বিশ্বকাপে কতটা ভোগাবে বৃষ্টি?

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের মতো বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচে বৃষ্টি হানা দিতে পারে। ছবি: এএফপি
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের মতো বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি ম্যাচে বৃষ্টি হানা দিতে পারে। ছবি: এএফপি
>

গতকাল দুটো প্রস্তুতি ম্যাচে বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মূল পর্বেও বৃষ্টি ভালোই ভোগাবে দলগুলোকে। বৃষ্টির কারণে তাই ওলট-পালট হয়ে যেতে পারে অনেক ম্যাচের সম্ভাব্য ফল।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রস্তুতি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। তিনবার বৃষ্টিতে থামার পর পরিত্যক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচটিও। এর আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালও আকারে ছোট হয়ে এসেছিল বৃষ্টিতে। স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বকাপের মূল পর্বে বৃষ্টি দলগুলোকে কতটা ভোগাবে?

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, ক্রিকেট বিশ্বকাপের শুরুর দিকটাই বৃষ্টির কবলে পড়তে পারে। ৩০ ও ৩১ মে দুই দিনই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানাচ্ছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। জুনের প্রথম দুই দিনেও হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে, আবহাওয়াও কিছুটা ঠান্ডা থাকতে পারে।

তবে জুনের ৩ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত খেলার জন্য বেশ ভালো আবহাওয়াই পাবে দলগুলো। এই সময়ে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে বৃষ্টি হলেও ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। আগের সপ্তাহের তুলনায় তাপমাত্রাও বাড়বে বেশ খানিকটা। ফলে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াতেই একে অন্যের বিপক্ষে লড়াই করার সুযোগ পাবে দলগুলো।

জুনের মধ্যভাগে আবারও ব্রিটিশ আবহাওয়া তার খেলা দেখাতে পারে। ১০ জুন থেকে ২৩ জুনের মধ্যে হালকা বৃষ্টি থেকে শুরু করে কোনো কোনো শহরে বজ্রপাতসহ ঝড়ের আশঙ্কাও আছে। তবে বেশির ভাগ দিনই খেলার জন্য উপযোগী পরিবেশ থাকবে বলে জানাচ্ছে বিবিসির আবহাওয়া পূর্বাভাস। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রাও নেমে আসবে বেশ কিছুটা।

গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচও ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। ছবি: রয়টার্স
গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচও ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। ছবি: রয়টার্স

আর এই বৃষ্টিই বদলে দিতে পারে বিশ্বকাপের অনেক হিসাব-নিকাশ। ইংলিশ গ্রীষ্মে এমনিতেই বল কিছুটা সুইং করে থাকে। তার ওপর যদি বৃষ্টি হয় আর আকাশ খানিকটা মেঘলা থাকে, তাহলে উইকেট থেকে বেশ ভালোই সহায়তা পাবেন পেসাররা। আকাশে মেঘ থাকলে ইংলিশ উইকেটে কীভাবে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলতে পারেন বোলাররা, সেটি দুদিন আগেই দেখিয়েছেন কিউই পেসাররা। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট হিসেবে ধরা হচ্ছে যাদের, সেই ভারতের ব্যাটিং অর্ডারকে সুইং দিয়ে নাচিয়ে ছেড়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদিরা। অথচ ম্যাচের আগে খুব কম মানুষই ভাবতে পেরেছিলেন, তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও মাত্র ১৭৯ রানে গুটিয়ে যাবে ভারত। বৃষ্টি তাই যেকোনো ম্যাচেই ‘ফেবারিট তত্ত্ব’ পাল্টে দিতে পারে।

বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডও মাথায় রাখতে হবে দলগুলোকে। ম্যাচের যেকোনো মুহূর্তে বৃষ্টি এসে দলগুলোর পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারে। বৃষ্টির কারণে পরিবর্তিত লক্ষ্য কিছুটা বেড়ে গেলেও ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে পরে ব্যাট করা দলগুলোই তুলনামূলক সুবিধা পেয়ে থাকে। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে দলগুলো তাই বেশির ভাগ সময় টসে জিতে বোলিংয়ের দিকে ঝুঁকতে পারে। আর আগে ব্যাট করা দলগুলো উইকেট রক্ষা করে দ্রুত রান তোলার চাপে পড়ে যায় এসব ক্ষেত্রে। ডিএল পদ্ধতিতে যে উইকেট হাতে রাখার ব্যাপারটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।

বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞের মতে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ হবে রানপ্রসবা বিশ্বকাপ। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টি যদি বাগড়া দেয়, তাহলে ব্যাটসম্যানদের দাপটের পাশাপাশি বোলারদের বুনো উল্লাস দেখার প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে পারেন দর্শকেরা!