পাকিস্তানের নতুন এই গতি তারকা কে?

কাল গতির ঝড় তুলেছিলেন হাসনাইন। সংগৃহীত ছবি
কাল গতির ঝড় তুলেছিলেন হাসনাইন। সংগৃহীত ছবি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিষেকে পুরো বোলিং কোটা পূরণ করা হয়নি। ৯ ওভার বল করে ৫৪ রান দিয়েও কোনো উইকেট পাননি। পড়েই মনে হচ্ছে এমন অনুজ্জ্বল অভিষেক নিয়ে কেন আলোচনা? আলোচনা করতেই হচ্ছে, কারণ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের তুরুপের তাস হতে পারেন মোহাম্মদ হাসনাইন।

বয়স মাত্র ১৮। জীবনে কখনো লিস্ট এ ম্যাচও খেলা হয়নি। সেই বোলার কাল প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলতে নেমে গেলেন। স্ট্রাইকে অ্যারন ফিঞ্চের মতো ব্যাটসম্যান। আগের ম্যাচেই মোহাম্মদ আমিরকে এমনই ছেলেখেলা করেছেন যে দল থেকেই বাদ পড়ে গেছেন। সেই ফিঞ্চকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বল করলেন। ৮৯ মাইল গতির বাউন্সার ফিঞ্চের হেলমেটের পাস দিয়ে চলে গেল। ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা ওয়াকার ইউনিসের মুখে হাসি, ‘আমার পছন্দ হয়েছে। ওকেই নতুন বল দেওয়া উচিত ছিল।’

পাকিস্তান দলের ক্যাপ বুঝে পাওয়ার পর। ছবি: টুইটার
পাকিস্তান দলের ক্যাপ বুঝে পাওয়ার পর। ছবি: টুইটার

নতুন বল যে দেওয়া উচিত ছিল সেটা একটু পরে আবারও বুঝিয়ে দিয়েছেন হাসনাইন। ঘণ্টায় ৯১ মাইল গতির বলটা যখন ফিঞ্চের হেলমেটে আঘাত হানল। ধাক্কা সামলে হেলমেটও বদলাতে হলো ফিঞ্চকে। শারজার মরা উইকেটে এভাবেই একের পর এক বাউন্সার ও দুর্দান্ত কিছু ইয়র্কার দিয়ে দেশটির সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছেন হাসনাইন। ১৮ বছর বয়সেই রিভার্স সুইংও আয়ত্তে নিয়ে ফেলেছেন হাসনাইন। মাত্র দলে আসা এক বোলারকে শুধু শুধু তো আর প্রশংসায় গলে পড়েননি শোয়েব মালিক, ‘বোলিংয়ে যখন ১৪৫ কিলোমিটার গতি তুলতে পারেন, সেটা ভয়ংকর একটা ক্ষমতা। হাসনাইন খুবই প্রতিভাবান বোলার। আমরা অনুশীলন এবং পিএসএলেই দেখেছি। ওকে খুব ভালোভাবেই নজরে রাখছি আমরা। ওর উন্নতি পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য খুব ভালো একটা দিক।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শোয়েব মালিকের অধিনায়কত্বে খেলছেন হাসনাইন। নিয়মিত অধিনায়ক সরফরাজ ফিরলেও সমস্যা হবে না তাঁর। পিএসএলে যে তাঁর অধীনেই খেলেছেন এই ফাস্ট বোলার। ফাইনালে ১৫১ কিলোমিটার গতি তুলে চমকে দিয়েছেন সবাইকে। তিন উইকেট পেয়ে ফাইনাল সেরাও হয়েছিলেন। হায়দ্রাবাদের মাত্র চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডে খেললেন এই কিশোর। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে প্রথম সুযোগ পেয়েছিলেন। পরে অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও খেলেছেন। সে দলের সঙ্গী শাহীন শাহ আফ্রিদি এরই মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জায়গা করে ফেলেছেন। কিন্তু চোটের কারণে বারবার থেমে গেছে হাসনাইনের উত্থান।

এবার পিএসএলেও প্রথমে সুযোগ মেলেনি তাঁর। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের নাসিম শাহ চোটে পড়ায় বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন। তাতেই এমন পারফরম্যান্স যে একেবারে জাতীয় দলেই চলে এলেন। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বাকি তিন ম্যাচে ভালো করতে পারলে হয়তো ২০১৯ বিশ্বকাপেও জায়গা করে ফেলবেন এই গতি তারকা।