ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করল আইসিসি

বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের আহ্বান উঠেছে ভারতের ভেতরে। ফাইল ছবি
বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের আহ্বান উঠেছে ভারতের ভেতরে। ফাইল ছবি

কিছুটা ভাটা পড়েছে, কিন্তু ভারতে স্লোগানটা এখনো আছে—বিশ্বকাপে পাকিস্তান ম্যাচ বয়কট করো! ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছে দেশটির ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে অনেক সাবেক ক্রিকেটারও দাবিটা তুলেছেন গত মাসে পুলওয়ামাতে জঙ্গি হামলার পর। যে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ৪০ জন সদস্য। তবে ভারতীয়রা যতই স্লোগান দিক, বিশ্বকাপে পাকিস্তান ম্যাচ বয়কট করার উপায় নেই বিসিসিআইয়ের। আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন বলেছেন সে রকম কথাই।


পিএসএলের ফাইনাল দেখতে গত সোমবার করাচি গিয়েছিলেন রিচার্ডসন। সেখানে তাঁকে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ১৬ জুন ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। উত্তর দিতে গিয়ে আইসিসির প্রধান নির্বাহী যেন ভারতকে মনে করিয়ে দিলেন, ২০১৯ বিশ্বকাপের সব ম্যাচ খেলতে তাঁরা আইসিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, ‘আইসিসির যেকোনো টুর্নামেন্টে সব দল তাদের সব ম্যাচে অংশ নেওয়ার জন্য চুক্তিতে সই করে। কিন্তু কোনো দল যদি এই চুক্তি না মেনে খেলতে রাজি না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউ ম্যাচ বয়কট করতে পারবে না।’ আইসিসিতে খেলা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো জায়গা নেই, বিষয়টিও স্পষ্ট করেছেন রিচার্ডসন, ‘আইসিসির নীতি পরিষ্কার, খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেলাতে চাই না আমরা।’

আইসিসি না চাইলেও ভারত–পাকিস্তানের সম্পর্ক এমন যে সবকিছুতেই সেখানে রাজনীতি চলে আসে। পুলওয়ামা হামলার জের ধরে ভারত আইসিসিকে একটি চিঠি দিয়েছে। যেখানে তারা আহ্বান জানিয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দেয়, এমন কোনো দেশের সঙ্গে আইসিসির কোনো সদস্য দেশ যাতে ক্রিকেট না খেলে। চিঠিতে নাম উল্লেখ না করলেও ভারত আসলে পাকিস্তানকে বয়কট করার কথাই বোঝাতে চেয়েছে। পুলওয়ামার জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের মদদ আছে বলেও দাবি করেছে ভারত।

পাকিস্তান ভারতকে ওই চিঠির জবাব দিয়েছে অন্য একটি চিঠি লিখে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ভারতের খেলোয়াড়েরা আর্মি ক্যাপ পরে মাঠে নেমেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, পুলওয়ামার হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ। পাকিস্তান আইসিসিকে চিঠি দিয়ে এর প্রতিবাদ করেছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের দাবি, আর্মি ক্যাপ পরে ভারত খেলার মধ্যে রাজনীতি টেনে এনেছে। রিচার্ডসন অবশ্য সেটি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটাকে পুলওয়ামায় নিহত মানুষের প্রতি সমবেদনা জানানো হিসেবে দেখা হয়েছে। আর এর জন্য বিসিসিআই আগেই অনুমতি নিয়ে রেখেছিল। আর্মি ক্যাপ পরে ভারত দল ওই হামলায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহও করেছে।’