বাংলাদেশই চার নম্বর প্রশ্নের উত্তর দিল ভারতকে

>এবারের বিশ্বকাপে ভারতের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা ছিল চার নম্বরের ব্যাটসম্যান নিয়ে। গতকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক বিরাট কোহলির সে দুশ্চিন্তা কেটে গিয়েছে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয় নিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালো ভাবেই ঝালিয়ে নিয়েছে ভারত। প্রস্তুতি ম্যাচের জয় খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও দলের মধ্যে এনে দেয় স্বস্তি। তবে জয় ছাপিয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলির বড় পাওয়া একটি প্রশ্নের সমাধান। প্রশ্নটা চার নম্বর নিয়ে। কে খেলবে এই পজিশনে। বিজয় শংকর, নাকি লোকেশ রাহুল। কালকের ম্যাচে দলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন শংকর। আর সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করেছে রাহুলের সেঞ্চুরি। ম্যাচ শেষে তাই কোহলি অকপটে বলে দিতে পারেন, ‘রাহুলের সেঞ্চুরি ম্যাচের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক।’

এই ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ ছিল এই চার নম্বর জায়গাটি। প্রায় দুই বছর ধরে আম্বাতি রাইডুকে প্রস্তুত করার পর ভারত বিশ্বকাপে এসেছে তাঁকে ছাড়াই। এই পজিশনের দাবিদার রাহুল-শংকর ছাড়াও ছিলেন দিনেশ কার্তিক। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে সেই সমাধানই যেন দিয়ে দিলেন রাহুল। বিশ্বকাপের আগে অধিনায়কের কাছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারত!

রাহুলকে নিয়ে প্রশংসায় মেতেছেন সবাই। অধিনায়ক কোহলিও দিয়েছেন বড় সার্টিফিকেট, ‘ম্যাচে সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক চার নম্বরে রাহুলের ব্যাটিং করার ধরন। দলের অন্য সদস্যেরা ভালো করেই জানে কার ভূমিকা কী। সুতরাং এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, রাহুল রান পেয়েছে। সে খুবই ভালো খেলোয়াড়। সে স্কোরবোর্ডকে সচল রেখেছে এবং সবাই দেখেছে সে খুবই দক্ষতা সম্পন্ন খেলোয়াড়ের উদাহরণ।’

কার্ডিফে ব্যাট করতে নামার আগে রাহুলও নিশ্চয়ই চাপে ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটায় সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। ট্রেন্ট বোল্টের ইনসুইং বলে বোল্ড হওয়ার পর তাঁর অভিব্যক্তিতে হতাশার ছাপ ছিল স্পষ্ট। কাল ব্যর্থ হলে হয়তো একাদশে জায়গা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়তে হতো। সেটি হতে দেননি রাহুল। ৯৯ বলে ১০৮ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস খেলে সব অনিশ্চয়তা দূর করে দিয়েছেন। সাব্বির রহমানের বলে আউট হওয়ার আগে চার মেরেছেন ১২ টি, আর বল উড়িয়ে সীমানাছাড়া করেছেন ৪ বার। সবচেয়ে বড় কথা, ধোনির সঙ্গে তাঁর জুটিটা সামলে নিয়েছে ১০২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা, আর প্রথম ২০ ওভারে ধীর গতিতে রান তোলার ক্ষতিটাও।

রাহুলের জন্য এবারের বিশ্বকাপটা নানা দিক দিয়ে চ্যালেঞ্জের। করণ জোহরের অনুষ্ঠানে কফি খেতে গিয়ে কী ঝামেলাতেই না পড়েছিলেন। বেফাঁস কথা বলে জাতীয় দলের ক্যারিয়ারটাই যায় যায়! সেখান থেকে আইপিএলে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। না হলে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ দলে জায়গা করে নিতে পারতেন কি না, কে জানে! কিন্তু রাহুল শুধু ১৫ জনের দলে নয়, এবার একাদশেও নিজেকে খুঁজে পেতে পারেন। সর্বশেষ এই ইংল্যান্ডে এসেই নিষেধাজ্ঞার খাঁড়ায় পড়েছিলেন। দুটি ওয়ানডে খেলেই ফিরে যেতে হয়েছিল দেশে। রাহুলের এবার ক্যারিয়ারের নতুন এক অধ্যায় তৈরির পালা।

গতকাল চার নম্বরে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন কি না? ম্যাচ শেষে এমন প্রশ্নে কূটনৈতিক উত্তর দিয়েছেন রাহুল, ‘এটা দলীয় খেলা এবং যেকোনো জায়গায় ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। এই পর্যায়ে খেলা প্রত্যেকটা ব্যাটসম্যানকে চাপ নেওয়ার কৌশল জানতে হয়, সঙ্গে নিতে হয় দায়িত্বও।’