ভারতের কাছে যেখানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া

পান্ডিয়ার ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটি ভারতকে দেখিয়েছে জয়ের পথ। ছবি: রয়টার্স
পান্ডিয়ার ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটি ভারতকে দেখিয়েছে জয়ের পথ। ছবি: রয়টার্স
শিখর ধাওয়ানকে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু চারে নেমে ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে হার্দিক পান্ডিয়াই অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছেন।

‘ক্ল্যাসিক্যাল’ ওয়ানডে ইনিংস বলতে যা বোঝায়, গতকাল ওভালে ঠিক সেটিই খেলেছে ভারত। শুরুটা করেছে দেখেশুনে, এরপর নিখাদ ক্রিকেটীয় সব শটে রান করেছে দ্রুতগতিতে। দুই ওপেনার ভালো শুরু এনে দিয়েছেন, একজন সেঞ্চুরিও করেছেন। কিন্তু ম্যাচটা অস্ট্রেলিয়ার নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বটা হার্দিক পান্ডিয়ার। তাঁর ঝোড়ো ইনিংসের কারণেই যে ৩৫০ ছাড়ানো সংগ্রহ দাঁড় করাতে পেরেছে ভারত।

সেঞ্চুরি করে শিখর ধাওয়ান যখন আউট হলেন, ভারতের রান তখন ৩৭ ওভারে ২ উইকেটে ২২০। বড় রানের হাতছানি ছিল, কিন্তু সেটির জন্য কাউকে না কাউকে ঝোড়ো ইনিংস খেলতে হতো। কাজটি করার জন্য ভারত দলে হার্দিক পান্ডিয়াই ছিলেন সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি। নিজের কাজটা কী দারুণভাবেই না করেছেন এই অলরাউন্ডার! লোকেশ রাহুলের বদলে চারে নেমে খেলেছেন ২৭ বলে ৪৮ রানের দারুণ একটি ইনিংস। পান্ডিয়ার এই ইনিংসটিই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দিয়েছে দুই দলের মধ্যে।

ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্বীকার করে নিয়েছেন, পান্ডিয়া ভারতকে ৩০টি রান অতিরিক্ত এনে দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা ক্রিকেটার মাইকেল হাসিও বলেছেন, সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তিকেই ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে ভারত। শেষ দিকে পান্ডিয়া অমন ঝড় না তুললে ভারতের রানটা আটকে যেতে পারত ৩২০-৩৩০ এর মধ্যে। ম্যাচের ফলটাও তখন হতে পারত অন্যরকম।

সুযোগ যে পান্ডিয়া দেননি, সেটিও নয়। রানের খাতা খোলার আগেই তাঁকে ফেরাতে পারত অস্ট্রেলিয়া, কিন্তু নাথান কোল্টার-নাইলের বলে উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন অ্যালেক্স ক্যারি। এই মিসের মাশুলই শেষ পর্যন্ত দিতে হয়েছে তাদের।

ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর ‘লাক ইনডেক্স’ও বলছে, পান্ডিয়ার ওই ক্যাচ না ফেললে আরও ২৮ রান কম হতে পারত ভারতের। নতুন জীবন পাওয়ার পর পান্ডিয়া কত বল খেলেছেন, তাঁর পরে ব্যাটিংয়ে নেমে কে কত বলে কত রান করেছেন—এসব হিসেব করে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে ‘লাক ইনডেক্স’। ক্রিকইনফোর তথ্য অনুযায়ী, ক্যাচ ছাড়ার পর পান্ডিয়া যে ২৬ বল খেলেছেন, পান্ডিয়া আউট হয়ে গেলে সেই ২৬ বলে ভারত তুলতে পারত ২০ রান। অথচ সেখানে পান্ডিয়া করে দিয়ে গেছেন ৪৮ রান। অতিরিক্ত এই ২৮ রানই ভারতকে ম্যাচে এগিয়ে দিয়েছে।

দল যত শক্তিশালীই হোক না কেন, ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচে ৩৫০ এর বেশি রান তাড়া করে জেতাটা সব সময়ই কঠিন। ৩৫৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তবুও ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত লড়েছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। ৩১৬ রান করে শেষ পর্যন্ত হেরেছে ৩৬ রানে। সময়মতো পান্ডিয়াকে ফেরাতে পারলে ম্যাচের ফল তাই অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আসতেও পারত।