হৃদয়ে চেন্নাই, চিন্তায় আবাহনী!

চেন্নাইয়িন এফসির সহকারী কোচ সাবির পাশা। সংগৃহীত ছবি
চেন্নাইয়িন এফসির সহকারী কোচ সাবির পাশা। সংগৃহীত ছবি
>১৫ মে এএফসি কাপে ভারতের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়িন এফসির বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড। ভারতের ক্লাবটির সহকারী কোচ সাবির পাশা আবাহনীর জার্সিতে দুই মৌসুম খেলেছেন শতাব্দীর শুরুতে

আবাহনী মাঠে দাঁড়িয়ে উসখুস উসখুস করছিলেন সাবির পাশা। দলের অনুশীলনের মাঝে মাঝে বারবার এদিক-সেদিক তাকিয়ে নিজের স্মৃতি খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন চেন্নাইয়িন এফসির সহকারী কোচ। খেলোয়াড়ি জীবনের কত মধুর স্মৃতিই না জড়িয়ে আছে আবাহনী ক্লাবের লাল ইটের দেয়ালে। সেই ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে আকাশি-নীল জার্সিতে খেলে গিয়েছেন। প্রায় দেড় যুগ পরে সে ক্লাবের মাঠে দাঁড়ালে স্মৃতির আকাশে রংধনু ওঠাটাই স্বাভাবিক।

আবাহনীর জার্সিতে প্রথম মৌসুমে ১১ গোল করেছিলেন ভারতীয় এই ফরোয়ার্ড। তবে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা তাঁকে বেশি মনে রেখেছে দুঃস্বপ্নের খলনায়ক হিসেবে। ১৯৯৫ মাদ্রাজ সাফ গেমস ফুটবলের ফাইনালে সাবিরের একমাত্র গোলেই ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। এর কয়েক বছর পরই আবাহনীর জার্সি গায়ে তোলা। বুট-জার্সি তুলে রেখেছেন অনেক আগেই। এখন পুরোদস্তুর কোচ হলেও ধানমন্ডির ক্লাবটি এখনো তাঁর হৃদয়ে জায়গা নিয়ে বসে আছে, ‘আবাহনী-চেন্নাই ম্যাচের দিন আমার হৃদয় পড়ে ছিল চেন্নাইয়ে, আর মাথা ছিল আবাহনীতে।’ এএফসি কাপের ম্যাচে দুই দল আহমেদাবাদে মুখোমুখি হয়েছিল গত ৩০ এপ্রিল।

সাবিরের জন্ম চেন্নাইয়ে। বেড়ে ওঠাও সেখানে। এখন নিজের শহরের দল চেন্নাইয়িনের সহকারী কোচ। অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলার জন্য দল নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। দলকে নিয়ে আজ অনুশীলন করতে এসেছিলেন স্মৃতিবিজড়িত ক্লাবের মাঠেই। এএফসি কাপের পরবর্তী ম্যাচের চেয়ে নিজের খেলোয়াড়ি জীবন নিয়েই কথা বললেন বেশি, ‘যেন নিজের বাড়িতেই ফিরেছি। কত স্মৃতি জড়িয়ে এখানে। এই শহর, এখানকার মানুষ, সবার কথা মনে পড়ছে। অনেক স্মৃতি এসে জড়ো হচ্ছে।’

আবাহনীতে খেলার সময় সাবিরের রুমমেট ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক মিডফিল্ডার ইকবাল হোসেন। সাবেক সতীর্থ ও বন্ধু আসবেন বলে আগে থেকেই মাঠে হাজির ছিলেন ইকবাল। অনেক দিন পর বন্ধুকে কাছে পেয়ে কোচের পেশাদারত্বের পোশাক ছেড়ে সাবির স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন। ইকবালকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘ও শুধু আমার বন্ধুই নয়, আমার বড় ভাই। ও সব সময় আমার সঙ্গে রুমমেট হিসেবে থাকত। ওর সঙ্গে আমার সব সময় যোগাযোগ থাকে।’

গত বছর ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এএফসি কাপের টিকিট পেয়েছে চেন্নাইয়িন। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে তারা। আহমেদাবাদে আবাহনীর বিপক্ষে তাদের জয়ের ব্যবধান ছিল ১-০ ব্যবধানের। সে ম্যাচে আত্মঘাতী গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। পরশু জয় না পেলেই এএফসি কাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের। ফলে ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর ছক কষছে তারা। অন্যদিকে ঢাকা থেকে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে যেতে চান সাবির, ‘আবাহনী খুবই ভালো দল। আমরা ওদের সব সময় সমীহ করি। আহমেদাবাদে যদিও জিতেছি, কিন্তু ওদের বিপক্ষে খেলাটা অত সহজ ছিল না। আমরা যথেষ্ট সতর্ক হয়ে খেলব। আশা করি আমরাই জিতব।’