মাঠে নামার সময় রবিউলকে যা বলেছিলেন জেমি

গতকাল বাংলাদেশের জয়ের নায়ক রবিউল হাসান ও বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। ছবি: বাফুফে
গতকাল বাংলাদেশের জয়ের নায়ক রবিউল হাসান ও বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। ছবি: বাফুফে
রবিউল হাসানের একমাত্র গোলে কাল বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রাক-বাছাইয়ে লাওসকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই নিয়ে টানা দুই ম্যাচে বদলি নেমে বাংলাদেশকে জেতালেন এই মিডফিল্ডার। প্রথম আলোকে শোনালেন বদলি নেমে গোল করার পেছনের গল্প।

সাদা চোখে একটা গোলই তো। কিন্তু কাল রবিউল হাসানের গোলটির মাহাত্ম্য অনেক। এই গোলেই যে গতকাল লাওসকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রাক-বাছাইপর্বের প্রথম লেগে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই রবিউলের গোলেই গত মার্চে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে নমপেনে প্রীতি ম্যাচ জিতেছিল জেমি ডে’র দল। টানা দুটি ম্যাচে, তা–ও আবার বিদেশের মাটিতে গোল করে দেশকে জেতালেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। কাল লাওসের বিপক্ষে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমে গোল করেছিলেন। সেই গোলের পেছনের গল্পটা কিন্তু দারুণ।

বছরখানেক আগেও বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ম্যাচ মানেই অবধারিত হার। কিন্তু ইংলিশ কোচ জেমি ডের অধীনে সেই ধারাটা বদলে যেতে শুরু করেছে। সবশেষ দুটি জয়ই বিদেশের মাটিতে। দুটি ম্যাচেই জয়ের গোল রবিউলের। মজার ব্যাপার হলো, দুই ম্যাচেই বদলি হিসেবে নেমে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন আরামবাগের এই মিডফিল্ডার।

ড্রয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে জেমির দারুণ অস্ত্র হয়ে উঠেছেন বোধ হয় রবিউল। কাল ম্যাচের ৫৫ মিনিটে আরামবাগ ক্লাবের সতীর্থ আরিফুর রহমানের বদলি হিসেবে পাঠানো হয়েছিল এই মিডফিল্ডারকে। গোলের রাস্তা খুঁজে নিতে সময় নিয়েছেন ১৬ মিনিট। জামাল ভূঁইয়ার এরিয়াল পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লাওসের ডিফেন্ডারকে ইনসাইড কাটে ঘোল খাইয়ে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে জালে। ভিয়েনতিয়েন জাতীয় স্টেডিয়ামে বলটি যখন জালে জড়াল, বাংলাদেশের আকাশে তখন বর্ণিল আবির। হ্যাঁ, উৎসবের আবির!

বদলি নেমে সাধারণত খাপ খাইয়ে নিতে একটু কষ্ট হয়। সেখানে টানা দুই আন্তর্জাতিক ম্যাচে বদলি নেমেই গোল। মাঠে ঢোকার আগে তাঁকে কোচ কী বলেছিলেন? শুনুন রবিউলের মুখ থেকেই, ‘কোচ বলেছিলেন, তুমি প্রথম একাদশে খেলার যোগ্য। কিন্তু তোমাকে যদি বদলি হিসেবে রাখি কারণ এটা জানি যে তুমি পরে নেমেও ভালো করবে। আমার বিশ্বাস তুমি মাঠে নামার পর দলের খেলার চেহারা বদলে যাবে।’

বদলি ফুটবলারের পায়ে গোল দেখা যায় অহরহ। একসময় আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের ‘সুপার সাব’ ছিলেন শাহাজউদ্দিন টিপু। ‘সুপার সাব’ শব্দটার পেছনে কিছু ট্যাকটিক্যাল বিষয় থাকে। এ বিষয়টি আরামবাগ ক্লাবের কোচ মারুফুল হকের কাছ থেকেই শেখা বলে জানান রবিউল, ‘রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকলেও খেলার শুরু থেকেই একাদশের খেলোয়াড়ের মতো তৎপর থাকতে হয়। অপেক্ষায় থাকতে হয় মাঠে নামার। বেঞ্চে বসে থাকা অবস্থায় মনে হচ্ছিল আমি মাঠে খেলছি। এই বিষয়টা মারুফ স্যার (আরামবাগের কোচ) আমাদের শিখিয়েছেন।’