কিরগিজস্তানের জয়, সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

কিরগিজস্তানের কাছে হেরে আমিরাতের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল। ছবি: প্রথম আলো
কিরগিজস্তানের কাছে হেরে আমিরাতের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল। ছবি: প্রথম আলো
>কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ২–১ গোলে হেরে অনূর্ধ্ব– ১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ থেকে আরব আমিরাতের বিদায়। আর এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ও কিরগিজস্তান।

শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গেই মাথায় হাত দিয়ে মাঠে বসে পড়লেন আরব আমিরাতের কোচ হুরাইরা আল তাহেরি। দুর্দান্ত খেলেও জয় না পাওয়ার হতাশার ছাপ স্পষ্ট আমিরাতের এই কোচের মধ্যে। কারণ আছে আরও একটি, ২–১ গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় পেনাল্টি পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে দল। শেষ পর্যন্ত কিরগিজস্তানের বিপক্ষে ২–১ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়া। আর টানা দুই পরাজয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ থেকে আরব আমিরাতের বিদায়। অন্যদিকে এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনালে ওঠার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কিরগিজস্তান। তাদের জয়ে বাংলাদেশও এক ম্যাচ হাতে রেখে শেষ চারে।

আরব আমিরাত নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরেছিল ২–০ গোলে। ফলে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার আশা বাঁচিয়ে রাখতে আজ তাদের প্রয়োজন ছিল ন্যূনতম ড্র। কিন্তু হেরে যাওয়ায় গ্রুপের অন্য দুই দল সরাসরি শেষ চারে। শুক্রবার বাংলাদেশ–কিরগিজস্তান ম্যাচটি এখন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই। গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ড্র করলেই বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।

আরব আমিরাতকে আজ ডুবিয়েছেন গোলরক্ষক আয়া ওয়ালিদ মালালা। তাঁর ভুলেই দুই গোল হজম করেছে আমিরাত। কিক অফের ৬ মিনিটেই মালালার হাস্যকর ভুল ও কিরগিজদের এগিয়ে যাওয়া। কর্নার থেকে নেওয়া কিরগিজ স্ট্রাইকার বরবেকোভার আইজানের শট সরাসরি গোলরক্ষকের হাতের ওপর দিয়ে জালে। বলের লাইন মিস করেন গোলরক্ষক। ১২ মিনিট পরেই আবার হাস্যকর ভুলের পুনরাবৃত্তি। এবার গোল হজম করলেন হাত ফসকে বল ফেলে দিয়ে। কর্নার থেকে নেওয়া তকতোবলোতোবার শট হাত ফসকে বের হয়ে গোলমুখে পড়লে হেডে জালে জড়িয়েছেন রিসবেক কেজি।

শুরুতেই গোলরক্ষকের এমন ‘আত্মাহুতি’ দেওয়ার পরেও জেগে ওঠেছিল আমিরাত। খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ৩৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান সহিদ খালেদ। দ্বিতীয়ার্ধে পুরো ম্যাচে দাপট ছিল আমিরাতের । ৭০ মিনিটে পেনাল্টিও পেয়েছিল। স্পট কিক থেকে তখন কেবল সমতায় ফেরার অপেক্ষা। কিন্তু স্পট কিক থেকে ক্রসবার উঁচিয়ে বল বাইরে মারেন বদলি সেনডা ঘরিব। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি মিসের খেসারত দিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। ড্র করলেও আশা থাকত।

ম্যাচ শেষে দুর্ভাগ্যকেই দায়ী করেছেন আমিরাতের কোচ হুরাইরা আল তাহেরি, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, ভালো খেলেও জিততে পারলাম না। পেনাল্টি মিস না হলে ড্র হতো। তা হলেও আমরা টুর্নামেন্টে টিকে থাকতাম। হয়তো সেমিফাইনালেও যেতে পারতাম।’

এই নিয়ে ৬ মাসের ব্যবধানে অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়েই দুবার কিরগিজস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল আমিরাত। গত বছর কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব ১৯ বাছাইপর্বেও একই ব্যবধানে হেরেছিল তারা। কিন্তু আজকের হারের কষ্টটা একটু বেশিই আমিরাতের কোচের। কারণ পেনাল্টি থেকে সমতায় ফেরার সুযোগ নষ্ট করে হার নিয়ে মাঠ ছাড়া। এ ছাড়া ডাগ আউট থেকে পেনাল্টির দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন ব্যবধান কমানো সহিদ খালেদকে। কিন্তু সে নিতে অপারগতা প্রকাশ করাই বদলি খেলোয়াড় স্পটট কিক নিতে যাওয়া। এটাও খোঁচাচ্ছে কোচকে, ‘আমি সহিদকে পেনাল্টি নিতে বললে সে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে সেনডা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিতে গেলে না করতে পারিনি। এর পরে গোল না হওয়াটা দুর্ভাগ্য।’

অন্যদিকে এই ম্যাচের গল্প ভুলে গিয়ে পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াকু পারফর‍ম্যান্স উপহার দিতে চান কিরগিজস্তানের কোচ গাইভোরনসকাই নাতালিয়া। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তাগিদ যে আছে তাদেরও। ম্যাচটি পরশু শুক্রবার, সন্ধ্যা ছয়টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে প্রথম আলো।