'ম্যানচেস্টার সিটি' হওয়া হলো না ঢাকা সিটির!

ঢাকা সিটি এফসি ক্লাবের একাদশ ও কর্মকর্তা। সংগৃহীত ছবি
ঢাকা সিটি এফসি ক্লাবের একাদশ ও কর্মকর্তা। সংগৃহীত ছবি
দেদার খরচ করে দল গঠন করেছে ঢাকা সিটি এফসি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এবার প্রিমিয়ার লিগে উঠতে পারেনি ঢাকা সিটি

ম্যানচেস্টার সিটির আদলে ক্লাবের নামকরণ করা হয় ঢাকা সিটি এফসি। শুধু নামেই চমক নয়, দেশের ফুটবলের প্রেক্ষাপটে লক্ষ্যটাও পেশাদার ক্লাবের মতো। ঘরোয়া ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের মতো আসরে প্রথম নাম লিখিয়েই কোটি টাকার ওপর খরচ করে দল গঠন করেছে তারা। স্বাভাবিকভাবেই মাঠে নামার আগেই দলের নাম ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য দিয়ে ফুটবল মহলের নজর কেড়ে নেয়। মাঠের খেলাতেও ছিল সেরার দৌড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্র্যাকচ্যুত হয়ে প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হওয়া হলো না ঢাকা সিটির।

দেশের ফুটবল ঢাকা সিটি একেবারেই নতুন। ফুটবলে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার আগ্রহ ও সামর্থ্য প্রকাশ করতে, সরাসরি তাদের চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ খেলার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। প্রিমিয়ারে লিগে উত্তীর্ণ হওয়ার লক্ষ্যে দলও গঠন করা হয়েছিল চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাজেট নিয়ে।

লিগের ১৩ রাউন্ড পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই ছিল ঢাকা সিটি। কিন্তু হুট করে সার্ভিসেস খেলোয়াড় হারানোর খেসারত দিয়ে লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়ে তারা। না হলে প্রথম বছরেই চমক দেখাতে পারত। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি নামকরণেও পাওয়া যেত কিছু সার্থকতা। তবে শুরুতে লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও ক্লাবটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আশা জাগানিয়া।

৩৫ জন খেলোয়াড়ের নাম নিবন্ধন করেছিল ঢাকা সিটি। চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে রেকর্ডই বটে! এর মধ্যে নয়জন ছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর। যাঁদের অধিকাংশই খেলতেন একাদশে। লিগের ১৩ রাউন্ড শেষে সার্ভিসেস খেলোয়াড়দের ফিরে যেতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের হারিয়ে টানা তিন ম্যাচ হেরে লড়াই থেকে ছিটকে গেছে দলটি। দলের খেলোয়াড়দের পেলে প্রিমিয়ার লিগে খেলা সম্ভব ছিল বলে মনে করেন সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জোহা, ‘পেশাদার ফুটবলের আদলে ৩৫ জন ফুটবলারের নাম নিবন্ধন করেছিলাম। সবকিছুই পেশাদার ফুটবলের আদলে করার চেষ্টা করেছি। সবকিছু ভালোই চলছিল। নৌবাহিনীর নয় ফুটবলার ও তিন কোচকে নিয়েছিলাম চুক্তিতে। ১৩ রাউন্ড শেষে নৌবাহিনী তাদের তাদের সব খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের ফেরত নেয়। এই ফুটবলাররাই ছিল আমাদের দলের মূল শক্তি। এরা চলে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত খারাপ অবস্থা। না হলে প্রিমিয়ার লিগে খেলার ভালো সম্ভাবনা ছিল আমাদের।’

বর্তমানে ১৯ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে তারা। লিগের শেষ ম্যাচটি ২২ মে। এরপর? এখানেই নিজেদের আলাদাভাবে প্রমাণ করেছে তারা। খেলোয়াড়দের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি থাকায় ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুশীলন চালিয়ে যাবে। যেন পরের লিগে পাওয়া যায় প্রত্যাশিত রেজাল্ট। একই সঙ্গে একাডেমিও গড়তে যাচ্ছে ঢাকা সিটি। এ জন্য ১০-১২ একর জমি খুঁজছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এক বছরের মধ্যেই একাডেমি শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, ‘৬০ জন খেলোয়াড় নিয়ে একাডেমি শুরু করতে চাই। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি আশা করি এক বছরের মধ্যেই একাডেমি শুরু করতে পারব। তিনজন বিদেশি কোচের সঙ্গে কথাবার্তাও প্রায় চূড়ান্ত।’

এমন আশাবাদ দেখান অনেকেই। দেখা যাক ঢাকা সিটি কথা রাখতে পারে কি না!