রাগ করেছেন মেসি
লিভারপুলের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে অবিশ্বাস্যভাবে হেরে গেছে বার্সেলোনা। ম্যাচের প্রায় এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরও সে হার এখনো পোড়াচ্ছে বার্সেলোনাকে। লিগে ঘরের মাঠে গেটাফেকে ২-০ গোলে হারানোর পরও সে ক্ষত শুকায়নি এখনো।
২০১৭–১৮ মৌসুমে এএস রোমার বিপক্ষে তিন গোলের অগ্রগামিতা নিয়েও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল বার্সেলোনা। এ মৌসুমেও যে এমন কিছু হবে সেটা কে ভাবতে পেরেছিল? রোমা তবু একটি অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা পেয়েছিল, লিভারপুলের সেটাও ছিল না। আক্রমণভাগের মূল দুই খেলোয়াড় ছাড়া মাঠে নেমেও বার্সেলোনাকে অনায়াসে হারিয়ে দিয়েছে লিভারপুল।
বার্সেলোনার খেলোয়াড়েরা তবু লিগ জয়ের পর কোপা দেল রে জয়ের স্বপ্ন দেখে সে দুঃখ ভোলার চেষ্টা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গেটাফে ম্যাচ বুঝিয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা সমর্থকেরা অন্তত সে পথে হাঁটছেন না। সার্জিও বুসকেটসকেও দুয়ো দিয়েছেন কাতালান সমর্থকেরা। তবে মেসিও সমর্থকদের জবাব দিয়ে দিয়েছেন মাঠে। না, কোনো কথা বলেননি বা অঙ্গভঙ্গি করেননি। কিন্তু ম্যাচের পুরোটা সময় মুখ ভার করে ছিলেন মেসি, ম্যাচের শেষেও জয়ের হাসি দেখা যায়নি তাঁর মুখে।
মেসির এমন আচরণ অবশ্য নতুন নয়। গত মৌসুমগুলোতেও হতাশাজনক কোনো হারের পরের ম্যাচে মেসির এমন গম্ভীর মুখ দেখা গেছে। তবে এবারের ঘটনাটি একটু ভিন্ন। লিভারপুলের ম্যাচের পর দলের সঙ্গে বিমানবন্দরে যেতে পারেননি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বিমানবন্দরে গিয়ে বার্সেলোনা সমর্থকের তোপের মুখে পড়েছিলেন মেসি। দলের হারের দায় তো দিয়েছেনই, সে সঙ্গে লিভারপুলে ম্যাচ দেখতে যাওয়া সমর্থকদের উদ্দেশে তালি না দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাও করা হয়েছিল। এমন এক হারের পর দর্শকের এমন আচরণ ভালো লাগেনি তাঁর।
রোববারও দর্শকের ক্ষোভ টের পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে দুয়ো দিয়েছে ক্যাম্প ন্যু। এর মধ্যে সার্জিও বুসকেটসও ছিলেন। অথচ বার্সা একাডেমির এই খেলোয়াড়ের সমালোচনা সাধারণত শোনাই যায় না। দর্শকের এমন আচরণে বিরক্ত হয়ে মেসি তাই রোববার দলের গোল উদযাপন করেননি। এর আগে লুইস এনরিকে ও আন্দ্রে গোমেজের সমালোচনা করায়ও মেসি দলের গোল উদযাপন না করে প্রতিবাদ করেছিলেন।
লিভারপুলের বিপক্ষে প্রথম লেগের পর ফিলিপে কুতিনহোকে দুয়ো দিয়েছিল বার্সেলোনার সমর্থকেরা। তখনই একতার ডাক দিয়েছেন মেসি, ‘আমাদের সবাইকে একত্র থাকতে হবে, এটাই সময় আমাদের ভরসা দেওয়ার।’ কিন্তু দর্শকের কাছ থেকে তেমন কিছু দেখতে না পেয়ে মেসিও জবাব দিয়েছেন। রোববার গেটাফে ম্যাচের পর নিজের গোল উদযাপন করেননি। মাঠ ছাড়া আগেও স্বাগতিক দলের দর্শকের উদ্দেশে তালি দেননি, যেটা ফুটবলের নিয়মিত ঘটনা।
পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সমর্থকদের ওপর বেজায় রাগ করেছেন মেসি।