রোনালদোদের কোচ হওয়ার দৌড়ে কে কে আছেন?

জুভেন্টাসের ডাগআউটে আর থাকছেন না অ্যালেগ্রি। ছবি: এএফপি
জুভেন্টাসের ডাগআউটে আর থাকছেন না অ্যালেগ্রি। ছবি: এএফপি
>জুভেন্টাসের কোচ হিসেবে আর থাকছেন না ম্যাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। সামনের মৌসুম থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের গুরু হিসেবে জুভেন্টাসের কোচ হিসেবে কাকে দেখা যাবে? জুভেন্টাসের কর্তাব্যক্তিদের মাথায় আছে বেশ কিছু নাম

ঘোষণা এসেছে তিন দিন আগে। সাফল্যবিধৌত পাঁচ বছর কাটানোর পর জুভেন্টাসের দায়িত্ব ছাড়ছেন ইতালিয়ান কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। আগামী মৌসুম থেকে নতুন কোচের অধীনে খেলবে তুরিনের বুড়িরা। নতুন কোচ হিসেবে কাকে নিয়োগ দেবে জুভেন্টাসের মালিকপক্ষ? এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে বাতাসে ভাসছে কিছু নাম। কারা তারা? আসুন দেখে নেওয়া যাক।

পেপ গার্দিওলা
নতুন কোচ হিসেবে জুভেন্টাসের সভাপতি আন্দ্রেয়া আগনেল্লির প্রথম পছন্দ ম্যানচেস্টার সিটির বর্তমান কোচ পেপ গার্দিওলা। যদিও গার্দিওলা নিজেই ঘটা করে ঘোষণা দিয়েছেন, সিটি ছাড়ার কোনো ইচ্ছাই নেই তাঁর। সিটির হয়ে সদ্য ঘরোয়া ট্রেবল জিতেছেন। সামনে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার আশা করছেন দলটাকে নিয়ে। কাজ এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু তাতে আগনেল্লির কি? আগনেল্লি পেপ গার্দিওলা বলতে পাগল। এমনকি এমনটাও শোনা যাচ্ছে, গার্দিওলা এখনই না আসতে চাইলে দরকার হলে এক বছর গার্দিওলার জন্য অপেক্ষা করতে রাজি জুভেন্টাস। এই এক বছরে অন্য কোনো কোচ এনে আপাতত কাজ চালাবে তারা!

দিদিয়ের দেশম
ফ্রান্সের হয়ে সদ্য বিশ্বকাপ জেতা এই কোচ খেলোয়াড় হিসেবে জুভেন্টাসে খেলে গেছেন। সুতরাং, জুভেন্টাস কেমন, ভালোই জানেন। জুভেন্টাসের হয়ে খেলোয়াড় হিসেবে সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছিলেন। এখন কি তবে ম্যানেজার হিসেবে জেতার পালা? সময়ই বলে দেবে সেটা। কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে দেশমের চুক্তি আছে ২০২০ সালের ইউরো পর্যন্ত। চুক্তি ভেঙে দেশম জুভেন্টাসে চলে আসবেন, এমন ভাবাটা একটু কষ্টের।

আন্তোনিও কন্তে
চেলসির দায়িত্ব ছাড়ার পর গত এক বছর ধরে অন্য কোনো দলের দায়িত্ব নেননি এই কোচ। জুভেন্টাসের পুনর্জাগরণের শুরু হয়েছিল এই কন্তের হাত ধরেই। জুভেন্টাসকে টানা তিনবার লিগ জিতিয়েছিলেন তিনি। কন্তে যাওয়ার পরেই জুভেন্টাসের কোচ হয়েছিলেন অ্যালেগ্রি। নিজেদের সাবেক কোচকে আবারও ফিরিয়ে আনতে পারে জুভরা, এমনটাই শোনা যাচ্ছে।

