ইমরুল-এনামুলের বিশ্বকাপে যাওয়া হচ্ছে না?

বিশ্বকাপ স্বপ্নটা দুই মাস আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে এ দুজনের? ফাইল ছবি
বিশ্বকাপ স্বপ্নটা দুই মাস আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে এ দুজনের? ফাইল ছবি

দুয়ারে বিশ্বকাপ এখনো বলা যাচ্ছে না। আগামী জুন-জুলাইয়ের বিশ্বকাপ নিয়ে চিন্তাভাবনা তবু শুরু হয়ে গেছে। অনেক দলই বিশ্বকাপের একাদশ প্রায় ঠিক করে ফেলেছে। স্কোয়াডের কয়েকটা শূন্যস্থান শুধু পূরণ করা বাকি। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাবে। এ সিরিজের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে দ্বাদশ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন কারা। আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ স্কোয়াড প্রায় প্রস্তুত হয়েই গেছে।

বিশ্বকাপের দলে অনেকেই চমক রাখার চেষ্টা করে। নতুন কোনো মুখ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাঁধায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা থাকে। বাংলাদেশ দল সম্ভবত সে পথে হাঁটছে না। কারণ, স্কোয়াডের ১৫টি স্থান সেই পুরোনো মুখ দিয়েই প্রায় পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবস ক্রিকেট দেখতে এসে বিশ্বকাপ দল নিয়ে নিজের ধারণার কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি। আর তাঁর ধারণা ও চিন্তা অনুযায়ী বিশ্বকাপ দল প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর সে দলে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও এনামুল হকের জায়গা পাওয়ার সুযোগ খুবই কম, ‘তামিম আর দুই ওপেনার। আমি ধরে নিচ্ছি সৌম্য, লিটন যদি খেলে তাহলে তো ওপেনার কোটা শেষ।’

এর আগে এশিয়া কাপ ও বিভিন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজে চার বা এর বেশি ওপেনার নিয়েও খেলেছে বাংলাদেশ দল। তবে বিশ্বকাপের ১৫ জনে সামঞ্জস্য রাখতে তেমন কিছু করার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিসিবি সভাপতি, ‘জায়গা দেখি না। ওপেনার তো অলরেডি তিনজন আছেই। ওখানে চতুর্থ ওপেনার নেওয়ার কারণ নেই।’

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এনামুল হক। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে চোটের কারণে মাঝপথে ফিরে আসা এই ওপেনার বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখছেন প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলে। ওদিকে লিগে এখনো ফর্ম দেখাতে না পারলেও গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে রান তোলার অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন ইমরুল কায়েস। ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে যাওয়ার অভিজ্ঞতারও গুরুত্ব কম নয়। কিন্তু স্থানীয় লিগে ভালো খেললেও বিশ্বকাপ দলে যাওয়ার সুযোগ যে একেবারেই কম, সেটাও বলতে বাকি রাখেননি নাজমুল, ‘বিজয় (এনামুল) পরপর তিন সেঞ্চুরি করেছে, অসাধারণ। ফরহাদ টি-টোয়েন্টিতে দারুণ খেলেছে। জহুরুল ভালো করছে, মোসাদ্দেক ভালো করছে। ইয়াসির রাব্বি ভালো করছে। নাজমুল হোসেন (শান্ত) ভালো করছে। নতুন কারও সম্ভাবনা খুবই কম। আমি বলছি না যে হবে না। কারণ আজকেও আমরা কথা বলছিলাম যে কিছু করা যায় কি না, কিছু করা যায় কি না। ঘরোয়া ক্রিকেটে যতই ভালো করুক না কেন, একটা নতুন ছেলের আন্তর্জাতিকে খেলার মধ্যে বিরাট পার্থক্য। উপমহাদেশে যদি হতো, তাও এক কথা। কাজেই যে যতই ভালো করুক হুট করে এসে একদম বিশ্বকাপ খেলে ফেলবে, এই সম্ভাবনা খুবই কম।’

বিসিবি সভাপতির সঙ্গে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কথা আমলে নিলেও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো করার আগ্রহ হারাবেন ক্রিকেটাররা। আজ মিরপুরে একটি পণ্যের দূতিয়ালির কার্যক্রমে বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনার কথা বলেছেন মাশরাফি। সেখানেই জানিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খুব ভালো করলেই যে বিশ্বকাপে সুযোগ সৃষ্টি হবে, এমনটা ভাবার সুযোগ নেই, ‘আসলে আমি ঢাকা লিগ নিয়ে তেমন একটা চিন্তিত না। কারণ এখানে অনেকবার আমি দেখেছি যে মানুষ দিনের পর দিন ১০০ হাঁকিয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিয়ে স্ট্রাগল করেছে। কারণ উইকেট বলেন, চেষ্টা বলেন, ঘরোয়া ক্রিকেট তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কাছাকাছি না।’

ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরমারের চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছেন এমন ক্রিকেটারই গুরুত্ব পাচ্ছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলে তাঁদের ২০১৯ বিশ্বকাপে ডাকা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নির্বাচকদের নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন মাশরাফি, ‘আমার কাছে মনে হয় না, এখানে অনেকে রান করে, উইকেট পেয়ে ওখানে ধুঁকেছে। এখানে অনেক উইকেট পেয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা কষ্ট করেছি এবং আমার মতো সিনিয়র ক্রিকেটার বা অন্য যারা আছে, তারাও করেছে। আবার এখানে খারাপ করেও দেখা গেছে ওখানে আমরা ভালো করেছি। তাই আকাশ আর পাতাল ব্যবধান দুটি জায়গার মধ্যে। মানসিকভাবে কতটা তৈরি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে যারা রান করছে বা ভালো করছে সেটি নির্বাচক প্যানেল ঠিক করবে যে কারা যাবে আর কারা যাবে না।’