পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দল নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলেন সরফরাজ

ইংল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেছে সরফরাজের দল। ফাইল ছবি
ইংল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেছে সরফরাজের দল। ফাইল ছবি

অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে দুই-দুটি সেঞ্চুরি করেও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জায়গা হয়নি বিশ্বকাপ দলে। রিজওয়ান উইকেটকিপার, সেই জায়গাটি সরফরাজ আহমেদের দখলে। কিন্তু মিডল অর্ডারেও কি জায়গা হতে পারত না রিজওয়ানের? পাকিস্তানের ক্রিকেট সমর্থকদের একটা বড় অংশের মনে এই প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সরফরাজ বলে দিলেন, পাকিস্তানের এই ব্যাটিং লাইন আপের শক্তি অনেক। নিয়মিত ৩০০-৩৫০ রান তোলার সামর্থ্য আছে তাঁদের।

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিল বলে পাকিস্তানকে নিয়ে অনেক প্রত্যাশা দেশটির সমর্থকদের। সেবার পারলে এবার কেন নয়? প্রত্যাশার বিপরীতে ভয়ও আছে। সদ্যই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫-০তে ধবলধোলাই হতে হয়েছে। তবে পাকিস্তান অধিনায়ক অভয় দিলেন। শুধু তা-ই নয়, এবারের ২০১৯ বিশ্বকাপে বড় স্কোরের ম্যাচ হলেও পাকিস্তান সেই চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত বলেই দাবি সরফরাজের।

সরফরাজ বলেছেন, ‘এই দলটার ৩০০-৩৫০ করার পূর্ণ সামর্থ্য আছে, সেটা প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য দেওয়ার বা রান তাড়া করার ক্ষেত্রেই হোক না কেন। মিডল ও লোয়ার অর্ডারে আমাদের দারুণ কিছু ব্যাটসম্যান আছে। ইমাদ তো গত ২-৩ মাস ধরে দারুণ ব্যাটিং ফর্মে। শেষের দিকে ও ব্যাট হাতে নেমে দারুণ খেলছে। আমাদের শোয়েব মালিকের মতো ব্যাটসম্যান আছে, যে এ ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর। এরপর আছে ফাহিম আশরাফ, বল গ্যালারিতে পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। ফলে আমি মনে করি শেষের দিকে দ্রুত রান তোলাটাও আমাদের জন্য তেমন সমস্যা হবে না।’

রিজওয়ানের মতো ফর্মে থাকা উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানকে যে এক অর্থে তাঁর জন্যই বলি দিতে হলো, এটি কি সরফরাজের জন্য বাড়তি চাপ নয়? পাকিস্তান অধিনায়কের জবাব, ‘একদমই নয়। তবে রিজওয়ানের দুর্ভাগ্য বলতে পারেন যে আমি উইকেটকিপিংয়ের পাশাপাশি দলের অধিনায়কের দায়িত্বটাও পালন করি। অবশ্যই, ও রকম দুর্দান্ত ফর্মে আছে, এমন একজনকে দলে না নেওয়া কঠিন এক সিদ্ধান্ত। ওর জন্য আমার খারাপ লাগছে। তবে মিডল অর্ডারে আমাদের চারজনের বেশি ব্যাটসম্যান নেওয়ার সুযোগ ছিল না। ফলে আমরা বাবর আজম, হারিস সোহেল, শোয়েব মালিক আর মোহাম্মদ হাফিজকে বেছে নিয়েছি। রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত ১৫ জনের দলে জায়গা করে নিতে পারেনি। তবে ভালো দিক হলো আমাদের বেঞ্চ যে কতটা শক্তিশালী, সেটা রিজওয়ানের মতো ব্যাটসম্যানকে অপেক্ষমাণ থাকতে হয় দেখেই বোঝা যায়। আল্লাহ না করুক, এর মধ্যে কারও ইনজুরি হলে, আমরা জানি ও বিকল্প হিসেবে তৈরিই আছে।’

এ বছর ভয়াবহ ফর্মে থাকা মালিককে কেন নেওয়া হলো, সেই ব্যাখ্যাও দিতে হয়েছে সরফরাজকে, ‘এই মুহূর্তে আমাদের পুরো মনোযোগ বিশ্বকাপ ঘিরে। শোয়েব মালিক আমাদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। শোয়েব ভাই ও হাফিজ ভাইয়ের অভিজ্ঞতার সুবিধার পুরোটাই আমাদের আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা থাকবে। এঁদের আমাদের দরকার, কারণ বিশ্বকাপ সাধারণ সিরিজ থেকে একেবারেই আলাদা চাপের এক খেলা।’

হাফিজকে কেন ৪ নম্বরে? সরফরাজের উত্তর, ‘দেড় বছর ধরে তিনি চারেই ব্যাটিং করছেন। ওই জায়গায় তিনি থিতু হয়ে গেছেন। তাঁকে ওখানেই ব্যাটিং করতে দেখা যাবে।’

পুরো দল নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন, ‘আমাদের বিশ্বকাপ দলে মাত্র চারজন খেলোয়াড়ের এর আগে এই টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বাকিরা তুলনামূলকভাবে নতুন, বিশ্বকাপে এক ম্যাচও খেলেনি। তবে এদের ১১ জন কিন্তু দুই বছর আগে ইংল্যান্ডেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ছিল।’

ছন্দে থাকা আমিরকে দলে পেলে যে তাঁরও ভালো লাগত, সরফরাজ সে কথাও বলেছেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক, আমি বেশ ভালো বোলিং করলেও ওর কাছ থেকে যে রকম উইকেট প্রত্যাশা করেছি, সেটা পাইনি। তবে ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পাচ্ছে। অনুশীলন আর প্রস্তুতি ম্যাচে ও নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করতে পারলে দলে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্র সে তৈরি করতে পারবে।’

৫ মে টি-টোয়েন্টি দিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরু করবে পাকিস্তান। এরপর ৫ ওয়ানডের একটি সিরিজ খেলবে। বিশ্বকাপের আগে স্বাগতিকদের বিপক্ষে এই সিরিজ পাকিস্তানের জন্য বিশ্বকাপ প্রস্তুতির ভালো সুযোগও।