রোজা রেখেই খেললেন, ইফতার করে গোলও পেলেন

ইফতারের সময় ‘এনার্জি জেল’ গ্রহণ করছেন হাকিম জিয়েখ। ছবি: টুইটার
ইফতারের সময় ‘এনার্জি জেল’ গ্রহণ করছেন হাকিম জিয়েখ। ছবি: টুইটার
>চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে কাল রোজা রেখেই মাঠে নেমেছিলেন আয়াক্সের হাকিম জিয়েখ ও নওসাইর মাজরাউয়ি। রোজা ভাঙার পর জিয়েখ গোলের দেখাও পান

পবিত্র রমজান মাস পালিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। আমস্টারডামে কাল চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচও শুরু হয়েছিল (স্থানীয় সময়) সূর্যাস্ত যাওয়ার প্রায় আধঘণ্টা আগে। রোজা রেখেই টটেনহামের মুখোমুখি হয়েছিলেন আয়াক্সের দুই মুসলিম খেলোয়াড় হাকিম জিয়েখ ও নওসাইর মাজরাউয়ি। মরক্কোর এ দুই খেলোয়াড় মাঠে থাকতে যথাসময়েই রোজা ভেঙেছেন। জিয়েখ তো রোজা ভাঙার মিনিট দশেক পর পেয়েছেন গোলের দেখাও।

ফুটবল এমনিতে শারীরিক ধকলের খেলা। রোজা রেখে মাঠে নামা চাট্টিখানি কথা নয়। তবে অনেক মুসলিম ফুটবলারই রোজা রেখে মাঠে নামেন। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল ছিল রমজান মাসের মধ্যে। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, লিভারপুল তারকা মোহাম্মদ সালাহ এমনিতেই ভীষণ ধর্মপরায়ণ আর তাই ফাইনাল খেলতে নামবেন রোজা রেখেই। পরে ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোজা কাজা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সালাহ। এ ছাড়া মেসুত ওজিলও অনেকবারই রোজা রেখে মাঠে নেমেছেন।

আয়াক্স মিডফিল্ডার জিয়েখও বেশ ধর্মপরায়ণ। তাঁর সঙ্গে মাজরাউয়িও রোজা রেখে কাল মাঠে নেমেছিলেন। ম্যাচের প্রথম ২২ মিনিট রোজা রেখেই খেলেছেন । কিক অফ শুরুর প্রায় ১৮ থেকে ২০ মিনিট পর ইফতারের সময় ছিল আমস্টারডামে। ইফতার সময় হওয়ার পর জিয়েখ ও মাজরাউয়িকে দেখা গেছে সাইড লাইনে গিয়ে ‘এনার্জি জেল’ গ্রহণ করছেন। অ্যাথলেটদের শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায় এই খাবার। ইফতার করার পর ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যান জিয়েখ। তাঁর দুর্ভাগ্য, আয়াক্স শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। দলটিকে বিদায় নিতে হয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে।

ডাচ কোচ রেমন্ড ভেরিয়েন অবশ্য জিয়েখ ও মাজরাউয়ির রোজা রাখার সমালোচনা করেছেন। পুষ্টিবিদ্যায় বিশেষজ্ঞ এ কোচের যুক্তি, ‘মৌসুমের এ পর্যায়ে জিয়েখ ও মাজরাউয়ি রোজা পালন করলে সেটি হবে দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ। গত ১১ মাসের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে যাবে যার প্রভাব পড়বে শরীর ও ক্লাবের ওপর। মৌসুমের এ পর্যায়ে এসে এ কাজ (রোজা পালন) করার অর্থ হলো চলন্ত চাকার মধ্যে কোনো কিছু নিক্ষেপ করা (থামিয়ে দেওয়া)। রক্তে চিনির পরিমাণ কমবে এতে তারা শক্তি হারাবে।’ চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিলেও ডাচ লিগে শিরোপা দৌড়ে এখনো ম্যাচ বাকি আয়াক্সের। জিয়েখ ও মাজরাউয়িকে তাই কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে সামনে।