১৫ বার ফোন করেও মন গলানো যায়নি এই ইংলিশের!

কাগজে-কলমে এখনো মোহামেডানের ইংলিশ কোচ ক্রিস্টোফার ইভান্স। ফাইল ছবি
কাগজে-কলমে এখনো মোহামেডানের ইংলিশ কোচ ক্রিস্টোফার ইভান্স। ফাইল ছবি
>ক্রিস্টোফার ইভান্সকে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের সাবেক বা বর্তমান কোচ, কোনোটিই বলা যায় না। কারণ প্রধান কোচ হিসেবে তালিকায় তাঁর নাম থাকলেও গত বছরের নভেম্বরের পর থেকেই খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই এই ইংলিশ কোচের

সমস্যা কতটা প্রকট হয়ে উঠলে সাবেক কোচকে ফিরিয়ে আনে ক্লাব? রিয়াল মাদ্রিদ তিন মাসেই সব শিরোপার আশা জলাঞ্জলি দেওয়ার পর জিনেদিন জিদানকেই আশ্রয় মেনেছে। কে জানে এ থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছে কিনা মোহামেডান। তাদের আকুতিটা তো আরও বেশি। না হলে ঢাকা থেকে ইংল্যান্ডে বারবার ফোন করে ফিরে আসার অনুরোধ জানায় কেন? কিন্তু মন গলেনি ক্রিস্টোফার ইভান্সের। মোহামেডানের এই ইংলিশ কোচ এমনটাই জানিয়েছেন প্রথম আলোকে।

ইভান্সকে মোহামেডানের সাবেক বা বর্তমান কোচ, কোনোটিই বলা যায় না। গত বছরের নভেম্বরের পর থেকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির মাঠের খেলায় কোনো ভূমিকা নেই ৪৪ বছর বয়সী এই ইংলিশের। কিন্তু প্রধান কোচের তালিকায় থাকে তাঁর নাম। বোঝাই যাচ্ছে কতটা বিদঘুটে পরিস্থিতিতে পড়েছে সাদা-কালোরা। ৯ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে অবস্থান তো আর এমনি এমনি নয় দলটির।

কয়েক বছর ধরেই কোচ-সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে মোহামেডান ফুটবল দল। কোনো কোচ এসেই টিকছেন না, দেশি কিংবা বিদেশি। এবার মৌসুম শুরুর আগে বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলির মাধ্যমে আনা হয় ইংলিশ কোচ ইভান্সকে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে মোহামেডানের দায়িত্ব গ্রহণের পর চিকিৎসার জন্য ইংলিশ কোচ দেশে গেছেন দুবার। ফেডারেশন কাপে মোহামেডানের বিদায়ের পর নভেম্বরের শেষের দিকে ছুটিতে গিয়ে আর ফেরেননি। তাঁর বদলে দুজন দেশি কোচ দিয়ে কাজও চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে ক্লাব। টানা ব্যর্থতায় স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়েছেন শেষ কোচ আলি আসগর নাসির।

ইভান্সকে আবার ফিরিয়ে আনার জন্য তাই উঠেপড়ে লেগেছে মোহামেডান। ক্লাবের ম্যানেজার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে ফোন দিয়ে ফিরে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দলের দায়িত্ব নিতে রাজি নন ইভান্স, ‘বাবু ও ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাকে ১৫ বারের মতো ফোন দিয়েছে ঢাকায় ফিরে ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। আমি তাদের জানিয়েছি ফিরব না। কারণ ক্লাব সে জায়গাটা আগেই নষ্ট করে ফেলেছে।’ খাতা-কলমের চুক্তিও শেষ হয়ে গিয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।

ক্লাবের কর্মকর্তাদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন ইংলিশ এই কোচ। তাঁর অভিযোগ, ‘ক্লাব কর্তারা নির্বোধের মতো দল চালাচ্ছে। অবিশ্বাস্যভাবে তাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই।’ এর আগে বকেয়া বেতনের অভিযোগ তুলে মোহামেডানকে ফিফার কাঠগড়ায় নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন ইভান্স।

মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার কণ্ঠে ভিন্ন সুর। ইভান্স নিজ থেকে ফেরার জন্য আকুতি জানিয়েছেন বলে জানান লোকমান, ‘তাঁকে ফিরিয়ে আনার কোনো ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু সে আমাদের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করে ফিরতে চেয়েছে। ফলে আমরা ফেরার জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছি তাঁকে।’

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের সমাধান জানতে একটু অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মোহামেডানের পরবর্তী ম্যাচ ৭ এপ্রিল বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে। সে ম্যাচে প্রধান কোচ হিসেবে ডাগআউটে ইভান্সকে দেখা গেলেই তো বোঝা যাবে কার কথা সঠিক।