রিয়াল নাকি নেইমার, কার উদ্দেশে এমবাপ্পের বার্তা?

ফ্রেঞ্চ লিগের সেরার পুরস্কার হাতে কীসের ইঙ্গিত দিলেন এমবাপ্পে? ছবি: এএফপি
ফ্রেঞ্চ লিগের সেরার পুরস্কার হাতে কীসের ইঙ্গিত দিলেন এমবাপ্পে? ছবি: এএফপি

ফ্রেঞ্চ লিগের যত পুরস্কার আছে সবই বুঝে নেওয়ার রাত ছিল রোববার। লিগের সেরা খেলোয়াড় ও তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার বুঝে নিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। সতীর্থের এমন উদ্‌যাপনের রাতটা স্বচক্ষে দেখতে আসেননি নেইমার। আর সে সুযোগটা পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগালেন এমবাপ্পে। এক বক্তৃতায় সবাইকে বাধ্য করলেন নড়েচড়ে বসতে।

নেইমারকে মূল তারকা ও এমবাপ্পেকে পার্শ্ব তারকা বানানোর পরিকল্পনা নিয়ে দুই বছর আগে দলবদল করেছিল পিএসজি। রিয়াল মাদ্রিদের রোনালদো-বেল জুটি কিংবা বার্সেলোনার মেসি-সুয়ারেজ জুটির পুনরাবৃত্তি বলা যায়। এ মৌসুমেই সব হিসাব পালটে দিয়েছেন এমবাপ্পে। বিশ্বকাপ জেতার পর এমনিতেই ফ্রান্সের মানুষের কাছে নেইমারের চেয়ে বড় তারকা হয়ে উঠেছিলেন, আর ক্লাবেও নেইমারকে ম্লান করে দিয়েছেন পারফরম্যান্সে।

এ মৌসুমে লিগে মাত্র ২৮ ম্যাচে ৩২ গোল করেছেন এমবাপ্পে। সব প্রতিযোগিতা মিলে ৩৮ গোল। এমন পারফরম্যান্সের পর ফ্রেঞ্চ লিগের সেরা খেলোয়াড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। পুরস্কার বুঝে নিতে নিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করে নিয়েছেন এমবাপ্পে, ‘লিগে এটা আমার চতুর্থ মৌসুম এবং অনেক মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতাই হয়েছে। প্রথমে মোনাকোর সঙ্গে ছিলাম এবং আমরা শিরোপা জিতেছি। এরপর আমি প্যারিসে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রকল্পের অংশ হয়েছি যেখানে আমি প্রথম বছরের পর মানাতে পেরেছি। এ মৌসুমে অবশ্যই কিছু হতাশা পেয়েছি কিন্তু এটা ফুটবলেরই অংশ। আমরা লিগ তো জিতেছি। আমি সতীর্থ, কোচ ও ক্লাবকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমি আমার ক্যারিয়ারের প্রথম বা দ্বিতীয় বাঁকে এসে হাজির হয়েছি।’

এরপরই বোমা ফাটিয়েছেন এমবাপ্পে, ‘পিএসজিতে আমি অনেক কিছু শিখেছি। মনে করি আরও বেশি দায়িত্ব নেওয়া উচিত আমার। আশা করি সেটা প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়েই হব, তাহলে খুবই ভালো হয়। অথবা নতুন কোনো প্রকল্পে, তবে আমি আপনাদের ধন্যবাদ দিতে চাই।’

এ কথা দিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটো ইঙ্গিত দিতে পারেন এমবাপ্পে। প্রথমত, রিয়াল মাদ্রিদ গত দুই মৌসুম ধরেই তাঁকে দলে টানতে চাইছে। জিনেদিন জিদানের অধীনে রিয়াল মাদ্রিদের পুনর্গঠনের অংশ হতে পারেন এমবাপ্পে। তাহলেই বেশি দায়িত্ব নেওয়ার কাজটি হয়ে যায় তাঁর। আর দ্বিতীয়ত, তাঁর এ বক্তব্য দিয়ে পিএসজির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন এমবাপ্পে। দ্বিগুণেরও বেশি বেতন পাচ্ছেন নেইমার, কিন্তু দলকে টানার দায়িত্বটা এমবাপ্পেকেই নিতে হচ্ছে। ক্লাবের প্রতি এমবাপ্পে তাই ইঙ্গিত দিয়ে রাখছেন, দায়িত্ব যদি নিতেই হয় তবে ঘোষণা করেই দেওয়া হোক। ক্লাব বলে দিক নেইমার নয়, এমবাপ্পেই পিএসজির মূল তারকা।

এমবাপ্পে যে কথাগুলো মুহূর্তের উত্তেজনায় বলেছেন তা–ও নয়। পুরস্কার বিতরণীর অনুষ্ঠানে সবাই উপস্থিত থাকবেন, সেটা জেনেই আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘আমি তাই বলেছি যা আমার বলার ছিল। আমার মতে এটাই সেরা সময় ছিল। আমি যখন কিছু বলি, আগে ভেবে নিই। যখন বার্তা দেওয়ার সুযোগ আসে, তখন সেটা নেওয়া উচিত। আমার ধারণা আমি সেটা নিয়েছি। আমি যদি এর চেয়ে বেশি বলি তাহলে বাড়াবাড়ি হয়ে যাব এবং আমি সে বার্তা দিতে চাই না।’