আফ্রিদি স্বার্থের জন্য অন্যদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছেন

আত্মজীবনী লিখে বিপদে পড়তে যাচ্ছেন না তো আফ্রিদি? ফাইল ছবি
আত্মজীবনী লিখে বিপদে পড়তে যাচ্ছেন না তো আফ্রিদি? ফাইল ছবি

গেম চেঞ্জার নামটাতেই বদলের কথা বলা আছে। শহীদ আফ্রিদি নিজের দিকে ইঙ্গিত করে নাম দিয়েছিলেন। তবে বইয়ে যা লিখেছেন তাতে পাকিস্তান ক্রিকেটের চেহারাই বদলে যাচ্ছে। জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াকার ইউনিস, গৌতম গম্ভীর—আত্মজীবনীতে যাকে পেয়েছেন তাঁরই সমালোচনা করেছেন আফ্রিদি। এমন আচরণের পরিণতি কখনোই ভালো হয় না। পাল্টা আক্রমণের শিকার হয়েছেন আফ্রিদি। সাবেক সতীর্থ ইমরান ফারহাত বলেছেন, নিজের সুবিধার জন্য অন্যদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছেন আফ্রিদি।

গেম চেঞ্জারে অনেক কিছুই বলেছেন আফ্রিদি। তাঁর বয়স এক লাফে ৫ বছর বেড়ে গেছে। গৌতম গম্ভীরকে অপমান করেছেন। জাভেদ মিয়াঁদাদকে ছোট মনের লোক বলেছেন, ওয়াকার ইউনিসকে বাজে কোচ বানিয়েছেন। ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনা জানতেন সে দাবিও তুলেছেন। কিন্তু এমন সব দাবি আসলেই সত্য নাকি বইয়ের কাটতি বাড়ানোর জন্য, সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। ফারহাত তো মিথ্যুক আফ্রিদির কথাকে গুরুত্ব দিতেই চাচ্ছেন না। একের পর এক টুইটে আফ্রিদির দিকে বাণ ছুড়েছেন ফারহাত, ‘আফ্রিদির নতুন বই নিয়ে যা শুনলাম এবং এখন পর্যন্ত যা পড়লাম, আমি খুবই লজ্জিত। বিশ বছর ধরে যে নিজের বয়স নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে, এখন সত্যবাদী সাজার চেষ্টা করছে এবং জীবন্ত কিংবদন্তিদের দোষ দিচ্ছে।’

আফ্রিদির এসব ঝড় তোলা কথাবার্তার পেছনে অন্য ইন্ধন আছে বলেই মনে করেন ফারহাত। আফ্রিদির অনেক গোপন কীর্তির খবরও নাকি জানা এই ব্যাটসম্যানের, ‘তথাকথিত এই সন্ত যার সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার, তাকে নিয়ে অনেক গল্প বলার আছে আমার। সে আসলে একজন রাজনীতিবিদ হওয়ার বুদ্ধি রাখে।’ আফ্রিদি ফারহাতকে নিয়ে বইয়ে কিছু লেখেননি, অন্তত এখনো তেমন কিছু সংবাদমাধ্যমে আসেনি। তবে আফ্রিদি যেসব সাবেক খেলোয়াড়দের সমালোচনা করেছেন, তাঁদের সবাইকে এর প্রতিবাদ করতে বলেছেন ফারহাত, ‘তাকে নিয়ে বলার মতো অনেক গল্পই আছে আমার। সে যে খেলোয়াড়দের নামে সে কুৎসা রটনা করেছে, তাদের সবাইকে আমি সত্যিটা বলার আহ্বান জানাচ্ছি। নিজের ভালোর জন্য অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে এই স্বার্থপর লোক। নিজের স্পনসরশিপের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাকমেল করেছে সে।’

স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনায় নিজেকে সাধু বানিয়েছেন আফ্রিদি। তবে তাঁর ওই দাবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নয়, ম্যাচ পাতানোর ঘটনায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিল আফ্রিদির। বিসিসিআই এর কর্মকর্তা অনিরুধ চৌধুরী তাই প্রশ্ন তুলেছেন আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটের (এসিইউ) কাছে তথ্য না দেওয়ার পেছনে আফ্রিদির কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না, ‘যখন সে ব্যাপারটা জেনেছে, তখনই তার এটি এসিইউকে জানানো উচিত ছিল। আফ্রিদির এভাবে তথ্য গোপন করা এসিইউ কীভাবে নেয় সেটাই দেখার বিষয়, কারণ সে আইন মানতে ব্যর্থ হয়েছে।’

অনিরুধ চৌধুরীর কথাকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে। কিছুদিন আগেই তথ্য সরবরাহে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না করায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে সনাথ জয়াসুরিয়াকে। সেখানে ম্যাচ পাতানো হবে এটা জেনেও না জানানোর অপরাধের মাত্রা আরও বেশি। আত্মজীবনীর কাটতি বাড়াতে গিয়ে অনেক রেকর্ডই (বয়সের) হাতছাড়া করছেন আফ্রিদি। দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট গেম চেঞ্জারের একটি কপি জোগাড় করে সে খালি হাতে নিষেধাজ্ঞা ধরিয়ে দেবে না তো!