দর্শকদের আচরণে কেঁদেই দিলেন জুভেন্টাসের তরুণ ফুটবলার

>
এই উদ্‌যাপন করেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন কিন। ছবি: এএফপি
এই উদ্‌যাপন করেই বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন কিন। ছবি: এএফপি

ফুটবল মাঠে আবারও বর্ণবাদী আচরণ। ক্যালিয়ারি সমর্থকদের কাছে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন জুভেন্টাসের ১৯ বছর বয়সী ময়েস কিন

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো চোটের কারণে দলে নেই। তাঁকে ছাড়া লিগের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেয়েছে জুভেন্টাস। কিন্তু কাল আর একই ভুল করেনি ‘ওল্ড লেডি’রা। ক্যালিয়ারির বিপক্ষে হেসেখেলেই জিতেছে জুভেন্টাস। কিন্তু জুভেন্টাসের সে জয় ছাপিয়ে আলোচনায় ক্যালিয়ারি সমর্থকদের আচরণ। ক্যালিয়ারির মাঠে ২-০ গোলের জয় পেলেও বর্ণবাদী আচরণের শিকার হতে হয়েছে জুভেন্টাসের ময়েস কিনকে।

রোনালদো না থাকায় শুরুর একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন ময়েস কিন। ২০ মিনিটের মাথায় ফাউল করে ম্যাচের হলুদ কার্ড হজম করেন ১৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। বর্ণবাদী আচরণের শুরু সেখান থেকেই। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়েরা কিছুক্ষণ বাগ্‌বিতণ্ডা করলে খেপে ওঠে সমর্থকেরা। এরপর থেকেই কিনকে লক্ষ্য করে শুরু হয় বর্ণবাদী আচরণ। প্রথমে বিচ্ছিন্নভাবে হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে পুরো স্টেডিয়ামে। ক্যালিয়ারি সমর্থকদের দুয়োধ্বনিতে মাঠে টেকা দায় হয়ে গিয়েছিল জুভেন্টাসের। এর মধ্যেই ২২ মিনিটে বার্নাদেস্কির কর্নারে মাথা ছুঁয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান বনুচ্চি।

৮৫ মিনিটে ছাড়িয়ে যায় সবকিছু। রদ্রিগো বেন্তাকুরের ক্রস থেকে বল জালে জড়ান কিন। জালের পাশে গিয়ে সমর্থকদের সামনে উদ্‌যাপন শুরু করেন। এতেই যেন তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে সমর্থকেরা। তাঁর দিকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারা হয় কলা, প্লাস্টিকের বোতল, পানি ইত্যাদি। যদিও দ্রুত এগিয়ে যান ক্যালিয়ারি খেলোয়াড়েরা। গোলরক্ষক অ্যালিসিও ক্র্যাগনো সরিয়ে দেন কিনকে এবং নিজের সমর্থকদের শান্ত হতে বলেন। কিন্তু তাতেও বর্ণবাদী আচরণ থামেনি। মাতুউদি থামাতে এলে তাঁকেও বর্ণবাদী কথা শুনতে হয়। রেফারির হস্তক্ষেপে প্রায় ৩ মিনিট বন্ধ ছিল ম্যাচটি। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলেই শেষ হয় ম্যাচ।

ম্যাচ শেষে ছলছল জল ছিল কিনের চোখে। ফুটবল খেলতে গিয়ে সম্ভবত প্রথমবার এত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলো ১৯ বছর বয়সী ফুটবলারকে। যদিও তাঁর পাশে ছিলেন দুই দলের সবাই। খেলোয়াড়, রেফারি—সবাই তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। কিন্তু যা হয়েছে, সেটি কি সহজে ভোলার? ইতালিতে অবশ্য এমন বর্ণবাদী আচরণ প্রথম নয়; বরং ফুটবলে বর্ণবাদী আচরণে ইতালিয়ানদের সব সময়ই এক ধাপ এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এর আগেও নাইজেল ডি জং, মারিও বালোতেল্লির মতো খেলোয়াড়েরাও শিকার হয়েছেন ঘৃণ্য আচরণের।