সবচেয়ে বেশি দিন নিষিদ্ধ ছিলেন কোন ফুটবলার?

সবচেয়ে বড় শাস্তি জুটেছিল কার? ফাইল ছবি
সবচেয়ে বড় শাস্তি জুটেছিল কার? ফাইল ছবি

বার্সেলোনার বিপক্ষে লিগ–নির্ধারণী ম্যাচে লাল কার্ড দেখে বের হয়ে যেতে হয়েছিল ডিয়েগো কস্তাকে। রেফারিকে কটু কথা বলেও গায়ে হাত রেখে আট ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। এর ফলে মৌসুমে আর মাঠে নামা হচ্ছে না তাঁর। আগামী মৌসুম শুরু হওয়ার আগে মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছেন না অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ স্ট্রাইকার। এ কারণে বলতে গেলে চার মাস লম্বা নিষেধাজ্ঞাই জুটেছে তাঁর। কিন্তু ফুটবলে এর চেয়েও দীর্ঘ সময় নিষিদ্ধ থাকার রেকর্ড আছে!

ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ফাইল ছবি
ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ফাইল ছবি


ডিয়েগো ম্যারাডোনা, দুই মাস
আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়ার পর ম্যারাডোনার সেই পাগলাটে স্লাইডটাই মনে আছে সবার। ২০০৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সে ম্যাচের কাণ্ডের কথা অনেকেই তাই হয়তো ভুলেও গেছেন। ম্যাচের পরে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ অশালীন ভাষায় অপমান করায় ফিফা দুই মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করে তাঁকে।

লুইজাও। ফাইল ছবি
লুইজাও। ফাইল ছবি


লুইজাও, দুই মাস
এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার বেনফিকার হয়ে ২০১২ সালে এক প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেমে রেফারিকে আক্রমণ করেন। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন এ ঘটনায় দুই মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল তাঁকে। ফিফা এ শাস্তি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া নিশ্চিত করেছিল।

লুইস সুয়ারেজ। ফাইল ছবি
লুইস সুয়ারেজ। ফাইল ছবি


লুইস সুয়ারেজ, চার মাস
২০১৪ বিশ্বকাপের সবচেয়ে বিখ্যাত দৃশ্যগুলোর একটি। ইতালির বিপক্ষে ম্যাচে জর্জিও কিয়েলিনির ঘাড়ে কামড় বসিয়ে উরুগুয়ের ৯ ম্যাচে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সুয়ারেজ। সে সঙ্গে যেকোনো ধরনের ফুটবল থেকেই চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন।

জোয়াও পিন্টো। ফাইল ছবি
জোয়াও পিন্টো। ফাইল ছবি


জোয়াও পিন্টো, ছয় (চার) মাস
২০০২ বিশ্বকাপে পর্তুগাল ও দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যাচে রেফারিকে আক্রমণ করেন জোয়াও পিন্টো। ফিফার শৃঙ্খলা কমিটি ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে পর্তুগিজ ফুটবলারকে। আপিলের পর সেটা চার মাসে কমে আসে।

ডেভিড নাভারো। ফাইল ছবি
ডেভিড নাভারো। ফাইল ছবি


ডেভিড নাভারো, সাত (ছয়) মাস
২০০৭ সালে ইন্টার মিলান ও ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচ রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল। স্প্যানিশ নাভারো বেঞ্চ থেকে ছুটে এসে ইন্টারের নিকোলাস বারদিসোর নাক ভেঙে দেন। এতে খেপে ইন্টারের দলের খেলোয়াড়েরা (জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ছিলেন এঁদের মধ্যে!) তাঁকে তাড়া করেন মাঠজুড়ে। ড্রেসিংরুমে গিয়েই আশ্রয় মেলে নাভারোর। এ ঘটনায় উয়েফা ক্লাব ফুটবল থেকে সাত মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে। ফিফাও সব ধরনের প্রীতি ও আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করে। শাস্তিটা পরে ছয় মাসে নেমে এসেছিল।

এরিক ক্যান্টোনা। ফাইল ছবি
এরিক ক্যান্টোনা। ফাইল ছবি


এরিক ক্যান্টোনা, আট মাস
১৯৯৫ সালে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ছিলেন ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। এমন সময় প্যালেস সমর্থক ম্যাথু সিমন্স কটু কথা শোনা তাঁকে। রেগেমেগে কুংফুর লাথি আর বেশ কটি ঘুষি মেরে বসেন ক্যান্টোনা। পুলিশ, জেল, মামলা—বাদ থাকেনি কিছু। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বাকি মৌসুমের (২১ ম্যাচ) জন্য নিষিদ্ধ করে ক্যান্টোনাকে। ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে আট মাস করে।

হেক্টর রোবল। ফাইল ছবি
হেক্টর রোবল। ফাইল ছবি


হেক্টর রোবল, এক বছর
১৯৯৩ সালে প্যাসেলিস্তিনো ও হন্ডুরাসের মধ্যে প্রীতি ম্যাচের ঘটনা এটি। প্যাসেলিস্তিনো ক্লাবের চিলিয়ান ডিফেন্ডার হেক্টর রোবল রেফারিকে আক্রমণ করে বসেন। এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন রোবল।

রবার্তো রোহাস। ফাইল ছবি
রবার্তো রোহাস। ফাইল ছবি


রবার্তো রোহাস, আজীবন
শীর্ষস্থানেও এক চিলিয়ান। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কময় ঘটনার জন্ম সম্ভবত এই গোলরক্ষকই দিয়েছেন। ১৯৮৯ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে চিলির গোলবার সামলানোর দায়িত্ব ছিল রোহাসের। ম্যাচের এক মুহূর্তে মাঠে রোহাসের দিকে ফ্লেয়ার ছুড়ে মারে ব্রাজিলের সমর্থকেরা। ফ্লেয়ার ছোড়ার কিছুক্ষণ পর রোহাসকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে ফ্লেয়ার রোহাসের গায়ে লাগেনি। রোহাস পরে স্বীকার করেছিলেন গ্লাভসে লুকানো এক ব্লেড দিয়ে নিজেই মুখে ক্ষত সৃষ্টি করেছিলেন। ফিফা রোহাসকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে (২০০১ সালে সেটা কমিয়ে আনা হয়েছে)। বড় শাস্তি পেতে হয়েছিল তাঁর দেশকে। ১৯৯০ বিশ্বকাপ থেকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল চিলিকে।