'কচ্ছপ' ফিঞ্চ আর 'খরগোশ' ম্যাক্সওয়েলে চাপে পাকিস্তান

ম্যাক্সওয়েল শেষ দিকে ঝড় তোলায় আড়াই শ টপকে যায় অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি
ম্যাক্সওয়েল শেষ দিকে ঝড় তোলায় আড়াই শ টপকে যায় অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি
>আবুধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৬৬ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া

দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়াও ধীরে ধীরে ফিরছে ছন্দে। স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারদের ছাড়াই ভারতের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়, এরপর আরব আমিরাতের পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে জিতল প্রথম দুই ম্যাচ। আজ সিরিজ জয়ের লড়াইয়েও আগে ব্যাট করে ভালো সংগ্রহ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৬ উইকেটে ২৬৬ রান তুলেছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। এ স্কোরকে ‘ভালো’ বলার কারণ, আবুধাবিতে আবু জায়েদ স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেট। যেখানে গত পাঁচ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ২৪৪। এখানে সাধারণত আড়াই শ রানের ওপাশে গেলেই জয়ের পুঁজি পেয়ে যান বোলাররা।

বৃষ্টি হানা দেওয়ায় খেলা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে শুরু হয়েছে। ফিঞ্চও আড়মোড়া ভাঙার চেষ্টা করেছেন দেরি করে। আগের দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা অস্ট্রেলিয়ার এ অধিনায়ক প্রথম অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে এই সংস্করণে তুলে নিতে পারতেন টানা তিন সেঞ্চুরি। কিন্তু উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অনেক ধৈর্য দেখানোর পর এই ওপেনারের ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে বড় অসময়ে। ১২২ বলে ৮২ রান করতে ৬৮টি ডেলিভারি ‘ডট’ খেলেছিলেন ফিঞ্চ। এরপর খেললেন আরও ১৪ বল, যোগ করতে পারলেন ৮ রান।

৪২তম ওভারে ইয়াসির শাহকে তুলে মারতে গিয়ে তালুবন্দী হওয়া ফিঞ্চ বঞ্চিত করেন অস্ট্রেলিয়াকে টানা তিন সেঞ্চুরির তালিকায় নাম লেখানো দেশগুলোর পাশে বসা থেকে। শেষ পর্যন্ত ১৩৬ বলে ৯০ রান করে থামতে হয় অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে। তাঁর ফেরার ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১৮৯। ১ ছক্কা ও ৫ চারে সাজানো ফিঞ্চের এই ইনিংস যদি হয় ‘কচ্ছপগতি’র ম্যাক্সওয়েল তাহলে খরগোশের মতো দৌড়েছেন।

রান তুলতে ক্রিজে ফেরার মতো এমন কষ্ট করতে হয়েছে ফিঞ্চকে। ছবি: এএফপি
রান তুলতে ক্রিজে ফেরার মতো এমন কষ্ট করতে হয়েছে ফিঞ্চকে। ছবি: এএফপি

অ্যালেক্স ক্যারিকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৩৮ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন ম্যাক্সওয়েল। ৪৪তম ওভারে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ফেলার খেসারত দিয়েছে পাকিস্তান। ইমাম-উল-হক পয়েন্টে ক্যাচ ফেলার সময় ম্যাক্সওয়েলের সংগ্রহ ছিল ২৮। ‘জীবন’ পেয়ে আড়মোড়া ভাঙা ম্যাক্সওয়েল পরের দুই ওভারের মধ্যে তুলে নেন ফিফটি। ৪২ বলে ফিফটি পাওয়ার পর তাঁর ব্যাটে অস্ট্রেলিয়া ২৮০ ছুঁই ছুঁই স্কোরের স্বপ্নও দেখেছিল।

৪৬তম ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৩৩। ম্যাক্সওয়েলের সংগ্রহ তখন ৪৫ বলে ৫৭। তাঁর মতো মারকুটে ব্যাটসম্যান এখান থেকে দুর্দান্ত ‘ফিনিশ’ করতে পারতেন। কিন্তু ৪৮তম ওভারে ম্যাক্সওয়েল রানআউট হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া শেষ দুই ওভারে প্রত্যাশামতো রান তুলতে পারেনি। ১ ছক্কা আর ৮ চারে ৫৫ বলে ৭১ রান করে থামতে হয় ম্যাক্সওয়েলকে। শেষ পাঁচ ওভারে ৫০ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া, এর মধ্যে ম্যাক্সওয়েলের একার অবদানই ৩০। সেটিও শেষ দুই ওভারের আগে।

সিরিজে টিকে থাকার ম্যাচে পাকিস্তানি বোলাররা অবশ্য শুরুটা ভালোই এনে দিয়েছিলেন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা উসমান খাজাকে রানের খাতা খুলতেই দেননি পেসার উসমান শেনওয়ারি। তিনে ব্যাট করা শন মার্শও (১৪) থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। তৃতীয় উইকেটে পিটার হ্যান্ডসকম্ব-ফিঞ্চের ১০৫ বলে ৮৪ রানের জুটিতে ভিত গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। হ্যান্ডসকম্ব হারিস সোহেলের স্পিনে বোকা বনে ফিরেছেন ফিফটির সুবাস (৪৭) পেয়ে। এরপরই ফিঞ্চ-ম্যাক্সওয়েলের খেল শুরু।

আগের দুই ম্যাচে ২৮০-র চ্যালেঞ্জ দিয়েও গো হারা হেরেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ওই দুটি ম্যাচ হয়েছিল শারজায়। ফলে আবুধাবিতে ২৬৭ তুলতে পাকিস্তানকে বেশ বেগ পেতে হবে।