বিশ্বকাপেই বিদায় বলছেন যে পাঁচ তারকা

নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে পারবেন এই তারকারা?
নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে পারবেন এই তারকারা?
>

নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন পাঁচ দলের পাঁচ বড় তারকা। বিদায় নেওয়ার আগে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চটা কি রাঙাতে পারবেন তাঁরা?

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে নামছেন মোস্তাফিজুর রহমান, কাগিসো রাবাদাদের মতো অনেক তরুণ ক্রিকেটার। তেমনি শেষবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামবেন, এমন তারকা ক্রিকেটারও আছেন বেশ কয়েকজন। বিদায়ী বিশ্বকাপ খেলতে নামা পাঁচ ক্রিকেটারকে নিয়েই এই আয়োজন।

মাশরাফি বিন মুর্তজা
বিশ্বকাপ শেষে অবসর নেবেন কি না, সে ব্যাপারে এখনো খোলাসা করে কিছু বলেননি। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজা যে এই শেষবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছেন, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এই নিয়ে ক্যারিয়ারে চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন মাশরাফি, অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে ১৬ ম্যাচ খেলা মাশরাফি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে নিজের নামের প্রতি খুব একটা সুবিচার করতে পারেননি। ৩৬.০৬ গড়ে উইকেট পেয়েছেন মোটে ১৮টি। তবে রান দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালোই কিপটেমি দেখিয়েছেন। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৫-এরও কম। বিশ্বকাপে মাশরাফির সেরা বোলিং ২০০৭ বিশ্বকাপে। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৩৮ রানে ৪ উইকেট পেয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন মাশরাফি নিজের শেষ বিশ্বকাপে উইকেট সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই বাড়িয়ে নিতে চাইবেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

মহেন্দ্র সিং ধোনি
তাঁর অধিনায়কত্বেই ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। এই বিশ্বকাপে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অধিনায়কত্ব বিরাট কোহলির কাঁধে, কিন্তু মাঠে এখনো ভারতের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। উইকেটের পেছন থেকে বোলারদের টোটকা দেওয়া শুরু থেকে ফিল্ডিং ঠিক করা—সবেতেই কোহলিকে নিত্য সহায়তা করে চলেছেন ধোনি। নেতৃত্বগুণ তো আছেই, ব্যাট হাতেও ধোনির বিশ্বকাপের রেকর্ড দারুণ। ১৭ ইনিংসে ব্যাট করে ৪২.২৫ গড়ে ৫০৭ রান করেছেন ধোনি। স্ট্রাইক রেটটাও দারুণ, ৯১.১৯। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংসটাই বিশ্বকাপে তাঁর সেরা ইনিংস। এবার সেটাকে টপকাতে পারবেন?

লাসিথ মালিঙ্গা
বিশ্বকাপ ইতিহাসে নিজের নাম অমর করে রেখেছেন এই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মালিঙ্গা। ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে চার বলে চার উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন স্লিঙ্গিং অ্যাকশনের এই ফাস্ট বোলার। বিশ্বকাপ ইতিহাসে একমাত্র বোলার হিসেবে দুটি হ্যাটট্রিকও তাঁর। ২০০৭ বিশ্বকাপের পর ২০১১ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষেও হ্যাটট্রিক ছিল মালিঙ্গার। এই বিশ্বকাপে তৃতীয় হ্যাটট্রিক করতে চান, এমনটাও জানিয়েছেন। বিশ্বকাপে মাত্র ২১.১২ গড়ে ৪৩ উইকেট পেয়েছেন এই লঙ্কান পেসার। এই বিশ্বকাপে আর ৭টি উইকেট পেলে ইতিহাসের চতুর্থ বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও দেখাবেন নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে আসা মালিঙ্গা।

ক্রিস গেইল
এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন, এই বিশ্বকাপ শেষেই ওয়ানডে থেকে অবসরে যাবেন। নিজের শেষ বিশ্বকাপটা যে রাঙিয়ে রাখতে চাইবেন ক্রিস গেইল, তাতে আর সন্দেহ কোথায়! নিজেকে উদ্দীপ্ত করার মতো যথেষ্ট উপাদানও আছে গেইলের সামনে। কেবল একটি ছয় মারতে পারলেই ডি ভিলিয়ার্সকে টপকে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ছয়ের মালিক হবেন ‘ইউনিভার্স বস’। গেইলের সামনে মাইলফলক আছে আরও একটি। এই বিশ্বকাপে ২৫২ রান করতে পারলেই ব্রায়ান লারাকে টপকে ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক হবেন গেইল। বিশ্বকাপে গেইল অবশ্য ঠিক গেইলসুলভ ব্যাটিং করতে পারেননি। বিশ্বকাপে ২৬ ইনিংসে ব্যাট করে ৯৪৪ রান গেইলের, ৩৭.৭৬ গড়ের পাশে স্ট্রাইক রেট ৯১.১২। চারটি ফিফটির পাশাপাশি দুটি সেঞ্চুরিও আছে গেইলের। যার মধ্যে একটি বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।

ডেল স্টেইন
দীর্ঘদিন দলের পেস আক্রমণের দায়িত্ব সামলেছেন। এই বিশ্বকাপে খেলবেন বলে গত চার বছর বেছে বেছে ওয়ানডে খেলেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপ দিয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন ডেল স্টেইন। উইকেট সংখ্যা দেখলে বিশ্বকাপে স্টেইনের রেকর্ড অবশ্য আহামরি কিছু মনে হবে না। দুই বিশ্বকাপে স্টেইনের উইকেট ২৩টি। গড়ে ৫ ওভারে একটি করে উইকেট তুলেছেন, ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৪.৬৮ করে। চোটের জন্য বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুর দুই ম্যাচে খেলতে পারবেন না, তবে সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই নিজের শেষ বিশ্বকাপ রাঙিয়ে দিতে চাইবেন ‘স্টেইনগান’।