মাঠে খেলাই দেখতে চান, রাজনীতি নয়

জামাল ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক। ফাইল ছবি
জামাল ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক। ফাইল ছবি
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাইফ স্পোর্টিং ও চট্টগ্রাম আবাহনীর মধ্যকার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। ম্যাচটি পাতানো কি না, খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।


বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে ম্যাচ পাতানোর মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা নতুন কিছু নয়। যদিও দশম রাউন্ডে পা রাখা চলতি প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচের সঙ্গে সমঝোতামূলক বা পাতানোর গুঞ্জন শোনা যায়নি। তবে সাইফ স্পোর্টিং-চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলশূন্য ড্র ম্যাচটি সমঝোতামূলক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে বাফুফে। পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি গতকাল কথাও বলেছে দুই দলের চার ফুটবলারের সঙ্গে। দুই দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া (সাইফ স্পোর্টিং) ও মোনায়েম খান রাজুকে (চট্টগ্রাম আবাহনী) ডাকা হয়েছিল বক্তব্য শোনার জন্য। অভিযোগ ওঠা সাইফের দুই খেলোয়াড় জাফর ইকবাল ও ইয়াসিন আরাফাত অনূর্ধ্ব ২৩ দলের সঙ্গে বাহরাইনে অবস্থান করায় পরে ডাকা হবে।

নিজের দলের বিপক্ষে পাতানো ম্যাচের সন্দেহের অভিযোগে যারপরনাই হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় দল ও সাইফের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। খবরটি প্রথমে শোনার পর অবাকও হয়েছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক, ‘অবাক হয়েছি আমাদের একটি ম্যাচ পাতানোর সন্দেহের তালিকায় আছে দেখে। আমি সাইফে দুই বছর ধরে খেলছি, কখনোই দেখিনি আমাদের দল অনৈতিক কোনো কাজ করেছে। যেহেতু আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া, তাই আমরা সব ম্যাচই জিততে চাই। সব সময় খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারত্বই দেখেছি।’

সাইফের বিপক্ষে পাতানো ম্যাচের অভিযোগ ওঠায় রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন জামাল, ‘মাঠের বাইরে যা হয়, মাঠের বাইরেই রাখতে হবে। খেলার মধ্যে এগুলো আনা যাবে না। খেলোয়াড়দের তাঁদের মতো খেলতে দেওয়া উচিত। খেলোয়াড়দের রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে।’

কিন্তু কী সেই রাজনীতি? জবাবে নির্দিষ্ট করে বলতে ইচ্ছুক ডেনমার্কে বেড়ে ওঠার পরও বাংলাদেশের ফুটবলে এসে থিতু হওয়া এই মিডফিল্ডার, ‘সবাই জানে রাজনীতিটা কী। এই ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। সেগুলো নিয়ে ভাবা আমার কাজও নয়। আমার কাজ ফুটবল খেলা। কিন্তু আমার দলের বিপক্ষে অভিযোগ উঠলে অধিনায়ক হিসেবে কষ্ট তো লাগে।’

চার ফুটবলারের মধ্যে অভিযুক্তের তালিকায় আছেন সাইফের দুই তরুণ জাফর ইকবাল ও ইয়াসিন আরাফাত । দুজন বর্তমানে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব ২৩ বাছাইপর্বের বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আছেন। এ ধরনের অভিযোগে তরুণদের মধ্যে বিরূপ পতিক্রিয়া পড়তে পারে বলে মনে করেন জাতীয় দলের অধিনায়ক, বিশেষ করে সদ্যই যখন বয়সভিত্তিক ফুটবলে আশাজাগানিয়া খবর পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ, ‘জাফর ও ইয়াসিন তরুণ খেলোয়াড়। বিশেষ করে ইয়াসিন এ বছরই প্রথম (প্রিমিয়ার লিগে) খেলতে এসেছে। নিষ্পাপ একটা ছেলে। তাদের এগুলোর বাইরে রাখতে হবে।’

গতকালের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে মুখ খোলা নিষেধ আছে বলে জানালেন জামাল। তবে পাতানো ম্যাচের অভিযোগ নাটকীয় মোড় নিয়েছে। অভিযুক্ত সন্দেহভাজনদের একজন চট্টগ্রাম আবাহনীর উইঙ্গার আবদুল মালেক ময়মনসিংহে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় ছিলেন ঢাকায়। সাইফের বিপক্ষে ম্যাচে আবাহনীর ২০ সদস্যের দলে ছিলেন না মালেক। দলে না থাকা বাকি খেলোয়াড়দের মতো তাঁকেও ঢাকায় রেখে সাইফের বিপক্ষে ‘অ্যাওয়ে ম্যাচ’ খেলতে ময়মনসিংহ গিয়েছিল আবাহনী। দলে না থেকেও তিনি কীভাবে ম্যাচ পাতালেন, এই প্রশ্ন এখন উঠেছে।