অপরাজেয় ভারতকে থামানোর সামর্থ্য বাংলাদেশই রাখে!

মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজেয় আছে ভারত। সংগৃহীত ছবি
মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজেয় আছে ভারত। সংগৃহীত ছবি
>নেপালের বিরাটনগরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মেয়েদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। এ নিয়ে পাঁচটি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছে ভারত। তাতে ২০ জয়। একটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল, সেটা বাংলাদেশের বিপক্ষে

২০১০ থেকে ২০১৯, বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে নেপালের বিরাটনগর। দীর্ঘ ৯ বছরে বিশ্ব ফুটবলের কত পরিসংখ্যানই বদলে গিয়েছে। চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জার্মানি। রাশিয়া বিশ্বকাপে ছড়িয়েছে ফরাসি সৌরভ। কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু লম্বা এই সময়ে মেয়েদের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে কেউ হারাতে পারেনি। এককথায় প্রতিবেশী দেশটি হয়ে উঠেছে অপরাজেয়।

২০১০ সালে শুরু হয়ে চারটি সাফের আসর পেরিয়ে গিয়েছে। চারটিতেই চ্যাম্পিয়ন ভারত। এ টুর্নামেন্টে আজ পর্যন্ত ভারত ২১টি ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু হারেনি একটিতেও। ২০ জয়ের বিপরীতে এক ড্র। পরিষ্কারভাবে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের ফুটবলে ভারতের একক রাজত্ব। সেই রাজত্ব একবারই শুধু হুমকির মুখে পড়েছিল, হারানোর ভয় দেখাতে পেরেছিল একটি দল, সেটি বাংলাদেশ। তা–ও আবার ভারতের মাটিতেই। ২০১৬ সালের শেষ সাফেই তাদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। এই ড্র না হলে ২১ ম্যাচে সব কটিতেই জয় থাকত ভারতের। অর্থাৎ অপরাজেয় ভারতকে থামানোর সামর্থ্য রাখলে তো বাংলাদেশই রাখে। প্রায় দুই বছর আগে শিলিগুড়িতে বসে কথাটি ভারতের কোচ সাজিদ ধর নিজেই বলেছিলেন, ভবিষ্যতে ভারতের জন্য হুমকি বাংলাদেশ। যদিও ফাইনালে বাংলাদেশকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল সাজিদের ভারত।

আগামীকাল সাফের সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে সাবিনা বাহিনী। এবার কি ভারতকে থামিয়ে দিতে পারবে দল। আগের ম্যাচে নেপালের কাছে ৩-১ গোলে হেরে বিধ্বস্ত হওয়া বাংলাদেশ অজেয় ভারতের সামনে দাঁড়ানোর আগে কতটা আত্মবিশ্বাসী? আশায় বুক বাঁধছেন ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন, ‘আশা করি, ভারতের সঙ্গে কোনো ভুল করব না আমরা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। আমরা একসঙ্গে অনেক দিন খেলছি, আশা করি একটা ভালো ম্যাচই উপহার দেব।’

নেপাল ম্যাচের মতো ছোটখাটো ভুল না করলে অঘটন ঘটানো সম্ভব। অন্তত বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি তেমনই বলছেন, ‘মেয়েরা যদি সেদিনের মতো ভুল না করে তাহলে অবশ্যই আমাদের ম্যাচে থাকা সম্ভব। এমনকি আমাদের যথেষ্ট সুযোগ থাকবে ম্যাচটি টাইব্রেকারে নিয়ে যাওয়ার। মেয়েরা যদি স্বাভাবিক খেলাটা খেলে আমরা জিততেও পারি।’ যদিও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দুই দলের শেষ মুখোমুখিতে গত নভেম্বরে অলিম্পিক বাছাইয়ে এই ভারতের কাছে ৭-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।

সেই ভারত এখন আরও ক্ষুরধার। বিরাটনগরে গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে মালদ্বীপকে ৬-০ ও শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে তারা। এত বছর ধরে ভারতের এই অপরাজেয় থাকার রহস্যটাই বা কী? ভারত জাতীয় দলের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে প্রধান কোচের দায়িত্ব পাওয়া ময়মল রকি একটি যুক্তিসংগত ব্যাখ্যাই দিয়েছেন, ‘আমার কাছে এই সাফল্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের চেয়ে অনেক আগে ভারতের মেয়েরা ফুটবল খেলা শুরু করেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যরা যদিও এগিয়ে চলেছে, তবে আমরাও সঠিক পরিকল্পনা করে এগোই। এবং এভাবেই এই টুর্নামেন্টে প্রতিবার খেলতে আসি।’