মোহাম্মদ রফিকের যে কীর্তি মনে করালেন নবী

রফিককে স্পর্শ করলেন নবী। ছবি: টুইটার
রফিককে স্পর্শ করলেন নবী। ছবি: টুইটার
>

আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জিতল আফগানিস্তান। আফগানদের দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম টেস্ট জয়ের সাক্ষী হয়ে নবী ফিরিয়ে আনলেন বাংলাদেশের সাবেক স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের একটি অর্জন

আফগানিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে মোহাম্মদ নবীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আফগানিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক যথারীতি দলটার ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জয়ের অন্যতম কারিগর। আজ আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জিতেছে আফগানরা। এই জয়ী দলের সদস্য হয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন এই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। আর একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক স্পিনার মোহাম্মদ রফিককে।

ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে আফগানিদের পাওয়া প্রথম জয়ে দলের অংশ হলেন নবী। এর আগে আফগানিরা যে দল নিয়ে তাদের ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে জিতেছিল, সে দলে ছিলেন নবী। এবার আফগানদের প্রথম টেস্ট জয়ের সাক্ষীও হলেন মাঠে খেলে।

২০০৯ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল আফগানিস্তান। সে ম্যাচে ব্যাট হাতে ৫৮ রান করেছিলেন নবী। বল হাতে ৪১ রান দিয়ে অবশ্য উইকেটশূন্য ছিলেন। পরের বছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথম জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। সে ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৩ রান করেন নবী। বল হাতে ২৫ রানে ১ উইকেট নেন। আজ আয়ারল্যান্ডকে হারানো প্রথম টেস্টেও যথারীতি নবী ছিলেন দলে। প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন, যদিও রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০ ওভার বল করে উইকেট পাননি কোনো। ব্যাট হাতে এই ইনিংসের ছিলেন ব্যর্থ, মাত্র ১ রান করে রানআউট হয়েছেন।

কিন্তু নবী ব্যর্থ হলেও দল তো ব্যর্থ হয়নি। নিজেদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান। আর সেই সঙ্গে ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাটে আফগানিস্তানের পাওয়া প্রথম জয়ে দলের অংশ হয়ে থাকলেন এই অলরাউন্ডার।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এর সঙ্গে বাংলাদেশের মোহাম্মদ রফিকের সম্পর্ক কী? আফগানিস্তানের হয়ে নবী যা করলেন, তা বহুকাল আগে করে রেখেছেন রফিক!

বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল কেনিয়ার বিপক্ষে, ১৯৯৮ সালের কোকাকোলা কাপে। হায়দরাবাদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ওয়ানডেতে ছিলেন রফিক। ১০ ওভার বল করে ৫৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া রফিক ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে নেমে ১১ চার ও এক ছক্কার সাহায্যে ৮৭ বলে করেছিলেন ৭৭। দুই ওভার হাতে রেখেই কেনিয়ার দেওয়া ২৩৭ রানের লক্ষ্য টপকে ম্যাচটা জিতে যায় বাংলাদেশ। সে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন রফিক।

বাংলাদেশের প্রথম টেস্টজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন রফিক। শুধু ছিলেন বলাটা ভুল হবে, টেস্ট জয়ের পেছনে রফিকের অবদান ভোলার নয়। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ৯৮ বলে ৬৯ রান করা রফিক জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসও বলতে গেলে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন, প্রায় ৪২ ওভার বল করে ৬৫ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে অপরাজিত রফিক করেন ১৪ রান। জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন সে সময়ের তরুণ স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র। রফিকও ম্যাচসেরার অন্যতম দাবিদার ছিলেন।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। সে ম্যাচেও দলের অংশ ছিলেন রফিক। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ৫ বল খেলে ৩ চার মেরে দ্রুত দলকে ১৩ রান এনে দেন। পরে বল হাতে ৪ ওভার বল করে আঁটসাঁট বোলিং করে ২২ রান দিয়ে তুলে নেন ১টি উইকেট।

এত দিন রফিকের এই কীর্তি ছিল—দেশের প্রথম জয়ের তিন সংস্করণেই অংশ হয়ে থাকা। আজ নবী ছুঁলেন রফিকের সেই কীর্তি।