বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে ঘটনা মাত্র তিনবার

>
সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েছিলেন তামিম ও সৌম্য। প্রথম আলো ফাইল ছবি
সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েছিলেন তামিম ও সৌম্য। প্রথম আলো ফাইল ছবি

ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ন্যূনতম ফিফটি তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে কয়বার?

স্কোরকার্ড দেখেও শান্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ ম্যাচে সাকিব-তামিমদের স্কোরকার্ড আরকি। ব্যাটিং করেছেন প্রথম চারজন। হতাশ করেননি কেউ। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে সেঞ্চুরির সুবাস পেয়েছেন প্রথম দুজন। লক্ষ্য বড় হলে তিনে ব্যাটিংয়ে নামা সাকিব আল হাসানের রানসংখ্যাও বেশি হতো। যেমনটি হতো মুশফিকুর রহিমের সংগ্রহও। আসলে কথাগুলো বলার কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ‘সার্জিক্যাল নাইফ’সুলভ ব্যাটিংয়ের জন্য। কখনো কখনো এমনও মনে হয়েছে, আউট হতে না চাইলে ওঁদের আউট করে কে!

ব্যাটিংয়ে দেখেশুনে খেলার আক্ষরিক অনুবাদই হয়েছে সেদিন। মারার বল যেমন ছাড় পায়নি তেমনি বাজে শট হয়েছে খুব কমই। তামিম (৮০), সৌম্য (৭৩) ও সাকিবদের (৬১) টপ অর্ডার এমন ব্যাটিং করলে তা সত্যিই চোখের শান্তি। সেটি স্কোরবোর্ডের জন্যও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফিফটি তুলে নিয়েছেন প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জন্য এমন দৃশ্য কিন্তু বেশ বিরল। ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার পর এই ২২ বছরে এমন ঘটনা দেখা গেছে মাত্র তিনবার।

এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে জড়িয়ে আছে মেহরাব হোসেনের সেই ইনিংস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। হ্যাঁ, ১৯৯৯ সালে ঢাকায় মেরিল ইন্টারন্যাশনাল কাপে সেই ম্যাচটির কথাই বলা হচ্ছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন ওপেনার মেহরাব হোসেন (১০১)। ওপেনিং জুটিতে তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন। ১৭০ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজনে মিলে—যা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ওপেনিং জুটিতে এখনো সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শাহরিয়ার। এরপর তিনে নেমে ৫০ রান করেছিলেন আকরাম খান। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের ন্যূনতম ফিফটি তুলে নেওয়ার সেটিই প্রথম নজির।

দ্বিতীয়বার এমন কিছু দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক দিন। সময়ের হয়েছে দীর্ঘ ১৫ বছর। ঢাকায় ২০১৪ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী সে ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ন্যূনতম ফিফটির মুখ দেখেছিলেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান! এর মধ্যে আবার সেঞ্চুরিও ছিল এনামুল হকের। ফিফটি পাওয়া বাকি তিন—ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক ও মুশফিক।

পাঁচ বছর পর এবার আয়ারল্যান্ডের মাটিতে দেখা গেল সেই একই নজির। মজার ব্যাপার, ১৯৯৯ সালের সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই ছিলেন ডান হাতি, এরপর ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে একজন ডান হাতি দুজন বাঁ হাতি। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ নজির গড়া তিন ব্যাটসম্যানই বাঁ হাতি। তা সে যে হাতেই ব্যাট করুক না কেন, রান পাওয়াই বড় ব্যাপার। আর প্রথম ম্যাচেই টপ অর্ডার রান পাওয়ায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ আরও আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা। একটা সেঞ্চুরি কেন নয়!