়োভিচ, লিলের আইভোরিয়ান তারকা নিকোলাস পেপে, আরবি লাইপজিগের টিমো ভার্নার প্রমুখ।