আফগানিস্তানের প্রথম টেস্ট জয়ের গৌরব

দারুণ খেলেছেন আফগান ব্যাটসম্যান ইহসানউল্লাহ। জয়ের অন্যতম নায়ক তিনি। ছবি: এএফপি
দারুণ খেলেছেন আফগান ব্যাটসম্যান ইহসানউল্লাহ। জয়ের অন্যতম নায়ক তিনি। ছবি: এএফপি
>

নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জিতল আফগানিস্তান। দেরাদুনে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে উৎসবে শামিল তারা।

দেরাদুনে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী আফগানিস্তানের ক্রিকেট। বাকি ক্রিকেট দুনিয়াও। প্রথম টেস্ট জয় তো বিশেষ কিছুই। আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টেই জয়ের স্বাদ পেয়ে গেল আফগানরা।
খুব বড় লক্ষ্যমাত্রা ছিল না আফগানদের সামনে—মাত্র ১৪৭ রান। সে লক্ষ্য আফগানিস্তান পেরিয়ে গেছে সহজেই, ইহসানউল্লাহ ও রহমত শাহর ব্যাটিংয়ে। দুজনই ফিফটি পেয়েছেন, ইহসানউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৬৫ রানে, ১২৯ বল খেলে। রহমত শাহ করেছেন ১২২ বলে ৭৬। ইহসানের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কা। রহমত শাহ মেরেছেন ১৩টি বাউন্ডারি।

ইনিংসের শুরুতেই, দলীয় ৫ রানেই অবশ্য মোহাম্মদ শাহজাদের উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল আফগানিস্তান। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের বলে উইকেটের পেছনে স্টুয়ার্ট পয়েন্টারকে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। সেটি অবশ্য গতকালকের ব্যাপার। কাল দিন শেষে ১ উইকেটে ২৯ রান তোলা আফগানরা আজ চতুর্থ দিনটাকে নিজেদেরই করে নিয়েছিল। আজ আইরিশদের সাফল্য বলতে রহমত শাহ আর মোহাম্মদ নবীর উইকেট। নবী জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর ব্যক্তিগত ১ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন। ১ উইকেটে ১৪৪ রান তুলে ফেলা আফগানিস্তান শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয়। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন ম্যাকব্রাইন ও জেমস ক্যামেরন ডো।
টসে জিতে এ টেস্ট প্রথমে ব্যাটিং করেছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আফগানিস্তান জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে সব কটি উইকেট হারিয়ে তোলে ৩১৪ রান। ১৪২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ড তোলে ২৮৮। ফলে চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের সামনে ১৪৭ রানের বেশি দিতে পারেনি আইরিশরা।

আফগান বোলাররা দুই ইনিংসেই ছিলেন দুর্দান্ত। বিশেষ করে লেগ স্পিনার রশিদ খান। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট তাঁর। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস বেশি দূর যেতে দেননি তিনি। এ ছাড়া ইয়ামিন আহমেদজাই দুই ইনিংসেই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। মোহাম্মদ নবী প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট তুলে নেন ৩৬ রানে। আরেক বোলার ওয়াকার সালামখেইল দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট (২টি করে)। রশিদ দেরাদুনে দেশের প্রথম টেস্ট জয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত একটা কীর্তিরও মালিক হয়েছেন সবচেয়ে কম বয়সে (২০ বছর ১৮৭ দিন) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই ৫ উইকেট পেলেন তিনি।

প্রথম টেস্ট জয়টা সব সময়ই আনন্দের। সেই আনন্দই ম্যাচ শেষে ছিল আফগানিস্তানের অধিনায়ক আসগর আফগানের কণ্ঠে, ‘দারুণ খুশি। এটি আফগানিস্তানের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। এটি আমাদের দলের জন্য ঐতিহাসিক, আফগান জনগণের জন্য ঐতিহাসিক। আমরা অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও অনেক দিন ধরে খেলি, সুতরাং এ ধরনের ক্রিকেটের রসায়নের সঙ্গে আমরা পরিচিত। বোলাররা খুব ভালো করেছে। বিশেষ করে রশিদ খান ও ইয়ামিন আহমেদজাই। আমরা এখন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে দক্ষিণ আফ্রিকা যাব। আমরা আমাদের সেরা খেলাটা খেলার সর্বাত্মক চেষ্টাই করে যাব।’