আজ সুপার সানডে

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ মুখোমখি চেলসি-লিভারপুল। ছবি: এএফপি
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ মুখোমখি চেলসি-লিভারপুল। ছবি: এএফপি
>
  • চেলসির বিপক্ষে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে জয়হীন লিভারপুল (২ হার, ৩ ড্র)।
  • ২০১২ সালের মের পর সব প্রতিযোগিতায় অ্যানফিল্ডে ৮ ম্যাচে অপরাজিত চেলসি (৩ জয়, ৫ ড্র)।
  • ঘরের মাঠে লিগে সর্বশেষ ৩৭ ম্যাচে অপরাজিত লিভারপুল (২৭ জয়, ১০ ড্র)।
  • লিগে শীর্ষ ৬ দলের মাঠে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে হেরেছে চেলসি, খেয়েছে ১৪ গোল।
  • বাংলাদেশ সময় আজ রাত সাড়ে ৯টায় ম্যাচ শুরু, সরাসরি দেখাবে স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ২

এপ্রিল মাস, রোববার, অ্যানফিল্ড, চেলসি—লিভারপুল সমর্থকদের বুকের মধ্যে ধক করে ওঠার জন্য এটুকু মনে করিয়ে দেওয়াই যথেষ্ট। এর সঙ্গে যদি যোগ করা যায় একই রোববারে ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠে ম্যানচেস্টার সিটি, তাহলে তো কথাই নেই। ধুকপুকানি বেড়ে হবে দ্বিগুণ। দিনটি মিলে যাচ্ছে, মিলে যাচ্ছে দুটি সূচিও। কী জানি, এই রোববারও আবার ভয়ংকর কিছু না ঘটে যায়!

কী হয়েছিল পাঁচ বছর আগের এপ্রিলের সেই রোববারে? ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল চেলসিকে অ্যানফিল্ডে আতিথ্য দিয়েছিল লিভারপুল। সেটি ছিল ২০১৩–১৪ মৌসুমে ‘অলরেড’দের ৩৬তম লিগ ম্যাচ। শিরোপা ছিল ব্রেন্ডন রজার্সের দলের হাতছোঁয়া দূরত্বে। ৩৫ ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা লিভারপুল বিস্ময়করভাবে হেরে গিয়েছিল চেলসির কাছে। সেদিনই ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠ থেকে জিতে ফেরে লিভারপুলের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলা ম্যানচেস্টার সিটি। পরে জিতে নিয়েছিল শিরোপাও।

দেখতে দেখতে পাঁচটি বছর কেটে গেছে। আরও একবার লিগ শিরোপার হাতছানি লিভারপুলের সামনে। এমন সময়েই কিনা দলটির সামনে সেই চেলসি। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি। সেবারের মতো এবারও লিগের শেষের দিক, এক ম্যাচ কম খেলা সিটির চেয়ে এবার ২ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে শীর্ষে লিভারপুল। এপ্রিল মাসের এক রোববার, ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের সামনে সেই চেলসি। মিলটা এই পর্যন্ত থাকলেও হতো। এই রোববারও যে সেবারের মতো একই ম্যাচ দিবসে সিটি যাচ্ছে ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠে!

২০১৪ সালের সেই ম্যাচে খেলা খুব বেশি খেলোয়াড় লিভারপুলের এই দলে নেই। যাঁরা আছেন, অতীতের দুঃস্মৃতি তাঁদের ভুলেও মনের কোণে ঠাঁই না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ক্লপ, ‘সংবাদ সম্মেলনের এই কক্ষে ঢোকার আগে ২০১৪ সাল নিয়ে আমি এক সেকেন্ডও ভাবিনি। কেনই–বা ভাবব? গত বছর ঘরের মাঠে চেলসির বিপক্ষে ম্যাচের আগে আমাকে কেউ ২০১৪ সাল নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেনি। আমি নিশ্চিত নই আপনারা (সাংবাদিক) ছাড়া আর কারও মনে এটা আছে কি না। সমর্থকদের আমি বলব, এটা নিয়ে কোনো কথা হলে তা উপেক্ষা করতে। কেউ যদি এটা নিয়ে আমার কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলতে চায়, তাহলেও বারণ করব।’

হৃদয় খুঁড়ে বেদনা না জাগিয়ে নতুন ইতিহাস লিখতে চান ক্লপ, ‘২০১৪ সালের ওই হার নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এ রকম ঘটনা জীবনে একবারই ঘটে, কখনো কখনো দুবার। কখনো একবারও নয়। আমরা নতুন ইতিহাস লিখতে চাই।’

ক্লপ চাইলেও ২০১৪ সালের সেই ম্যাচ কি এই লিভারপুলের সবাই ভুলতে পারবেন! এই দলের অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের কথাই ধরুন। পাঁচ বছর আগের সেই ম্যাচে নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলা হয়নি ইংলিশ মিডফিল্ডারের। চেলসির বিপক্ষে ম্যাচটি দেখেছেন আর হতাশায় ডুবেছেন। সেই হতাশার কথা মনে করেই এবার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ইংলিশ মিডফিল্ডার, ‘ম্যাচটি দেখা খুব কঠিন ছিল আমার জন্য। আমার কাছে অবশ্য এটি সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণাও।’ সিজার আজপিলিকেতার জন্য বিষয়টি ঠিক হেন্ডারসনের বিপরীত। পাঁচ বছর আগের এপ্রিলের সেই রোববারে তিনি ছিলেন জয়ী দলে। এবারও সেটাই চান চেলসি অধিনায়ক, ‘সেই দিনটি ছিল আমাদের। আশা করছি, এবারও সেই রোববারের পুনরাবৃত্তি করতে পারব।’

সব মিলিয়ে আগুনে লড়াইয়ের এক মঞ্চ তৈরি। এখন শুধু এটা দেখার অপেক্ষা, কার জয় হয়—হেন্ডারসনের প্রতিশোধ, নাকি আজপিলিকেতার আশার।