বিশ্বকাপ প্রাকবাছাইয়ে যে দলকে চাইছে না বাংলাদেশ

জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
>এশিয়ান র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪২ নম্বর অবস্থানে থাকায় বাংলাদেশকে খেলতে হবে প্রাক বাছাইপর্ব। সেখানে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে পারে মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ম্যাকাও, লাওস, ভুটান বা মঙ্গোলিয়ার যে কোন একটি দেশ।

৩৪, নিছক একটি সংখ্যা। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে সংখ্যাটা হয়ে উঠল হতাশার। কারণ এশিয়ার ৪৬ দেশের মধ্যে প্রথম ৩৪-এ থাকলে সরাসরি ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব খেলার সুযোগ পেত বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান এর নিচে (৪২) হওয়ায় বাছাইপর্বের আগে জামাল ভূঁইয়াদের খেলতে হবে প্রাকবাছাই। আর সেখানে হোঁচট খেলে দেশের ফুটবলের মহা সর্বনাশ।

প্রাক বাছাইপর্ব টপকে বাছাইপর্ব খেলতে পারলে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। সঙ্গে থাকা যাবে কাতার বিশ্বকাপ খেলার নামকাওয়াস্তে দৌড়েও। কিন্তু ব্যর্থ হলে দিতে হতে পারে চরম মূল্য। কারণ প্রাকবাছাইয়ে বাদ পড়াদের জন্য এখনো পরবর্তী চার বছরের কোনো সূচি ঘোষণা করেনি এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। যদিও গতবার বাদ পড়ে যাওয়া দলগুলো নিয়ে এএফসি সলিডারিটি কাপের আয়োজন করেছিল এশিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।

রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে এমন দুশ্চিন্তা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার সেরা ত্রিশে থাকায় সরাসরি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলেছিল দল। কিন্তু এবার খেলতে হচ্ছে প্রাক বাছাই। ১৭ এপ্রিল ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ৪ এপ্রিল ঘোষিত হবে ফিফার নতুন র‌্যাঙ্কিং। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে না। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৯২ থেকে ১৮৮তে আসার সম্ভাবনা থাকলেও এশিয়ান র‌্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হতে পারে ৪১। ফলে এড়ানো যাচ্ছে না প্রাক বাছাই। আর সেখানে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে পারে মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ম্যাকাও, লাওস, ভুটান বা মঙ্গোলিয়ার যে কোন একটি।

সুযোগ থাকলে এদের মধ্যে কোন দলকে বেছে নিতেন? মজা করেই প্রশ্নটি করা হয়েছিল বাংলাদেশ কোচ জেমি ডেকে। লন্ডন থেকে পেশাদারি জবাব, ‘প্রতিটি দলই শক্তিশালী। তাই প্রতিপক্ষের জন্য ড্রয়ের দিকেই তাকিয়ে আছি।’ এবার একটু ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো ড্রতে প্রতিপক্ষ হিসেবে কোন দলটাকে না পেলে খুশি হতেন? জেমির মুখ থেকেই শুনুন, ‘অবশ্যই মালয়েশিয়া। ছয়টি দলের মধ্যে এই দলটাই বেশি শক্তিশালী।’

প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভালো খেলছে বাংলাদেশ। শেষ আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়ার মাটি থেকে দল ফিরেছে ১-০ গোলের জয় নিয়ে। এ ছাড়া এশিয়ান গেমস ও অনূর্ধ্ব ২৩ দলের পারফরম্যান্স আশাজাগানিয়া। সেই তারুণ্যেই সাঁকো পেরোনোর আশা করলেও কোচ মেনে নিচ্ছেন বাস্তবতাকেও, ‘অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপের বাছাইয়ে ঢোকা সহজ হবে না। প্রাক বাছাইয়ের লড়াইটা হবে কঠিন।’

অথচ গত কিছুদিনে কিছু প্রীতি ম্যাচ খেলে ফিফা র‌্যাঙ্কিংটা একটু ভালো করতে পারলে হয়তো এশিয়ায় প্রথম ৩৪ দলের মধ্যে থাকতে পারত বাংলাদেশ। সেটির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা বা মনোযোগ দৃশ্যমান ছিল না। ফিফার সূচিতে কবে কার সঙ্গে ম্যাচ খেলা হবে, সেটার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা পাকিস্তানও আগামী চার মাসে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সূচি ঠিক করে রেখেছে আগেই। সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনাটা যখন করতে পারেনি বাংলাদেশ, ভয়ের চাপ তো নিতেই হবে।