মঙ্গোলিয়া কি বড় বাধা বাংলাদেশের সামনে?

মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে পরিকল্পনা করেই নামবে মেয়েরা। ছবি: প্রথম আলো
মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে পরিকল্পনা করেই নামবে মেয়েরা। ছবি: প্রথম আলো
>

অনূর্ধ্ব-১৯ বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আজ মঙ্গোলিয়া। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে।

বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিতে আজ মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশের মেয়েরা। ফুটবলে মঙ্গোলিয়া বাংলাদেশের অজানা প্রতিপক্ষ না হলেও মেয়েদের জন্য অপরিচিতই। ২০০১ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ছেলেদের জাতীয় দল দুটি ম্যাচ খেললেও গোলাম রব্বানী ছোটনের মেয়েরা আগে কখনোই, কোনো পর্যায়েই এই দলের বিপক্ষে মাঠে নামেনি। এই ‘অজানা’ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েদের সম্বল নিজেদের ওপর আস্থা আর প্রচুর ‘হোমওয়ার্ক’!


হ্যাঁ, গ্রুপ পর্বে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই কোচ ছোটন ঠিক করে নিয়েছেন এই দলের বিপক্ষে রণকৌশল, ‘মঙ্গোলিয়ার গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ দেখে আমরা আমাদের হোমওয়ার্ক করে নিয়েছি।’ সেই হোমওয়ার্ক আজ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কতটা কাজে আসবে, তার ওপরেই নির্ভর করছে মিসরাত জাহান মৌসুমিদের ফাইনালের টিকিট।


টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই মৌসুমি, সানজীদা আকতারদের গায়ে হট ফেবারিটের তকমা। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল না খেললেও গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে দাপুটে জয় নিয়ে সেমিতে উঠেছে বাংলাদেশ। নিজেদের টুর্নামেন্টে শিরোপার মঞ্চে ওঠার আগে মঙ্গোলিয়াকেও বড় বাধা মানছেন না বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানি ,‘মঙ্গোলিয়ার খেলা মেয়েরা টিভিতে দেখেছে। আমরাও মাঠে বসে দেখেছি। ওরা খুব শক্তিশালী দল। ভালো খেলেই সেমিফাইনালে উঠেছে। কিন্তু গত দুই ম্যাচের মতো আমাদের মেয়েরাও ভালো খেলবে। সেরাটা দিয়েই জিতবে।’

মাঠে নেমে সব কোচই জিততে চায়, সে সামর্থ্য বাংলাদেশের আছেও। কিন্তু দুই দিন ধরে বাংলাদেশ শিবিরে বইছে অস্বস্তির বাতাস। চোট ছিটকে দিয়েছে দলের অন্যতম সেরা দুই খেলোয়াড় সিরাত জাহান স্বপ্না ও কৃষ্ণা রানী সরকারকে। আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের দুই নায়কের জায়গায় আজ দেখা যাবে মার্জিয়া ও সাজেদাকে। কিরগিজস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে এই দুজন বদলি নেমে একাদশের সঙ্গে কিছুটা খাপ খাইয়ে নেওয়ার কাজটাও সেরে নিয়েছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ কোচর কাছে মঙ্গোলিয়া যতই অচেনা হোক না কেন, তাদের জাপানি কোচ কাওয়ামোতো নাওকোর কাছে বাংলাদেশ এক পরিচিত প্রতিপক্ষের নাম। ২০১৬ এসএ গেমসে মালদ্বীপের কোচ থাকার সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে ডাগ আউটে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। সে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল বড় ব্যবধানে। তবে আজ মঙ্গোলিয়ার ডাগ আউটে দাঁড়ানোর আগে বাংলাদেশকে দিয়ে রাখছেন খানিক হুমকি, ‘টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট বাংলাদেশ। তাদের সম্পর্কে আমাদের ভালো ধারণা আছে। মালদ্বীপের কোচ থাকার সময় তাদের বিপক্ষে খেলেছিলাম। যদিও আমরা সেবার হেরেছিলাম। তবে এখানে আশা করি, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচই দেখবে সবাই।’


মেয়েদের ফুটবলে মঙ্গোলিয়া একেবারেই নতুন। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে শক্তিতে অবশ্য তারা ভালোই। তাদের মূল জাতীয় দল গত বছর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেই নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় তুলে নিয়েছে। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে গুয়ামের বিপক্ষেও পেয়েছে জয়। সব শেষ এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বে হংকংকে হারিয়ে হয়েছে তৃতীয়। অর্থাৎ, মেয়েদের ফুটবলে পথচলার শুরুতেই মঙ্গোলিয়ার পারফরম্যান্স আশাজাগানিয়া। তাজিকিস্তানকে বাড়ির টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠাও তা-ই প্রমাণ করে।