'স্বার্থপর ফুটবল' খেলেনি বাংলাদেশের মেয়েরা

‘মেয়েরা স্বার্থপর ফুটবল খেলেনি’। ছবি: প্রথম আলো
‘মেয়েরা স্বার্থপর ফুটবল খেলেনি’। ছবি: প্রথম আলো
>

আরব আমিরাতকে ২-০ গোলে হারিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেও বাংলাদেশের মেয়েদের খেলায় খুশি হতে পারেননি অনেকে। অভিযোগ উঠেছে ‘স্বার্থপর’ ফুটবলের। তবে অভিযোগ উড়িয়েছেন অধিনায়ক মৌসুমি।

বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপে শুরুটা জয় দিয়েই করেছেন বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ মেয়েরা। আরব আমিরাতকে ২-০ গোলে হারালেও এই জয়ে খুব খুশি হতে পারছেন না অনেকেই। অতীতে এই আমিরাতকেই গোলবন্যায় ভাসিয়েছিলেন মৌসুমি-স্বপ্নারা। সে অভিজ্ঞতা থেকেই অনেকের প্রত্যাশা ছিল মোটামুটি বড় ব্যবধানের একটি জয়। কিন্তু সেটি হয়নি। গোল মিসের মহড়া দিয়ে দুই গোল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে মেয়েদের।


এ জন্য সমালোচকেরা দোষ দিচ্ছেন মেয়েদের ‘স্বার্থপর’ ফুটবলকে। আমিরাতের গোলমুখে সুযোগ তৈরি হলেও ফরোয়ার্ডরা সে সুযোগগুলো হারিয়েছেন ‘ব্যক্তিগত’ সাফল্যের পেছনে ছোটায়—এ অভিযোগ উঠছে। তবে সে অভিযোগ উড়িয়েছেন অধিনায়ক মিসরাত জাহান মৌসুমি।


ম্যাচের ২০ মিনিটের সময় বাঁ প্রান্ত দিয়ে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণভাবে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন লেফট উইঙ্গার শামসুন্নাহার। গোলমুখে কাছের পোস্টে বলের অপেক্ষায় ছিলেন স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না আর দূরের পোস্টে ফাঁকা জায়গায় রাইট উইঙ্গার সানজিদা। কিন্তু শামসুন্নাহার বলটি ক্রস বা কাটব্যাক না করে নিজেই পোস্টে নিলেন। কিন্তু গোল আর হলো না। এই মুভটিকে ম্যাচের প্রতীকী চিহ্ন বলা যেতে পারে। কেননা, একইভাবে কৃষ্ণা রানী সরকার, স্বপ্না, সানজিদাদের পায়ে বেশ কিছু ভালো আক্রমণের অকালসমাপ্তি ঘটেছে।


অধিনায়ক মৌসুমি মানতেই চাইলেন না যে দলের খেলোয়াড়েরা স্বার্থপরের মতো খেলেছেন, ‘আমরা সবাই মাঠের নামার আগে বলি স্বার্থপর খেলা খেলব না। এটা আমরা ওয়াদা করে নামি। হয়তো নিজেদের সুযোগ ছিল বলেই তারা নিজেরা চেষ্টা করেছে। এমন নয় যে তারা স্বার্থপরের মতো খেলেছে। সব সময়ই বলি, আগে আমরা দলের জন্য গোল দেব। যদি স্কোর লাইন বেশি থাকে তখন সুযোগ নেওয়া যাবে।’


বাংলাদেশ গোলপোস্টে শট নিয়েছে ৩৩টি। এর মধ্যে পোস্টে রাখতে পেরেছে ২২টি শট। অর্থাৎ প্রায় দুই ডজন শটের বিপরীতে গোল মাত্র দুটি! ২০টি কর্নারও পেয়েছিলেন মেয়েরা। এসব পরিসংখ্যান দেখে ‘মাত্র’ ২ গোলের জয়কে মনে হতে পারে বাংলাদেশের সামনে আরব আমিরাতের গোলরক্ষক আয়া ওয়ালিদ মালালা চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন! আসলে তা নয়, দিতে হয়েছে গোল মিসের খেসারত। মৌসুমি নিজেই শিকার করে নিচ্ছেন গোল মিস হয়েছে অসংখ্য, ‘আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারিনি। পারলে ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত। সাতটার চেয়েও বেশি মিস করেছি, এটা আমাদের ভুল। এ জন্য আমরা দুঃখিত। তবে আমরা চেষ্টা করেছি গতবারের চেয়ে আরও বেশি গোল দিতে। কিন্তু হয়নি। ফিনিশিংয়ে ভুল হয়েছে।’