'ঐতিহাসিক' ফিফটির পরও জায়গা নিশ্চিত নয় মোসাদ্দেকের!

মোসাদ্দেক হোসেন, ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সেই ইনিংস খেলার পথে। ফাইল ছবি
মোসাদ্দেক হোসেন, ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সেই ইনিংস খেলার পথে। ফাইল ছবি
>গত ম্যাচেই অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছেন। তবু মোসাদ্দেক হোসেন জোর গলায় বলতে পারছেন না, একাদশে জায়গা তাঁর পাকা!

প্রস্তুতি ম্যাচের সুবিধা আছে। চাইলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১৫ জনকেই খেলানো চায়। বাংলাদেশ দল ভাবতে পারে, আসল খেলাতেও যদি এই সুবিধাটা থাকত! বাংলাদেশ পড়েছে মধুর সমস্যায়। রিজার্ভ বেঞ্চও নিজেদের দাবি সোচ্চার কণ্ঠে জানিয়ে রেখেছে। কিন্তু চারজনকে বাদ তো পড়তেই হবে। সেই বাদ পড়াদের তালিকায় থাকতে হতে পারে আগের ম্যাচেই দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক ফাইনাল জেতানো মোসাদ্দেক হোসেনও!

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ২৪ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলা মোসাদ্দেক বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের একাদশে ‘অটোমেটিক চয়েজ’ অন্তত নন। ত্রিদেশীয় সিরিজেই তিন ম্যাচে একাদশে ছিলেন না। দুই ম্যাচই খেলেছেন অন্যের অনুপস্থিতির সুযোগে। ফাইনাল হয়তো খেলাই হতো না, সাকিব আল হাসান যদি ফিট থাকতেন। সেই মোসাদ্দেক অবিশ্বাস্যভাবে ফাইনাল জিতিয়ে নায়ক বনে গেছেন। তার পরও কিন্তু জোর গলায় বলতে পারছেন না, ২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের একাদশে থাকবেন!

আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া ম্যাচে ব্যক্তিগত ক্ষতিটা হলো মোসাদ্দেকের। প্রস্তুতি ম্যাচে ১৫ জনকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলা যায় বলে আজ ব্যাটিংটা প্রত্যাশা করেছিলেন মোসাদ্দেক। ভেবেছিলেন, খেলা হলে নিজের দাবিটা আরও জোরেশোরে জানিয়ে রাখবেন। দূর ছাই, সেই ম্যাচই তো হলো না!

মোসাদ্দেক বলেছেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে হয়তো ব্যাটিংয়ের বেশি সুযোগ আসবে। আমি অবশ্যই চাই শেষ ম্যাচে যেভাবে খেলেছি, ওই রকম একটা ইনিংস যদি খেলতে পারি। দলকে যতটুকু সাহায্য করা যায়। নিজেকে প্রস্তুত রেখেই ক্রিকেট বিশ্বকাপে যেতে চাই। এই ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হলোই না! পরের ম্যাচে যদি সুযোগ পাই, অবশ্যই চেষ্টা করব নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার।’

মোসাদ্দেককে বাংলাদেশ আসলে মাহমুদউল্লাহর বিকল্প হিসেবেও তৈরি রাখতে চাইছে। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তাঁর বোলিংটাও বিশেষ বিশেষ দিকে দরকারি হয়ে উঠতে পারে। দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কার্ডিফেই তাঁর ৩ উইকেটের কীর্তি তো এখনো অনেকের চোখে ভাসে নিশ্চয়ই। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ এখনো বোলিং শুরু করেননি। দলের প্রয়োজনে ৪-৫ ওভার করে দেওয়ার ডাক পড়লে মোসাদ্দেক তৈরিই আছেন, ‘এই কন্ডিশনে বোলিংটা আসলে একটু কঠিন। খুব বেশি টার্ন হয় না, ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধাজনক বাউন্সে বল যায়। শুধু আমাদের নয়; সব দলেরই স্পিনারদের জন্য বিশ্বকাপের কন্ডিশন কঠিন হবে। তবে আমার মূল চেষ্টাটা থাকবে ব্যাটসম্যানদের রান যেন আটকে রাখতে পারি। যত কম রান দেওয়া যায়, প্রতিপক্ষের রানের চাকা যতটা আটকে ধরে রাখা যায়।’

সাকিব একাদশে ফিরলে তাঁর জায়গা অনেকটাই অনিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে হয়তো লড়াইটা হবে সাব্বির রহমানের বিপক্ষে। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শূন্য মেরে আউট হলে কী হবে, সাব্বিরের সেঞ্চুরি আছে আগের সিরিজেই, ডানেডিনে। সাব্বিরও জানেন, দুই ম্যাচে প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে না পারলে তাঁর জায়গা পাকা নয়। ৫ উইকেট নিয়েও বসে থাকতে হয়েছে আবু জায়েদকে। টানা দুই ফিফটির পর বিশ্রামে যেতে হয়েছে সৌম্যকে, তাঁর বদলে সুযোগ পাওয়া লিটন দাস সুযোগ পেয়েই আবার ৭৬ করেছেন। কিন্তু লিটনকে বাদ দিয়ে আবার সৌম্যকে দলে, সৌম্য ফিরেই ঝোড়ো এক ইনিংস ফাইনালে!

এই বাংলাদেশকেই তো চায় সবাই!