আবাহনীর বিপক্ষে 'ফাইনাল' জিতল বসুন্ধরা

শুধু ম্যাচ নয় শিরোপা জয়ের আনন্দও যেন পাচ্ছে বসুন্ধরা! ছবি: বাফুফে
শুধু ম্যাচ নয় শিরোপা জয়ের আনন্দও যেন পাচ্ছে বসুন্ধরা! ছবি: বাফুফে
>আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে বসুন্ধরা কিংস। শিরোপা দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেল নবাগত বসুন্ধরা

শেষ বাঁশি বাজার পর বসুন্ধরার খেলোয়াড়েরা একে অন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন যে যাঁর মতো উচ্ছ্বাস নিয়ে। একটু দূরেই আবাহনীর খেলোয়াড়েরা হতাশায় শুয়ে আছেন মাটিতে। দুই দলের ছবিটি জোড়া লাগালেই স্পষ্ট প্রিমিয়ার লিগের ভবিষ্যৎ চিত্র। অলিখিত ফাইনালে আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগ শিরোপা জয়ের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেল বসুন্ধরা। 

বসুন্ধরা যেন আগেই করে নিচ্ছে লিগ শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস। আর মামুনুল, সোহেল রানাদের শরীরী ভাষায় লিগ শিরোপা খোয়ানোর হতাশার ছবি। শিরোপার সুবাস ছড়ানো একমাত্র গোলটি করেছেন কিরগিজস্তানের মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুশবেকভ।

লিগে এখনো প্রায় প্রতিটি দলের বাকি আছে ১০ ম্যাচ। ভবিষ্যতে ঘটতে পারে অনেক কিছুই। কিন্তু আজকের ম্যাচটি ছিল শীর্ষে থাকা দুই দলের লড়াই। যে লড়াইয়ে জিতে শিরোপা দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন নবাগত বসুন্ধরার ফুটবলাররা। এই জয়ে ১৪ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে তারা। সমান ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী। দুই দলের পয়েন্টের ব্যবধান ৭। আজকের হারে ভাগ্যকে দুষতেই পারে আবাহনী। খেলার নিয়ন্ত্রণ ও মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ক্রসবারও। আর দৃষ্টিকটু গোল মিস তো ছিলই।

অলিখিত ফাইনালের চাপটা খেলোয়াড়দের ঘাড়ে চেপে বসেছিল শুরু থেকেই। পাসের পর পাসে মালা গেঁথে যেভাবে আক্রমণে উঠে অভ্যস্ত দুই দল, সে ছন্দটা উধাও। বরং শরীরনির্ভর খেলায় বেশি আগ্রহী ছিল তারা। প্রেস বক্সের বারান্দায় বসেও শোনা যাচ্ছিল দুই দলের খেলোয়াড়দের বুটে বুটে ঘর্ষণের শব্দ। খেলা থামাতে রেফারিকে বারবার বাজাতে হয়েছে বাঁশি। নেতিবাচক সবকিছু ছাপিয়ে বলের দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল আবাহনী। কিন্তু মাঝমাঠে ভিড় জমিয়ে আবাহনীকে গোলপোস্ট পর্যন্ত যেতে দেয়নি বসুন্ধরা।

৩৯ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বখতিয়ার দুশবেকভের দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে বখতিয়ারের শট আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুল সোহেলের হাত স্পর্শ হয়ে জালে। আনন্দে নেচে ওঠে পূর্ব গ্যালারিতে জড়ো হওয়া হাজারখানেক বসুন্ধরা সমর্থক।

দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচে নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল আবাহনী। কিন্তু গোলমুখে গিয়েই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন সানডে-বেলফোর্টরা। ৬০ মিনিটে গোলরক্ষক জিকোকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ সানডে। তিন মিনিট পরেই রায়হান হাসানের লম্বা থ্রো ইন থেকে সুযোগ পেয়েছিলেন জীবন। ব্যর্থ জাতীয় দলের স্ট্রাইকারও। আর শেষ দিকে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ গোলটি মিস করেছেন সানডে। গোলমুখ থেকেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার। স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতার দিনে আবাহনীর বাধা পোস্টও। শেষ বাঁশি বাজার আগে মামুনুলের কর্নার থেকে বেলফোর্টের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।

অথচ আজ বসুন্ধরাকে বাগে পেয়েছিল আবাহনী। ওয়ার্মআপে সেন্টারব্যাক নাসিরউদ্দীন চোট পাওয়ায় একাদশ থেকে ছিটকে যান। তাঁর বদলে সেন্টারব্যাকে খেলানো হয় কিরগিজ মিডফিল্ডার বখতিয়ারকে। বসুন্ধরার স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের ৪-৩-৩ ফরমেশনে প্রথাগত ডিফেন্ডার শুধু সেন্টারব্যাক নুরুল নাঈম ফয়সাল। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসকে প্রথমবারের মতো খেলালেন রাইট ব্যাক হিসেবে। এমন জোড়াতালির রক্ষণভাগেরও কিনা ভালো পরীক্ষা নিতে পারেনি সানডে-বেলফোর্ট জুটি।