কলকাতার 'পাহাড়' টপকাতে পারল না পাঞ্জাব

কলকাতার জয়ে ব্যাটে-বলে দারুণ অবদান রাখেন রাসেল। আরেকটি উইকেট শিকারের পর। ছবি: এএফপি
কলকাতার জয়ে ব্যাটে-বলে দারুণ অবদান রাখেন রাসেল। আরেকটি উইকেট শিকারের পর। ছবি: এএফপি
>

ইডেনে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে ২৮ রানে হারিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স

কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের আগের ম্যাচে জস বাটলারকে ‘মানকাড’ আউট করে তুমুল সমালোচনার শিকার হন রবিচন্দ্র অশ্বিন। পাঞ্জাব অধিনায়ক কি তাহলে এই চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেননি? প্রশ্নটা উঠছে, কারণ ওই বিতর্কের পর আজ মাঠে নেমে বোলার অশ্বিনের সঙ্গে অধিনায়ক অশ্বিনও ভালো করতে পারেননি। আর রান-পাহাড় টপকে ম্যাচ জিতে অশ্বিনকে চাপ থেকে বের করে আনতে পারলেন না তাঁর সতীর্থরাও। কলকাতার ৪ উইকেটে ২১৮ রান তাড়া করতে নেমে পাঞ্জাব হেরেছে ২৮ রানে।

রান পাহাড়ে ওঠার এই চ্যালেঞ্জে নেমে পাঞ্জাবের হাতে ছিল দুই ‘ট্রাম্প কার্ড’—ক্রিস গেইল ও ডেভিড মিলার। ২০ রান করে গেইল ফিরেছেন পঞ্চম ওভারেই। লোকেশ রাহুল (১) আর সরফরাজ খানও (১৩) ফেরায় মিলারকে নামতে হয়েছে ইনিংসের অষ্টম ওভারেই। ওই ওভার শেষে ৭২ বলে ১৫৮ রান দরকার ছিল পাঞ্জাবের। এখান থেকে শেষ ৪২ বলে ১০৩ রান দরকার ছিল দলটির। মিলার ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল ততক্ষণে চতুর্থ উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন। অর্থাৎ হাতে ৭ উইকেট রেখে পাঞ্জাব তখনো ম্যাচে ছিল।

কিন্তু রাসেল ও কুলদ্বীপ যাদব পরের দুই ওভারে যথাক্রমে ৮ ও ৯ রান দিয়ে পাঞ্জাবকে ভীষণ চাপে ফেলে দেন। শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য ৮৬ রান দরকার ছিল দলটির। মিলার-আগারওয়াল তখন ৪৫ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়লেও আসল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন শেষ পাঁচ ওভারে। আর এই চ্যালেঞ্জের শুরুতেই আগারওয়ালকে হারায় পাঞ্জাব। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আগারওয়ালকে (৩৪ বলে ৫৮) তুলে নেন কলকাতার স্পিনার পীযূষ চাওলা। এর মধ্য দিয়ে ভেঙে যায় মিলার-আগারওয়ালের ৪৭ বলে ৭৪ রানের জুটি। পাঞ্জাবও ছিটকে পড়ে ম্যাচ থেকে।

মিলার তখনো উইকেটে থাকলেও বলের তুলনায় রানসংখ্যা অনেক বেশি হয়ে যাওয়ায় যথাসাধ্য চেষ্টা করেও পারেননি। শেষ ১৮ বলে ৬৭ রান দরকার ছিল পাঞ্জাবের। এখান থেকে শেষ ওভারে লক্ষ্য নেমে আসে ৬ বলে ৪২ রানে। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ১৯০ রানে থেমেছে পাঞ্জাবের ইনিংস। মন্দ্বীপ সিং ও মিলারের ৫৬* রানের জুটি শুধু পাঞ্জাবের হারের ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৪০ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মিলার। কলকাতার হয়ে ২১ রানে ২ উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল।

এর আগে রবিন উথাপ্পা (৫০ বলে ৬৭*) ও নীতিশ রানার (৬৩) ফিফটি এবং শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেলের ১৭ বলে ৪৮ রানে ভর করে দুইশোর্ধ্ব সংগ্রহ পায় কলকাতা। তবে রাসেল ৩ রানে ‘জীবন’ উপহার পেয়েছেন অশ্বিনের ‘নেতৃত্বগুণে’! ১৭তম ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত ইয়র্কারে রাসেলের উইকেট ছত্রখান করেছিলেন পাঞ্জাবের পেসার মোহাম্মদ শামি। কিন্তু আম্পায়ার ইশারা করলেন ‘নো বল’! তেড়েফুঁড়ে আসা অশ্বিনকে জানানো হয়, ত্রিশ গজ বৃত্তের ভেতর মাত্র তিন ফিল্ডার, যেখানে থাকতে হবে ন্যূনতম চারজন। রাসেল এই জীবন পাওয়ার সদ্ব্যবহার করেছেন ৫ ছক্কা ও ৩ চার মেরে। আর অশ্বিন নিজেও ছিলেন বেশ খরচে (৪-০-৪৭-০)।

অধিনায়কের মতো অতটা খরচে না হলেও আইপিএল অভিষেক তেমন একটা ভালো হয়নি পাঞ্জাব স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগের (টিএনপিএল) গত মৌসুমে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন এই লেগ স্পিনার। তাঁর দাবি, করতে পারেন ছয় রকম ডেলিভারি। পাঞ্জাব এই লোভেই হয়তো বরুণকে কিনেছিল তাঁর ভিত্তি মূল্যের চেয়ে ৪২গুণ বেশি দাম (৮.৪ কোটি রুপি) দিয়ে। কিন্তু আইপিএল অভিষেকে প্রথম ওভারেই পাঞ্জাবের এই স্পিনার বুঝে গেলেন আইপিএল জায়গাটা কতটা কঠিন। টিএনপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৮ রান দেওয়া বরুণ আজ তাঁর প্রথম ওভারেই দিয়েছেন ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৩ ওভারে ৩৫ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট।