সাকিবের 'সঙ্গী' হতে হলে যা করতে হবে

ফলো থ্রুতে বিস্মিত হওয়ার অভিব্যক্তি রাজ্জাকের, বিস্ময় তো উপহার দিচ্ছেন তিনি! ছবি: প্রথম আলো
ফলো থ্রুতে বিস্মিত হওয়ার অভিব্যক্তি রাজ্জাকের, বিস্ময় তো উপহার দিচ্ছেন তিনি! ছবি: প্রথম আলো
>নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন আবদুর রাজ্জাক। মাইলফলকের এ দিনে বললেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাঁহাতি স্পিনে সাকিবের সঙ্গী হতে হলে তরুণ স্পিনারদের কী করতে হবে

নতুন একটা মাইলফলক স্পর্শ করেছেন আবদুর রাজ্জাক। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০০ উইকেট পেয়েছেন আগেই। আজ দেশের প্রথম বোলার হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ৪০০ উইকেট পেলেন অভিজ্ঞ এ বাঁহাতি স্পিনার।

ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবাধায় প্রিমিয়ার ব্যাংক-উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ নেমে আসে ৩৮ ওভারে। ৮ ওভারের বেশি বোলিং করার সুযোগ ছিল না কোনো বোলারের। ২৪০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা উত্তরার বিপক্ষে রাজ্জাক এই ৮ ওভারেই কী দুর্দান্ত বোলিংটা না করলেন। ১ মেডেন দিয়ে ১৫ রানে ৪ উইকেট। বাকি ২ ওভার করতে পারলে ৫ উইকেট পাওয়া কঠিন ছিল না। তবে রাজ্জাকের এতে আফসোস নেই। প্রথম উইকেট পাওয়ার পরই যে ছুঁয়েছেন ৪০০ উইকেটের মাইলফলক।

১৫ বছরের ক্যারিয়ারে কম কীর্তি তো গড়া হয়নি। তবুও রাজ্জাক সব সময়ই রোমাঞ্চ অনুভব করেন নতুন রেকর্ড গড়ে, ‘মাইলফলক স্পর্শ করা একজন খেলোয়াড়ের কাছে সব সময়ই বিশাল ব্যাপার। আমিও ব্যতিক্রম নই। এখনো উপভোগ করি। ভালো করলে ভালো লাগে। খারাপ খেললে খারাপ লাগে। সবচেয়ে বড় কথা, ক্রিকেটটা এখনো উপভোগ করি।’ ৩৯৯ উইকেট নিয়ে আজ উত্তরার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন রাজ্জাক। অবশ্য তাঁর জানাই ছিল না ৪০০ উইকেটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। পরিসংখ্যান নিয়ে অনাগ্রহী রাজ্জাক দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই খুশি, ‘৫, ৪, ৩, ২, ১ উইকেট বা উইকেট না পেয়েও একটা ইকোনমিকাল বোলিং করে যাওয়া কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভালো বোলিং করা—এসবই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে রাজ্জাকের পারফরম্যান্স একটা আফসোস বাড়ায়। একটা সময় সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের স্পিন আক্রমণ সামলেছেন দুই বাঁহাতি রাজ্জাক ও সাকিব আল হাসান। একসঙ্গে খেলা ১১৩টি ওয়ানডেতে দুজনের মোট শিকারসংখ্যা ২৮৭। ২৮ টি-টোয়েন্টিতে ৭৭। রাজ্জাকের সামনে জাতীয় দলের দরজাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর বিকল্প হিসেবে গত তিন বছরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম, আরাফাত সানি, সাকলাইন সজীব, মোশাররফ হোসেন, সানজামুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম অপু। কিন্তু কারও ওপর লম্বা সময়ে আস্থা রাখতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। সাকিবের সঙ্গে আরেকজন বাঁহাতি স্পিনার কেন যেন থিতু হতে পারছেন না বাংলাদেশ দলে।

সাকিবের ‘সঙ্গী’ হতে তরুণ স্পিনারদের প্রতি রাজ্জাকের পরামর্শ হচ্ছে, ‘জাতীয় দলে খেলতে হলে অবদান রাখতে হবে। দলের প্রয়োজন অনুযায়ী হয়তো সেই অবদান ঠিকঠাক রাখতে পারছে না অনেকে। তরুণদের সেভাবে অনুশীলন করা উচিত। সাকিব যত দিন আছে, ঠিক আছে। তবে এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় শূন্যতা তৈরি হবে। একসময় বাঁহাতি স্পিনই ছিল আমাদের দলের বোলিংয়ে মূলশক্তি। ইচ্ছে করলে এটা ধরে রাখা সম্ভব। তারা ঠিকঠাক অনুশীলনটা যেন করে, যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে পারে।’

৩৬ বছর বয়সেও দারুণভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্জাক। কবে ক্যারিয়ারের যতি টানবেন, সেটি এখনো ঠিক করেননি। রাজ্জাকের কথা, ‘যত দিন উপভোগ করব তত দিন খেলব।’