চার-পাঁচ বছর আগের সৌম্যকে চাই

গত ম্যাচে মাশরাফি নিয়েছেন ৬ উইকেট। ছবি: প্রথম আলো
গত ম্যাচে মাশরাফি নিয়েছেন ৬ উইকেট। ছবি: প্রথম আলো

৩৩, ৩৬, ৪৩, ২৯। ব্যাট হাসছে, কিন্তু হাসিটা চওড়া হচ্ছে না। সৌম্য সরকারের নিজেরই অতৃপ্তি আছে এ নিয়ে। কদিন আগেই বলেছিলেন, লম্বা একটা ইনিংস খেলা দরকার। থিতু হয়েও কেন আউট হচ্ছেন, এটা বেশিই পোড়াচ্ছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন আবাহনীর হয়ে। সেই দলের কোচ খালেদ মাহমুদ আজ বললেন, সৌম্যের কাছ থেকে একটা লম্বা ইনিংস তিনিও চাইছেন। সেই সৌম্যকে ফিরে পেতে একটা পথও বাতলে দিলেন মাহমুদ। বললেন, সৌম্যকে ফিরে যেতে হবে শুরুর দিনগুলোতে।

মাহমুদ বলছেন, ‘সৌম্য খুব ভালো শুরু করছে প্রতিটা ম্যাচেই। তবে ইনিংসটা লম্বা হচ্ছে না। আমি কথা বলেছি ওর সঙ্গে। ও জানে ব্যাপারটা। ও নিজেও খুব চেষ্টা করছে। অনুশীলনে নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে। আশা করি একটা ভালো লম্বা ইনিংস খেললেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ওর হাত ও চোখের সমন্বয় অসাধারণ। ওকে ওইটাই বলেছি। আমি যখন চার-পাঁচ বছর আগে ওকে প্রাইম ব্যাংক দলে পাই, ও যে রকম খেলোয়াড় ছিল, ও রকম ব্যাটিং করতে হবে।’

সে সময় সৌম্য আনকোরা খেলোয়াড় ছিলেন। জাতীয় দলের চৌহদ্দিতে মাত্রই পা রেখেছেন। সেই সৌম্য ছিলেন নির্ভার। চাপমুক্ত। মাত্র এক ওয়ানডে খেলেই ২০১৫ বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে আলো ছড়ালেন। রাতারাতি যেন তারকাখ্যাতি ধরা দিল মুঠোয়। সেটি হিতে বিপরীতও হলো। প্রত্যাশার একটু এদিক-ওদিক হলেই সৌম্যকে নিয়ে কাটা-ছেঁড়া হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমের উৎপাত তো আছেই।

মাহমুদ মনে করেন, এ কারণেই আগের সেই নির্ভার সৌম্যকে এখন পাওয়া যায় না, ‘এখন দায়িত্ব বেড়ে গেছে, জাতীয় দলে খেলছে। সুতরাং এখন তারও দায়িত্ব বেশি। আমি মনে করি ও ভালো শুরু করছে। কিন্তু ভাগ্যকে পাশে পাচ্ছে না। বড় ইনিংস খেলতে কিন্তু একটু ভাগ্যও লাগে।’

দল হিসেবেও আবাহনী যেন সৌম্যের ইনিংসগুলোর মতো। ভালোই, কিন্তু মন ভরাচ্ছে না। মাহমুদ আবাহনীর কাছ থেকে আরও একটু বেশি চাইছেন, ‘আবাহনী যে রকম দল, সে হিসেবে মনমতো পারফরম্যান্স পায়নি এখনো। আবাহনীর জেতাই উচিত। কোনো দলকে ছোট করে দেখছি না, সবাই শক্তিশালী। তবে আবাহনীর নামগুলো যদি দেখেন, প্রায় জাতীয় দলই বলা চলে। আমরা কিন্তু উত্তরার বিপক্ষে ম্যাচটি ছাড়া আর কোনো ম্যাচে ওইভাবে অনায়াসে জিততে পারিনি। জিতেছি ম্যাচ, তবে লড়াই করে জিততে হয়েছে।’

৭ ম্যাচে ৬ জয়, ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আবাহনী। তবে সমান পয়েন্ট প্রাইম ব্যাংক, রূপগঞ্জেরও। প্রাইম দোলেশ্বরের পয়েন্ট ১০। আবাহনী স্বস্তিতে থাকবে কী করে! বেশ কয়েকটি ম্যাচেই আবাহনীকে জিততে হয়েছে ঘাম ঝরিয়ে। গত ম্যাচেই তো ২৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়েও শেষে জিততে হয়েছে মাশরাফির জাদুতে। মাহমুদ সেটাই বললেন, ‘এটা ভালো যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি। গত ম্যাচে মাশরাফি অসাধারণ খেলেছে, প্রায় হারা ম্যাচ জিতেছি আমরা, মাশরাফির কল্যাণে আমি বলব। আসলে আবাহনীর যেভাবে জেতা উচিত, ওইভাবে জিততে পারিনি। টোটাল টিম পারফরম্যান্স যাকে বলে, সেটা হয়নি এখনো। আশা করি ছেলেরা জ্বলে উঠবে।’