তবু মিঠুনের আফসোস

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে টানা দুটি ফিফটি করার পর মিঠুন। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে টানা দুটি ফিফটি করার পর মিঠুন। ছবি: এএফপি
>২ ম্যাচে ৫৯.৫০ গড়ে করেছেন ১১৯ রান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ধবলধোলাই হওয়া ওয়ানডে সিরিজে মিঠুনকে কাঠগড়ায় তোলার সুযোগ নেই খুব একটা। তবে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি নন বাংলাদেশ দলের এ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। কেন?

দুঃস্বপ্নের নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের যে দু-একজন ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ছিল বলার মতো, তাঁদের একজন মোহাম্মদ মিঠুন। সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে ৬২ ও ৫৭ রানের দুটি ইনিংস খেলার পর শেষ ওয়ানডেতে খেলতে পারেননি চোটে পড়ায়। তার চেয়ে মিঠুনের আফসোস, যে দুটি ম্যাচ খেলেছেন, তাতে দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে পারেননি।

২ ম্যাচে ৫৯.৫০ গড়ে করেছেন ১১৯ রান, ধবলধোলাই হওয়া ওয়ানডে সিরিজে মিঠুনকে কাঠগড়ায় তোলার সুযোগ নেই খুব একটা। দলের শীর্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা যেখানে টানা ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে মিঠুন কিছু হলেও তো মান রক্ষা করেছেন। তবে মিঠুন নিজের পারফরম্যান্সে নিয়ে তৃপ্ত হতে পারছেন না। দুটি ইনিংসেই চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে দলকে উদ্ধার করেছেন, থিতু হয়েছেন। কিন্তু ইনিংসটা তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পারেননি। ১৫ ওয়ানডে খেলা মিঠুনের অবশ্য এমন অভিজ্ঞতা বেশ কবার হয়েছে। যে চারটা ফিফটি করেছেন, তিনটিতেই আউট হয়েছেন ৬০-এর ঘরে গিয়ে। ফিফটি করা প্রতিটি ম্যাচে লড়েছেন চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে। কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করে যখন ‘১০০’ সংখ্যাটা ডেকেছে, তখনই ফিরে এসেছেন ড্রেসিংরুমে।

নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে আর দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে টানা দুবার একই ভুল করায় আফসোস কাজ করছে মিঠুনের, ‘ওখানে ভালো খেলা আমার দায়িত্ব ছিল। সেটি পুরোপুরি পালন করতে পারিনি। দুটি ইনিংসই আরও বড় করা যেত। ওই ইনিংস আমার মধ্যে কোনো পরিবর্তন এনেছে কি না জানি না। প্রতিটি ম্যাচেই আসলে চেষ্টা করি।’

মিঠুন নিশ্চয়ই বুঝবেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পেলে হেলাই নষ্ট করতে নেই। একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের সব সময়ই সেঞ্চুরি করার সুযোগ আসে না। সুযোগটা আসে বেশির ভাগ সময় কঠিন পরিস্থিতিতে, দল যখন শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। মিঠুনের তাই উপলব্ধি হয়েছে, সেঞ্চুরির সুযোগ নষ্ট করা যাবে না, ‘কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কে থাকতে চায় না, সবাই চায় তিন অঙ্কে পৌঁছাতে। একটা ইনিংস ৫০ রানে শেষ হয়ে গেলে সেটি দলের জন্য যথেষ্ট নয়। তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পারলে দলের লাভ, আমারও লাভ। কিন্তু সব সময় হয় না। সামনে চেষ্টা করব।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না থাকায় দলের অনেক ক্রিকেটারের মতো মিঠুন এখন ব্যস্ত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। তবে তিনি মনে করেন না, প্রিমিয়ার লিগ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। মিঠুন মনে করেন, মে মাসের শুরুতে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজই হবে বিশ্বকাপের আসল প্রস্তুতি, ‘আপাতত ঢাকা লিগেই মনোযোগ। বিশ্বকাপ সামনে রেখে আলাদাভাবে প্রস্তুতি এখনো শুরু করিনি। তবে সামনে করব। প্রিমিয়ার লিগ খেলে যদি চিন্তা করি যে ইংল্যান্ডের প্রস্তুতি হয়ে যাচ্ছে, সেটা ভুল। ওখানকার কন্ডিশন পুরো আলাদা। প্রিমিয়ার লিগ খেলার পাশাপাশি ওই কন্ডিশন মাথায় রেখে প্রস্তুতিটা জরুরি। ইংল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ডের কন্ডিশন, আমরা যতটুকু জানি প্রায় একই। আয়ারল্যান্ডের ম্যাচগুলো খুব ভালো কাজে দেবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে। ওই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজও খেলবে। ওরা শক্তিশালী দল। নিজেদের কন্ডিশনে আয়ারল্যান্ডও কঠিন দল। সব মিলিয়ে সেখানে ভালো একটা প্রস্তুতি হবে আশা করি।’