বাফুফের 'মার্চ'শেষ হচ্ছে কবে ?

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ডেভেলপমেন্ট কমিটির সভা। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ডেভেলপমেন্ট কমিটির সভা। ফাইল ছবি
>একাডেমির জন্য ফিফা বাংলাদেশকে ৭ লাখ ডলার দিয়েছিল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সিলেট বিকেএসপিতে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর পাঁচ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটা একাডেমি উদ্বোধন হয়েছিল, সেটা চলেনি এক বছরও। প্রায় চার বছর পরে এসে আবার একাডেমি নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

স্বাধীনতার মাস শেষ হয়ে শুরু হয়েছে এপ্রিল। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ‘মার্চ’ মাস শেষ হবে কবে? ক্যালেন্ডারের পাতায় মাসটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রশ্নটি উঠত না, যদি কথা রাখতে পারতেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

‘মার্চের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হবে বাফুফে একাডেমি’, ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সভা শেষে ১৩ জানুয়ারি বাফুফে ভবনে বসে কথাটি বলেছিলেন বাফুফে সভাপতি। কিছুদিন পরেই সে জায়গা থেকে সরে এসে বলেছিলেন মার্চের মধ্যেই শুরু হবে একাডেমিক কার্যক্রম। কিন্তু হলো আর কোথায়!

বাংলাদেশের একটি ফুটবল একাডেমি নেই, বিষয়টি হাস্যকর বটে। কিন্তু ফুটবল উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক এই বিষয়টি নিয়ে ফুটবল ফেডারেশন যে একদমই ভাবে না, তা নয়। মাঝে মধ্যেই কুম্ভকর্ণের মতো ঘুম থেকে জেগে ওঠে নিজেদের একাডেমি বানানোর স্বপ্নের কথা জানায় বাফুফে। এই আশার পালে হাওয়া দিয়েছে ফর্টিস গ্রুপ। বাড্ডার বেরাইদে ফর্টিস গ্রুপের বিশাল একখণ্ড সবুজ মাঠ আছে। প্রায় ৪০ বিঘা জায়গা, দুটি বড় মাঠ হয়। আধুনিক পানিনিষ্কাশন, ফ্লাডলাইটসহ সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধাই পাওয়া যাবে। ফলে চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন বাফুফে সভাপতি।

এ ছাড়া একাডেমি নিয়ে আবুধাবিতে জর্ডান ফুটবল ফেডারেশনে কর্মকর্তা প্রিন্স আলীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাফুফে সভাপতি। একাডেমির জন্য জর্ডানের সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেনও কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু আশার পালে হাওয়া লাগিয়ে আর খবর নেই।

বর্তমানে মালয়েশিয়ায় আছেন, তাই ‘মার্চে কেন একাডেমি শুরু হলো না’—প্রশ্নটা করা গেল না বাফুফে সভাপতিকে। তবে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ শোনালেন নতুন আশার কথা, ‘এপ্রিলের ৫ তারিখেই আশা করি একাডেমি শুরু করতে পারব। ইতিমধ্যে খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’

মার্চে শুরু হওয়ার কথা বলে এপ্রিলে হতেই পারে। কিন্তু বাফুফের কথায় ভরসা রাখার মতো মানুষ কী আছে! এক একাডেমি নিয়ে নাটক তো আর কম হয়নি। একাডেমির জন্য বাংলাদেশকে ৭ লাখ ডলার দিয়েছিল ফিফা। সিলেট বিকেএসপিতে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর পাঁচ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে একাডেমি উদ্বোধন করলেও সেটা চলেনি এক বছরও। এর পর তো আর একাডেমি নিয়ে কথা বলতেই নারাজ ছিলেন বাফুফে সভাপতি। ফর্টিস গ্রুপের সহায়তায় আবার উন্নয়নের অত্যাবশ্যক প্রসঙ্গটি এসেছে, এই বা কম কী!

টানা চারবার সাফ ফুটবলের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবার সাফে ব্যর্থ হওয়ার পরেই ফুটবল বোদ্ধাদের মুখে একাডেমি না থাকার আক্ষেপ শোনা যায়। কারণ প্রতিবেশী দেশগুলো একাডেমি নির্মাণ করে দুর্দান্ত সব ফুটবল প্রতিভা তুলে এনে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। মালদ্বীপকে ৮ গোল দেওয়ার রেকর্ডের কথা সবার মনে আছে। সময়ের পালা বদলে মালদ্বীপের কাছে এখন ৫ গোল হজম করে বারবার সে স্মৃতি ফিরিয়ে আনে দল। মালদ্বীপের মতো ছোট দেশেও একাডেমি আছে ছয়টি, নেপালে আছে তিনটি, ভুটানে আছে দুটি, আর ২৮টি এলিট একাডেমি আছে ভারতে। এমনি এমনি তো আর বিশ্ব ফুটবলে ভারতের অবস্থান ৯৬তে আসেনি। এ উন্নতিতে অবদান রেখেছে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের একাডেমিগুলো।