বাংলাদেশ-ভারত চ্যাম্পিয়নদের লড়াই ড্র

ভারতের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে জিততে পারেনি বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ছবি: শামসুল হক
ভারতের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে জিততে পারেনি বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ছবি: শামসুল হক
>এএফসি কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাবের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে আবাহনী লিমিটেড।

দুইবার পিছিয়ে পড়ল আবাহনী। সে জায়গা থেকে জয়ের আপ্রাণ চেষ্টাই চলল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মিনার্ভা পাঞ্জাবের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা। পাঞ্জাব খুশি অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র করে। কিন্তু আবাহনী? তারা যে জিততে চেয়েছিল ম্যাচটা!

মিনার্ভা ভারতের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এএফসি কাপে খেলতে আসলেও এবারের মৌসুমে তাদের অবস্থা খুবই নাজুক। এগারো দলের মধ্যে হয়েছে নবম। এমন একটি দল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর কাছে পাত্তা পাবে না, এমনটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল। সেই আশার পালে হাওয়া দিয়েছিল আগের ম্যাচে নেপালের চ্যাম্পিয়ন মানাং মার্সিয়াংদিকে তাদের মাঠেই ১-০ গোলে হারানোয়। কিন্তু ঘরের মাঠে তারুণ্য নির্ভর ভারতীয় ক্লাবটির সঙ্গে ঠিক জেতার মতো খেলা আবাহনী খেলতে পারেনি।

শুরুর ২ মিনিটেই আবাহনীকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল পাঞ্জাবের সিরিয়ান মিডফিল্ডার আল আমনা। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া তাঁর দূরপাল্লার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন অধিনায়ক ও গোলরক্ষক সোহেল। কিন্তু ১৬ মিনিটে ইস্ট বেঙ্গল থেকে ছাঁটাই হওয়া এই বিদেশি ঠিকই গোল করে এগিয়ে নিয়েছেন। বাম প্রান্ত থেকে মাকান উইংকেলের ক্রসে গোলমুখ থেকে স্লাইডিং করে খুলেছেন গোলের খাতা। তবে এই গোলের পেছনে আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ওয়েলিংটন দায় এড়াতে পারবেন না।

৪-৩-৩ ফর্মেশনে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ওয়েলিংটন প্রিওরিকে সেণ্টারব্যাকে খেলালেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস। নতুন জায়গায় হাঁসফাঁস করতে দেখা গিয়েছে এই ব্রাজিলিয়ানকে। প্রথম গোল হজমের পেছনে তাঁর জায়গায় না থাকাটাও অন্যতম কারণ। এ ছাড়া তাঁর মুভ দেখে মনে হচ্ছিল এএফসি কাপের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মতো ফিট নন। তবে আকাশি - নীলদের অন্য তিন বিদেশির পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসনীয়। বিশেষ করে হাইতিয়ান কেভিন বেলফোর্ট খেলেছেন দুর্দান্ত। তাঁকে ঠেকাতে গিয়ে অস্থির হতে হয়েছে পাঞ্জাব ডিফেন্সকে।

২০ মিনিটে বেলফোর্টের দৃষ্টিনন্দন এক মুভেই নাবিব নেওয়াজ জীবনের গোলে সমতায় ফেরে আবাহনী। গোলের মূল কৃতিত্ব হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্টের। বাম-প্রান্ত দিয়ে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়ে হাইতিয়ান যে ক্রসটি করেন, সেটিতেই পা লাগিয়ে গোল করেন জীবন। সমতায় ফেরা আবাহনী তখন টগবগিয়ে ফুটছে। বেলফোর্ট - সানডের সামনে অসহায় মনে হচ্ছিল পাঞ্জাবের রক্ষণভাগকে। দুই মিনিট পরেই সানডের শট ঠেকিয়ে দেন পাঞ্জাব গোলরক্ষক ভাস্কর রয়। বেলফোর্টের কাছ থেকে পাওয়া বলে সানডে পাঞ্জাব রক্ষণভাগকে গতিতে পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সামনে শুধু গোলরক্ষক। বাঁ দিকে প্লেস করলেও সেটি ঠেকিয়ে দেন ভাস্কর। ফিরতি বলে জীবনের শট গোল লাইন থেকে সেভ করেন এক ডিফেন্ডার।

অতিথি ডিফেন্ডার যেখানে গোল লাইন সেভ করেছেন , আবাহনী রাইট ব্যাক রায়হান হাসান প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারের পায়ে বল তুলে দিয়ে হজম করিয়েছেন গোল। ৪২ মিনিটে রায়হানের শিশুসুলভ ভুলে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় পাঞ্জাব। পাস দিতে গিয়ে বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বদলি শ্রেয়ার্সের পায়ে বল তুলে দেন। বুলেট গতির শটে গোল ২-১।
বিরতি থেকে ফিরেই সানডের গোলে সমতায় ফেরে আবাহনী। ওয়ালি ফয়সালের ফ্রি কিক ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে ফিরতি বলটি সানডের স্পর্শে চলে যায় জালে। ৪৮ মিনিটে ২-২ গোলে সমতা। ম্যাচের প্রায় অর্ধেক সময় তখনো বাকি। কিন্তু ঘরের মাঠে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি আবাহনীর। চেষ্টাতেও কিছুটা ঘাটতি ছিল।

এই ড্রয়ে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট আবাহনীর। সমান ম্যাচে দুই পয়েন্ট মিনার্ভার। এএফসি কাপের গ্রুপপর্বে দক্ষিণ এশিয়ার চার ক্লাব খেলছে ‘ই’ গ্রুপে। আবাহনীর সঙ্গে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ,ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাব ও চেন্নাইন এএফসি। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিক লড়াই শেষে একটি দল যেতে পারবে দ্বিতীয় পর্বে।