রান তাড়া করে জয়ের অভ্যাস গড়ে নিল বাংলাদেশ

ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা নিয়ে বাংলাদেশ দল। ছবি: টুইটার
ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা নিয়ে বাংলাদেশ দল। ছবি: টুইটার
>ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচেই রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজ তো দেখছেন? হাইস্কোরিং ম্যাচ কী দুর্দান্ত হতে পারে, তার পসরা সাজিয়ে বসেছে দুই দল; বিশেষ করে ইংল্যান্ড। টানা দুই ম্যাচে সাড়ে তিন শ ছুঁই ছুঁই স্কোর তাড়া করে জেতা চাট্টিখানি কথা নয়। ঘরের মাঠ হলেও ইংল্যান্ডে কী অবলীলায় তাড়া করল! ওদিকে পাকিস্তান চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আরেকটু হলে রান তাড়া করে নিজেদের জয়ের ইতিহাস লেখাত নতুন করে। ইংল্যান্ডের ৩৭৩ তাড়া করে দলটি হেরেছিল মাত্র ১২ রানের ব্যবধানে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইংল্যান্ডে এবার বিশ্বকাপে এমন রান উৎসবই হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ আগে ব্যাট করে তিন শ ছুঁই ছুঁই কিংবা তিন শর বেশি সংগ্রহ পেয়ে গেলে বাংলাদেশের জন্য তাড়া করা কতটা কঠিন হবে?

জবাব এখনই দেওয়া সম্ভব না। বিশ্বকাপ ২০১৯ শুরু হতে এখনো বেশ কিছুদিন বাকি। তবে নিকট অতীত দেখে আন্দাজ তো করাই যায় এবং তা বেশ ইতিবাচক। সদ্য শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের কথাই ধরুন। বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। আর এই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে ব্যাটিংয়ে কঠিনতম কাজটাই বারবার করে দেখিয়েছে মাশরাফির দল। সেটি রান তাড়া করে জয়। একবার-দুবার নয়, টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ যে চার ম্যাচ খেলেছে, সব কটিই জিতেছে রান তাড়া করে।

বাংলাদেশ দল নিয়ে প্রচলিত ধারণা হলো, চাপে ভেঙে পড়ে। রান তাড়া করায় এমনিতেই চাপ থাকে। আড়াই শ ছুঁই ছুঁই কিংবা তার ওপাশে রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার বহুবার ‘তাসের ঘর’-এর মতো ভেঙে পড়েছে। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজে দেখা গেল নতুন কিছু, আড়াই শর এপাশে কিংবা ওপাশের রান তাড়া করতে দলকে তেমন একটা বেগ পেতে হচ্ছে না।

প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৬১ রান তাড়া করে মাশরাফির দল জিতেছে ৮ উইকেটে, ৪০ বল হাতে রেখে। পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছে ২৪৭। বাংলাদেশ জিতেছে ৫ উইকেটে ১৬ বল হাতে রেখে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লক্ষ্যটা আরেকটু কঠিন ছিল। তিন শ ছুঁই ছুঁই (২৯৩)। বাংলাদেশ এ ম্যাচও জিতেছে ৬ উইকেটে এবং ৪২ বল হাতে রেখে। এরপর ফাইনাল এবং সেখানে লক্ষ্যটা আগের ম্যাচগুলোর চেয়ে কঠিন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ২৪ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ২১০। অর্থাৎ ওভারপ্রতি তুলতে হবে ৮.৭৫। যদি ৫০ ওভারে এই রানরেট বিবেচনা করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়াত প্রায় ৪৩৮!

এমন কিছু না হলেও বৃষ্টিস্নাত মাঠে ২৪ ওভারে ২১০ রান তাড়া করা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে রান তাড়া করে জয়কে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা বাংলাদেশ ফাইনালও জিতল কঠিন লক্ষ্যকে সহজ বানিয়ে। ৭ বল হাতে রেখে তুলে নেওয়া এই জয় যেন ‘লাকি সেভেন’-এর সমার্থক! ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এর আগে ছয় ফাইনালে হয়নি। সাত নম্বর ফাইনালে এসে ৭ বল হাতে রেখে পাওয়া জয় তো ‘লাকি সেভেন’-ই। রান তাড়া করে জয়ের এ অভ্যাসটা বাংলাদেশ দল এখন বিশ্বকাপে টেনে নিতে পারে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।