মরিসিও পচেত্তিনো
টটেনহাম হটস্পারের আর্জেন্টাইন ম্যানেজার ক্যারিয়ারের সোনালি সময় কাটাচ্ছেন। দলকে নিয়ে গেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে। এর মধ্যেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, টটেনহামকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতালে ক্লাব ছাড়তে পারেন। তাঁর এ কথা শুনে আশাবাদী হতে পারে জুভেন্টাস। টটেনহাম শিরোপা জিতুক আর না জিতুক, জুভেন্টাসের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের ম্যানেজার হওয়ার লোভ পচেত্তিনো কতটুকু সামলাতে পারেন, দেখার বিষয়। যদিও এর আগে রিয়াল মাদ্রিদ পচেত্তিনোকে ম্যানেজার হিসেবে চেয়েছিল, পচেত্তিনোই যাননি। টটেনহামের সঙ্গে পচেত্তিনোর চুক্তি আছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত।

সিমোনে ইনজাঘি
খেলোয়াড়ি জীবনে বড়ভাই ‘সুপার পিপ্পো’ ফিলিপ্পো ইনজাঘিকে পেছনে ফেলতে না পারলেও ম্যানেজার হিসেবে বেশ পেরেছেন সিমোনে ইনজাঘি। গত কয়েক মৌসুম ধরে লাৎসিওকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলানো এই কোচ সম্প্রতি লাৎসিওকে জিতিয়েছেন কোপা ইতালিয়া। আর এতেই নজরে পড়েছেন জুভেন্টাসের। লুইস আলবার্তো, সার্গেহ মিলিঙ্কোভিচ-সাভিচ, হোয়াকিন কোরেয়াসহ বেশ কিছু তরুণ খেলোয়াড়কে গড়ে তোলা ইনজাঘির সুনাম আছে প্রতিভা ঠিকভাবে পরিচর্যা করার।

ইউসেবিও ডি ফ্রান্সেসকো
সিমোনে ইনজাঘির মতো ইউসেবিও ডি ফ্রান্সেসকোও তরুণ প্রতিভা পরিচর্যা করার ব্যাপারে পটু। সাসসুয়োলোতে দু’বছর আগে আলো ছড়িয়ে নজরে এসেছিলেন রোমার। গত বছর চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনাকে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে অবিশ্বাস্যভাবে বিদায় করে দেওয়ার নেপথ্যের কারিগর ছিলেন এই ডি ফ্রান্সেসকো। তাঁর অধীনে বেশ কিছু খেলোয়াড় খ্যাতি পেয়েছেন, যেমন—লরেঞ্জো পেলেগ্রিনি, চেঙ্গিজ উনদের, নিকোলো জানিওলো, কস্টাস মানোলাস প্রমুখ। এ মৌসুমে রোমা তেমন ভালো করতে পারেনি দেখে ছাঁটাই হয়েছেন ডি ফ্রান্সেসকো। বেকারই আছেন এখন।

হোসে মরিনহো
গত ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচের পদ থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর ফুটবল চ্যানেলে পণ্ডিতি করেই দিন যাচ্ছে মরিনহোর। এখনো কোনো ক্লাবের দায়িত্ব নেননি। তবে ঘোষণা দিয়েছেন, সামনের মৌসুমে কোনো না কোনো ক্লাবের দায়িত্ব নেবেন। সে দলটা কি জুভেন্টাস হবে? বলা যাচ্ছে না সেটা। এর আগে ইন্টার মিলানের হয়ে ট্রেবল জেতা এই কোচ জুভেন্টাসের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক ভালো রাখেননি। জুভেন্টাসের সমর্থকেরা এখনো তাঁকে সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু যে চেলসির ম্যানেজার হিসেবে দুবার দায়িত্ব পালন করার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার হতে পারে, তাঁর পক্ষে জুভেন্টাসের দায়িত্ব নিতে পারা কি বেশি আশ্চর্যের কিছু?