ফাইনালের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়বে ক্লপের?

শিরোপাটা এবার কি আসবে ক্লপের কাছে? ছবি: এএফপি
শিরোপাটা এবার কি আসবে ক্লপের কাছে? ছবি: এএফপি
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টাইয় চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও টটেনহাম। টটেনহামের দায়িত্বে থাকা কোচ মরিসিও পচেত্তিনো এর আগে কখনো কোনো শিরোপা জেতেননি। ওদিকে লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার টানা ছয় ফাইনালে হেরেছেন!

পাঁচ বছর পর এমন কোনো ফাইনাল দেখছে চ্যাম্পিয়নস লিগ। স্প্যানিশ কোনো দল ছাড়া সর্বশেষ ফাইনালের দেখা মিলেছিল ২০১৩ সালে। জার্মান দুই প্রতিপক্ষ মুখোমুখি হয়েছিল সেবার। কাকতালই হয়তো, পাঁচ বছর পর স্প্যানিশ দলগুলোর ব্যর্থ হওয়ার বছরেও প্রতিপক্ষ দুই দল একই লিগ থেকেই এসেছে।

কাকতালের শেষ এখানে হলেও চলত। ২০১৩ সালে ফাইনালে খেলেছিল বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। ডর্টমুন্ডের কোচ হিসেবে ডাগ আউটে ছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। এবারের অল ইংলিশ ফাইনালের অংশীদার লিভারপুলের ডাগ আউটেও আছেন ক্লপ।

মিল এখানেই থামলে খুশি হবেন লিভারপুলের সমর্থকেরা। কারণ, ২০১৩ সালের সে ফাইনালে পরাজিত দলে ছিলেন ক্লপ। শুধু সে ফাইনালই নয়। এর পরে কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনাল থেকেই জয় নিয়ে ফিরতে পারেননি ক্লপ। আগামীকাল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠে এ ধারা থামানোটা তাই তাঁর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্লপ যদিও ফাইনাল জিততে পারেন না, এ কথা মানতে রাজি নন। জার্মান কোচের চোখে ব্যাপারটা দৃষ্টিভঙ্গির, ‘এখন পর্যন্ত আমার যা ক্যারিয়ার, তাতে দুর্ভাগা বলব না। ২০১৭ সাল বাদে ২০১২ থেকে প্রতি বছর ফাইনাল খেলেছি (বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়)। আমি সম্ভবত সেমিফাইনাল জেতায় বিশ্ব রেকর্ড গড়েছি। আমি যদি বই লিখি তাহলে মনে হয় না কেউ কিনবে।’

আগের ফাইনালগুলোর ব্যর্থতার পরও এবার লিভারপুলকে অনেক আত্মবিশ্বাসী ক্লপ। গত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩-১ গোলে হারের স্মৃতি এখনো ভোলেননি কেউ। তবু জার্মান এই কোচ সবাইকে আশা দেখাচ্ছেন এবারের ফাইনাল নিয়ে, ‘আগের সব ফাইনালের সঙ্গে এবারের অনেক পার্থক্য। গত ছয় ফাইনালে হারের কারণ যদি আমি হই, তাহলে সবার দুশ্চিন্তার কারণ থাকত। গত বছর বিশ্বমানের এক গোল আর দুটি অদ্ভুত গোলের কাছে হেরেছি। সাধারণত অমন গোল আমরা খাই না।’

আত্মবিশ্বাসী হলেও মাঠের প্রতিপক্ষ টটেনহামকে শ্রদ্ধার চোখেই দেখছেন ক্লপ। আয়াক্সের মাঠে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে ফাইনালে এসেছে টটেনহাম। ক্লপ তাই দুর্দান্ত এক ফাইনালের অপেক্ষায় আছেন, ‘ফাইনালে আমরা দুটি পরিপূর্ণ ফুটবল দল খেলতেও নামব। পচ যা করছে তা আমি শ্রদ্ধা করি। সে যখন এসেছিল (টটেনহামে) তখন প্রতিভাবান একটা দল পেয়েছিল। তাঁর অধীনে ওরা যেভাবে উন্নতি করেছে সেটা খুবই দারুণ। এটা সত্যিকারের একটি ফুটবল ফাইনাল-দুই পক্ষকেই সেটা মানতে হবে।’

এবার লিগে দুইবার মুখোমুখি হয়ে দুবারই টটেনহামকে হারিয়েছে লিভারপুল। এ কারণে লিভারপুলকেই ফাইনালে এগিয়ে রাখা হচ্ছে। ক্লপ অবশ্য এমন ফাইনালের আগে কাউকেই এগিয়ে রাখতে চান না, ‘যদি টটেনহাম এগিয়ে আছে বলা হতো, আমি অবশ্যই রাগ করতাম। আমি জানি অনেকেই লিভারকে ফেবারিট বলছে, কারণ আমরা লিগে বেশি পয়েন্ট পেয়েছি। কিন্তু টটেনহামের সঙ্গে আমাদের ম্যাচ দুটি যদি দেখেন, দুটির ব্যবধানই মাত্র ২-১ ছিল। ম্যাচে তাই কেউই এগিয়ে নেই।’

কাকতাল দিয়ে লেখা শুরু হয়েছে, সেখানেই শেষ হতে যাচ্ছে। ক্লপই মনে করিয়ে দিলেন এ মৌসুমে লিগে টটেনহামের সঙ্গে তাদের ফল দুই ম্যাচেই এক ছিল। ২০১৩ সালেও বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে লিগের দুই ম্যাচেই একই ফল পেয়েছিল ক্লপের ডর্টমুন্ড (১-১)। এত সব কাকতাল উড়িয়ে দিয়ে কাল জয় পাবেন তো ক্লপ?