ভালো খেললেই হয় না, ভাগ্যও লাগে: মাশরাফি

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে ভাগ্য সহায় আছে বলে মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ে ভাগ্য সহায় আছে বলে মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি
>দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ রানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। দলের সবার পেশাদারি পারফরম্যান্স তো ছিলই, সে সঙ্গে ভাগ্যও সহায় ছিল বলে জয় এসেছে বলে মনে করেন মাশরাফি

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু। তাই ম্যাচের ভুল-ত্রুটির দিকে তাকিয়ে সময় নষ্ট করার মতো ‘সময়’ হয়তো কারও নেই। অথচ গতকালের ম্যাচে ভ্রু কুঁচকানোর মতো দৃশ্যও ছিল বেশ কয়েকটি। ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ক্যাচ মিস ও রানআউট করার সুযোগ নষ্ট করার মতো ভুল তো ছিলই। সঙ্গে আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের হাওয়ায় ওড়ানো বল বারবার ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ পড়তে দেখে অনেকেই বলছিলেন, ভাগ্য মনে হয় বাংলাদেশের সঙ্গে নেই।

খেলায় ভাগ্য প্রসঙ্গ কথার কথা নয় কখনোই। জয়-পরাজয়ে ভাগ্য কতটুকু প্রভাব ফেলে বা ফেলে কি না, সে তর্কে যাওয়ার বিপদেও যাওয়ার ইচ্ছা নেই। কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজা ভাগ্যে বিশ্বাস রাখেন এবং ভাগ্য শেষ পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে ছিল বলেই গতকাল দল জয় পেয়েছেন বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

গতকাল টিভির সামনে যাঁরা বসেছিলেন, নিশ্চয় অনেকবারই তাঁদের মুখ থেকে বের হয়েছে ‘উহুঁ’। ওভালের গ্যালারি থেকে ভেসে এসেছে আফসোসের ধ্বনি-‘ওহ...!’ সাকিব আল হাসানের বলে মিড অফে ডেভিড মিলারের ক্যাচ ফেললেন সৌম্য সরকার। এর পরে ৩৪তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আপার কাট করেছিলেন মিলার। থার্ডম্যানে একটু দেরিতে সাড়া দেওয়ায় বলটা হাতে জমাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। মিলারকে শেষ পর্যন্ত আউট করেছেন মোস্তাফিজই। তবে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ যদি ক্যাচ ঠিকঠাক হাতে জমাতে পারতেন, মিলারের ওভাবে শঙ্কা হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া হয় না। ক্যাচ হাতছাড়া, অন্তত তিনটি রানআউট হাতছাড়া—বারবার সুযোগ হাতছাড়ার আফসোসে পুড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।

শেষ পর্যন্ত এসব হতাশা মধুর স্মৃতি হয়েই রইল বাংলাদেশের কাছে। যাবতীয় ‘দুর্ভাগ্য’ ফুৎকারে উড়ে গেল মোস্তাফিজ, সাকিবদের পেশাদারি পারফরম্যান্সের কাছে। ওভালকে ‘লাল-সবুজ’ রঙের আঁধার বানিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে শুভসূচনাটা হয়ে গেল বাংলাদেশের। ম্যাচ শেষেও মাশরাফির গলায় বারবার উচ্চারিত হলো ‘লাকি’ শব্দ, ‘আমার জায়গায় অন্য কোনো অধিনায়ক থাকলে জয়কে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করতে পারতেন। তবে আমি ভাগ্যে বিশ্বাসী। আমাদের মতো পরিকল্পনা অন্য দলগুলোও করে। কিন্তু সবার পরিকল্পনা কাজে আসে না। সুতরাং সেখানে ভাগ্য সহায় হতে হয়। আপনি যদি টুর্নামেন্টে সেরা ফলাফল চান, অবশ্যই সঠিক সময়ে ভাগ্য সহায় হতে হবে।’

ভাগ্যের পরশের একটি উদাহরণও টেনেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মিরাজের বলে ফাফ ডু প্লেসিসের বোল্ড হওয়ায় ভাগ্যের সহায় দেখছেন মাশরাফি, ‘যদি ধরেন পুরো ম্যাচে যে বলগুলো ঘুরেছে, সব চেয়ে ভাগ্যপ্রসূত ঘূর্ণি ছিল ফাফ ডু প্লেসির বোল্ড হওয়ার বলে। আমি ওইটাই বলতে চেয়েছি, এই ধরনের টুর্নামেন্টে শুধু ভালো খেললে হবে না; ভাগ্যও সহায় হতে হবে।’