ভারতের দায়িত্ব নিচ্ছেন জিদানদের বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলানো কোচ?

জিদানদের কোচ ছিলেন ডমেনেখ। ছবি : টুইটার
জিদানদের কোচ ছিলেন ডমেনেখ। ছবি : টুইটার
ভারতের জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের নতুন কোচ হওয়ার জন্য প্রায় ২৫০টির মতো দরখাস্ত জমা পড়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ ফাইনালে নিয়ে যাওয়া কোচ রেমন্ড ডমেনেখ


রেমন্ড ডমেনেখের কথা মনে পড়ে? ছিপছিপে গড়নের সাদা চুলো সেই বুড়োর কথা? যাঁর কোচিংয়ে আরেকটু হলে ইতালিকে হারিয়ে ২০০৬ বিশ্বকাপ জিতে নিচ্ছিলেন জিনেদিন জিদানরা! সেই রেমন্ড ডমেনেখ এখন ভারতের জাতীয় দলের কোচ হতে চান!

এএফসি এশিয়ান কাপের নকআউট পর্বে ভারতীয় দলকে তুলতে পারেননি ইংলিশ কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। ব্যর্থতা কাঁধে নিয়ে কোচের পদ থেকে গত ডিসেম্বরে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৭৩ তম অবস্থানে থাকা ভারত এই কনস্ট্যান্টাইনের অধীনেই চলে এসেছে বিশ্বের সেরা ১০০ জাতীয় দলের মধ্যে। ভারতের র‍্যাঙ্কিং এখন ৯৮। কনস্ট্যান্টাইন যাওয়ার পর ভারতের ফুটবলের ক্রমোন্নতির ধারা বজায় থাকবে কার অধীনে? আর তাই এবার বেশ ‘হাই-প্রোফাইল’ কোচ খুঁজছে ভারত। গতকাল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা জানিয়েছে, বেশ কিছু ‘হাই-প্রোফাইল’ কোচের দরখাস্ত ইতিমধ্যে পেয়ে গেছে তাঁরা। সে তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ডমেনেখের নামও।

ফেডারেশন জানিয়েছে, সুনীল ছেত্রীদের কোচ হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ২৫০টির মতো দরখাস্ত জমা পড়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন অনেক চেনাজানা মুখ। ডমেনেখ ছাড়াও ভারতের কোচ হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন সাবেক ইংল্যান্ড কোচ স্যাম অ্যালার্ডাইস, জিওভান্নি ডি বিয়াসি, হাকান এরিকসন প্রমুখ।

২০০৬ সালে জিদান-রিবেরি-ম্যাকেলেলে-অঁরিদের নিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিলেন ডমেনেখ। ফাইনালে জিদান ওই ঢুঁস মারার পাগলামিটা না করলে হয়তো সেবার ফ্রান্সই বিশ্বকাপ জিতে নিত। ডমেনেখের সেই কৃতিত্বে মুগ্ধ হয়েই ফ্রান্স তাকেই ২০১০ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত রেখে দিয়েছিল। কিন্তু খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের জের ধরে চাকরি হারান ডমেনেখ, ফ্রান্সও বিদায় নেয় বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে।

ওদিকে স্যাম অ্যালার্ডাইস ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে বেশি দিন না থাকলেও প্রিমিয়ার লিগে বেশ পরিচিত মুখ। ম্যানেজার ছিলেন ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স, নিউক্যাসল ইউনাইটেড, বোল্টন ওয়ান্ডারার্স, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড, এভারটন, ক্রিস্টাল প্যালেস, স্যান্ডারল্যান্ড ও ব্ল্যাকপুলের মতো ক্লাবের। ইতালির কোচ জিওভান্নি ডি বিয়াসি ইতালিয়ান ও স্প্যানিশ লিগের বেশ পরিচিত মুখ। ইন্টার মিলানের হয়ে খেলা সাবেক এই মিডফিল্ডার কোচিং করিয়েছেন তুরিনো, উদিনেসে, লেভান্তে, আলাভেসের মতো ক্লাবগুলোকে। সাত বছর ছিলেন আলবেনিয়ার জাতীয় দলের দায়িত্বে।

ভারতীয় ফেডারেশনের তরফ থেকে জানা গেছে, ‘২৫০ জন কোচের মধ্যে যাদের উয়েফার লাইসেন্স রয়েছে তাঁরা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন। সে কোচ অতীতে কোনো জাতীয় দলের হয়ে কী সাফল্য পেয়েছেন সেটা খতিয়ে দেখা হবে। বিশেষ করে যে সব কোচ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৭৫টি দেশের দায়িত্ব নিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছেন, তাঁরা এগিয়ে থাকবেন কনস্ট্যান্টাইনের উত্তরসূরি হওয়ার জন্য।’

সব দিক দিয়েই এগিয়ে আছেন জিদানদের সাবেক কোচ ডমেনেখ। ভারতের ডাগআউটে তাঁর দেখা পাওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।