মোসাদ্দেকের 'স্বপ্নপূরণ', মিঠুনের 'আলাদা কিছু নয়'

>বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন সাত নতুন মুখ। অনেক বড় স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে তাদের।
মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আবু জায়েদকে বিশ্বকাপ দলে রেখে চমক দেখিয়েছেন নির্বাচকেরা। সিলেটের এই পেসার নিশ্চয়ই নিজেও চমকে গেছেন? ওয়ানডেতে এখনো অভিষেকের অপেক্ষায় অথচ ডাক পেয়ে গেলেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। ঠিক জায়েদের মতো না হলেও অন্যরকম এক অনুভূতির মধ্যে আছেন আরও ছয় ক্রিকেটার। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের জন্য প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলা যেখানে একেকটি স্বপ্নপূরণ সেখানে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন সাত নতুন মুখ। তাঁদের জন্য এই বিশ্বকাপ তো আলাদা তাৎপর্য বহন করেই।

মোসাদ্দেক হোসেনের কথায় সেই তাৎপর্যের রেশ পাওয়া গেল। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। যিনি দলের প্রয়োজনে হাতও ঘোরাতে জানেন। সবশেষ গত বছর এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করলেও ঘরোয়া লিগের পারফরম্যান্স দিয়ে স্বপ্নপূরণের দুয়ার খুলেছেন মোসাদ্দেক। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পেতে পারেন আবার নাও পেতে পারেন—এমন দ্বিধা ছিল তাঁর মনের মধ্যে। নির্বাচকেরা আজ সেই দ্বিধার অবসান ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগার সঙ্গে মোসাদ্দেকের কিছুটা অবাকও হওয়ার কথা। ওই যে দ্বিধার মধ্যেও মনে মনে নিজেকে দলে দেখতে পাওয়ার আত্মবিশ্বাস ফলে গেলে যা হয় আরকি!

২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার ঘুম থেকে উঠে শুনেছেন বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯ দলে আছেন। নিজের অনুভূতিটুকু মোসাদ্দেক বললেন এভাবে, ‘ঘুম থেকে ওঠার পর যখন শুনলাম তখন স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়েছি। আমারও একটা ধারণা ছিল হয়তো থাকতেও পারি নাও থাকতে পারি। শোনার পর অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা অর্জন।’

মোসাদ্দেক হোসেন। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মোসাদ্দেক হোসেন। প্রথম আলো ফাইল ছবি

মোসাদ্দেকের স্বপ্নটা আর দশটা ক্রিকেটারের মতোই। ক্রিকেটে নামার পর থেকে স্বপ্ন দেখতেন একদিন বিশ্বকাপে খেলবেন। অনেক দিন দলের বাইরে থাকার পর স্বপ্নটা যেহেতু পূরণ হয়েই যাচ্ছে, মোসাদ্দেক তাই সুযোগ পেলে নিজেকে নিংড়ে দিতে চান, ‘যখন থেকে খেলা শুরু করি তখন থেকেই স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপে খেলব। সব বড় টুর্নামেন্টের দিকেই সব সময় ফোকাস থাকে। আমিও সেইভাবে চিন্তা করেছি যে বিশ্বকাপে খেলব, বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করব। আমি ১৫ জনের দলে আছি, আমি চেষ্টা করব সুযোগ পেলে ভালো কিছু করার।’

মোহাম্মদ মিঠুনের অনুভূতি একটু অন্যরকম। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকার কথা প্রথম জানতে পারেন সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে। জানার পর মিঠুনের অনুভূতি এমন যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না আবার আলাদা করে কিছু মনেও হয় না! হ্যাঁ, শিহরিত তো বটেই তবে মিঠুন নিজের জীবন থেকে শিখেছেন উত্থান-পতন থাকবেই। তাই এ নিয়ে আলাদা করে ভাবনা কিংবা উদ্বেলিত হওয়ার কিছু নেই। মিঠুনের কথাতেই তেমন রেশ পাওয়া গেল, ‘এটি তো অবশ্যই অন্যরকম একটি অনুভূতি। অনুভূতি তো আর বলে প্রকাশ করা যায় না। সেটা ভেতরেই থাকে। তেমন কিছু আসলে কাজ করেনি সেভাবে। আর তেমন আলাদাভাবে কিছু মনেও হয়নি। আমি সব সময় বলেছি যে আমার জীবনটা কখনোই সরল সোজা ছিল না। উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই আছে। আল্লাহর রহমতে গত কয়েকটি সিরিজ ভালো হয়েছে। ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করব যেন প্রত্যেকটি সিরিজে ভালো করতে পারি। এখন দেখা যাক সামনে কি হয়।’

২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ১৬ জনের স্কোয়াড থেকে ‘ফ্যাব ফাইভ’ (মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ) যে থাকবেন সে কথা জানাই। গত বিশ্বকাপের দল থেকে এবার ১৫ জনের স্কোয়াডে আরও সুযোগ পেয়েছেন সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার ও রুবেল হোসেন। বাকি সাত নতুন মুখ—মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, আবু জায়েদ রাহী, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক হোসেন। গত বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তাঁর অনুভূতিও অন্যরকম হলেও তা অবশ্যই স্বপ্নপূরণ কিংবা আলাদা করে কিছু মনে না হওয়ার নয়।