ওয়েস্ট হামের গোলরক্ষকের সঙ্গে সাবিনাদের লড়াই

ভারতীয় গোলরক্ষক অদিতি চৌহান। ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় গোলরক্ষক অদিতি চৌহান। ছবি: সংগৃহীত

শহরের রত্না হোটেলের পঞ্চম তলায় ডাইনিংয়ে বসে সকালের নাশতা সারছিলেন। ভারতের নারী দলের মিডিয়া কর্মকর্তাকে দিয়ে খবর পাঠাতেই সোজা লবিতে নেমে এলেন অদিতি চৌহান। ভারতের প্রধান গোলরক্ষক অদিতিকে এবারের সাফে কোনো পরীক্ষার মুখোমুখিই হতে হয়নি। দুই ম্যাচে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কাকে ১১ গোল দিয়েছে ভারত। কিন্তু একটি গোলও হজম করেনি চারবারের সাফের চ্যাম্পিয়নরা। 

ও হ্যাঁ, বলাই তো হয়নি- ভারতের মেয়েদের ফুটবলের ইতিহাসে একটা মাইলফলক গড়েছেন অদিতি। প্রথম মহিলা ফুটবলার হিসেবে খেলেছেন ইংল্যান্ডের পেশাদার লিগে। ইংল্যান্ডের তৃতীয় স্তরের দল ওয়েস্ট হাম লেডিস ক্লাবে যোগ দেন ২০১৫ সালে।

এত খেলা থাকতে কেন ফুটবলকেই বেছে নিলেন? প্রশ্নটা করতেই হেসে উঠে বললেন, ‘যখন আমার বয়স নয় বছর, বাবা মায়ের সঙ্গে দিল্লি চলে যাই। ছোট বেলা থেকেই সেখানে স্কুলের সব খেলায় অংশ নিতাম। এক সময় কারাতে ও বাস্কেটবলও খেলেছি। আমার শারীরিক গড়ন, উচ্চতা দেখে এবং বল গ্রিপ করার দক্ষতা দেখে একদিন কোচ আমাকে বললেন, তুমি ফুটবল খেলো। ভালো করবে।’ এরপর রাজ্য দলে গোলকিপার হিসেবে সুযোগ পান অদিতি। দিল্লি অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সেবার খেলেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন।

তাহলে ইংলিশ ফুটবলের সঙ্গে যোগাযোগটা কীভাবে হলো? রহস্যটা খুলে বললেন অদিতি, ‘আসলে আমি এমএসসি পড়তে লাফবরো ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দলে খেলেছি। সেখান থেকেই একজন আমাকে যোগাযোগ করিয়ে দেন ওয়েস্ট হাম লেডিস ক্লাবের সঙ্গে।’

২০১৫ সালের আগস্টে অভিষেক হয় ওয়েস্ট হাম দলে। দুই মৌসুমের চুক্তিতে খেলেছেন সেখানে। ১৫টি লিগের ম্যাচ ও তিনটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন ওয়েস্ট হামের জার্সিতে। ইংল্যান্ডে খেললেও অদিতির মন পড়ে থাকত সব সময় ভারতের জার্সিতে খেলার জন্য। শেষ পর্যন্ত ভারতের জাতীয় দলে ডাক পান শ্রীলঙ্কায়, ২০১২ সালের মেয়েদের সাফে। এরপর থেকে ভারতের জাতীয় দলের হয়ে ১৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৪ সালে ইনচন এশিয়ান গেমসেও ভারতের প্রধান গোলরক্ষক ছিলেন অদিতি। বর্তমানে ভারতের মেয়েদের লিগের দল ইন্ডিয়ান রুশ ক্লাবে খেলছেন ২৬ বছর বয়সী গোলরক্ষক।

ইংলিশ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে জিততে চান এবারের সাফ, ‘ওই সময়ে সেখানে খেলাটা ছিল আমার জন্য অনেক বড় অভিজ্ঞতার ব্যাপার। অনেক কিছু শিখেছি। কিন্তু ভারতের হয়ে খেলতে পেরেই বেশি রোমাঞ্চিত আমি। এখানে খেলতে আসার আগে আমরা তুরস্কে একটা টুর্নামেন্টে খেলেছি। সেটাও আমাদের কাজে দেবে। যদিও আমরা সেমিফাইনাল নিয়ে একটু চাপে রয়েছি , তারপরও আমরা কাল বাংলাদেশের সঙ্গে খেলতে মুখিয়ে আছি।’
ভারতের ফরোয়ার্ড লাইন এতটাই আক্রমণাত্মক যে বেশির ভাগ সময় অলস দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অদিতিকে। যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, ‘ আমরা সেমিতে উঠেছি। বাংলাদেশও ভালো দল। ওরাও প্রস্তুত। আশা করি একটা উপভোগ্য লড়াই হবে।’