মেয়েদের দাপুটে খেলায় আফসোসের এক পরিসংখ্যান!

কাল বাংলাদেশ-আরব আমিরাত ম্যাচের পরিসংখ্যান। ছবি: বাফুফে
কাল বাংলাদেশ-আরব আমিরাত ম্যাচের পরিসংখ্যান। ছবি: বাফুফে
>আরব আমিরাতের বিপক্ষে একচেটিয়া খেলে ২-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু খেলার বিচারে বাংলাদেশের জয়টা হওয়া উচিত ছিল আরও অনেক বড়।

আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় নিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক দলের জয় দিয়ে শুরু হওয়ায় টুর্নামেন্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়াই স্বাভাবিক। কিন্তু কাল ম্যাচটি যাঁরা দেখেছেন তাঁদের অনেকে আবার হতাশও। বাংলাদেশের মেয়েদের ২ গোল ব্যবধানের জয় কোনোভাবেই ম্যাচের আসল ছবি বোঝাতে পারছে না। দল একক আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে। কিন্তু গোল মিস আর খেলোয়াড়েরা ব্যক্তিগত ঝলক দেখাতে গিয়ে ৩০ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলের ব্যবধানকে বড় করতে পারেনি বাংলাদেশ।

কালকের ম্যাচে মেয়েদের দাপট কেমন ছিল, তা পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে। প্রতিপক্ষের ২৮ ভাগের বিপরীতে বাংলাদেশের বলের দখল ছিল ৭২ ভাগ সময়। গোলপোস্টে বাংলাদেশ শট নিয়েছে ৩৩টি, সেখানে আমিরাতের শট মাত্র দুইটি। এর মধ্যে পোস্টে ২২টি শট রাখতে পেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। অর্থাৎ প্রায় দুই ডজন শটের বিপরীতে গোল মাত্র দুটি! দাপটের সঙ্গে এই চিত্র নিশ্চয়ই খাপ খায় না? তা ছাড়া ২০টি কর্নারও পেয়েছিলেন মেয়েরা। এসব পরিসংখ্যান দেখে ‘মাত্র’ ২ গোলের জয়কে মনে হতে পারে বাংলাদেশের সামনে আরব আমিরাতের গোলরক্ষক আয়া ওয়ালিদ মালালা চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন!

আরব আমিরাত গোলরক্ষক ভালো খেলেছেন, কিন্তু তাতে বাংলাদেশ ফরোয়ার্ডদের অবদানই বেশি! ফরোয়ার্ডরা গোলমুখে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে গোলরক্ষকের হাতে বল তুলে দিয়েছেন। ১২ মিনিটে প্রথম গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া সিরাত জাহান স্বপ্না অনায়াসে করতে পারতেন হ্যাটট্রিক। দু-দুবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও দৃষ্টিকটুভাবে ব্যর্থ হয়েছেন স্বপ্না। ১৮ মিনিটে মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দার ভলিতে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল আমিরাতের রক্ষণভাগ। বল পেয়ে ভালো নিয়ন্ত্রণও নিয়েছিলেন স্বপ্না, কিন্তু শেষ মুহূর্তে তালগোল পাকিয়ে গোলরক্ষকের হাতে বল তুলে দেন বাংলাদেশের এ স্ট্রাইকার। এই হতাশা ভুলতে বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও স্বপ্না গোল করতে পারেননি।

দ্বিতীয়ার্ধে ৪৮ মিনিটে আরও একটি গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন রংপুরের মেয়ে স্বপ্না। কৃষ্ণা রানীর রক্ষণচেরা পাস পেয়ে গোলরক্ষকে একা পেলেও কাজ হয়নি। ব্যর্থতায় স্বপ্না সেই গোলরক্ষকের হাতেই বল তুলে দিয়েছেন। স্বপ্না ছাড়া শামসুন্নাহার, কৃষ্ণারাও কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। খেলাটা দেখে থাকলে তাই স্কোরলাইনে অতৃপ্তি থাকাই স্বাভাবিক। স্বপ্নার গোল মিস নিয়ে হতাশা রয়েছে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানি ছোটনেরও, ‘স্বপ্নার হ্যাটট্রিক হতে পারত। সে গোলরক্ষকে দুইবার একা পেয়েও গোল করতে পারেনি। অথচ আগের দিন স্কোরিং নিয়ে অনেক অনুশীলন হয়েছে। পরবর্তী ম্যাচের আগে আরও অনেক কাজ করতে হবে।’

গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ মাঠে নামবে ২৬ এপ্রিল।