চাঁদে লোক পাঠাতে পারি, রিজার্ভ ডে রাখতে পারি না!

রিজার্ড ডে না থাকায় বিরক্ত বাংলাদেশ কোচ। ছবি: প্রথম আলো
রিজার্ড ডে না থাকায় বিরক্ত বাংলাদেশ কোচ। ছবি: প্রথম আলো

ব্রিস্টলের বৃষ্টি বড় ‘ক্ষতি’ই করল বাংলাদেশকে। ক্ষতি বলতে বাংলাদেশ চেয়েছিল ম্যাচটা জিততে। বলতে পারেন, খেললেই যে জিতত, সেটির নিশ্চয়তা কী? গত কিছুদিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ডই আসলে অনুপ্রাণিত করছিল মাশরাফিদের। কিন্তু ব্রিস্টলের বৃষ্টি সে আশায় আক্ষরিক অর্থে জল ঢেলে দিল!

শুধু ব্রিস্টলেই নয়, বৃষ্টিবাধায় ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে কাল সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচও। এখন পর্যন্ত ১৬টি ম্যাচের ৩টি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে, যেটি একটি রেকর্ডও। এবারের আগে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে ১৯৯২ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে—দুটি করে। অথচ ব্রিস্টলে পাঁচ দিনেই ভেসে গেছে দুটি ম্যাচ! মাঠের খেলায় নতুন রেকর্ড খুব বেশি না হলেও বৃষ্টি পরিত্যক্ত হওয়ার দিক দিয়ে এখনই রেকর্ড করে বসেছে ২০১৯ বিশ্বকাপ। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সামনে আরও কিছু ম্যাচ! আবহাওয়ার পূর্বাভাস কি আইসিসি কিংবা ইসিবির অজানা?

জানাই যদি থাকবে কেন তবে এত বড় লম্বা টুর্নামেন্টের লিগ পর্বে রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি? শুধু সেমিফাইনাল আর ফাইনালের জন্য রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে। বৃষ্টিতে এভাবে ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় ভীষণ হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, ‘এটা সব দলের জন্যই হতাশার। মাঠে এসে খেলতে না পারাটা অবশ্যই হতাশার।’ বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস অট্টহাসি দিয়ে দারুণ এক খোঁচাই দিলেন আয়োজকদের, ‘আমরা চাঁদে লোক পাঠাতে পারি, কেন রিজার্ভ ডে রাখতে পারি না, যখন টুর্নামেন্টটা এত লম্বা।’

যে ম্যাচে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ২ পয়েন্টের, বাংলাদেশ সেখানে পেল ১ পয়েন্ট। শ্রীলঙ্কা এই ব্রিস্টলে বসে বসে ২ পয়েন্ট পেয়ে গেল। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ—দুটি দলের সঙ্গেই তারা পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। টানা দুটি ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় একটা ম্যাচ জেতার সমানই পয়েন্ট যাওয়ায় শ্রীলঙ্কা যে খুশি, দিমুথ করুনারত্নের হাসিমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক বললেন, ‘দল হিসেবে আমরা বলব, এখানে খেলতে এসেছি। কখনো কখনো যদি পয়েন্ট ভাগাভাগি করেন, সেটা ভালো। তবে আমরা ফ্রি ফ্রি পয়েন্ট পেতে চাই না। আমরা খেলে জিতে পয়েন্ট পেতে চাই। এটাই আমি ভাবছি। দুর্ভাগ্য বৃষ্টি বাধা দিয়েছে। সব জায়গায় আসলে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, আমরা পয়েন্ট পেয়ে খুশি। এখন চোখ রাখছি সামনে।’

দুই দলের সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেসবক্সে ফেরার পথে দেখা হাবিবুল বাশারের সঙ্গে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পয়েন্ট হাতছাড়ার আফসোস যখন বাংলাদেশ দর্শকদের, তিনি বিষয়টি দেখছেন ভিন্ন চোখে, ‘আপনি যখন সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হবে, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পারব না—এ ধারণা থেকেই বের হতে হবে। সেমিফাইনাল খেলতে হলে আপনাকে যেকোনো দলকেই হারানোর লক্ষ্য থাকতে হবে। আজ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে, কী আর করা! সামনে যে ম্যাচই খেলতে নামবে, জেতার লক্ষ্য নিয়েই নামবে দল।’

হাবিবুলের কথাটা দলের সবার কথারই প্রতিধ্বনি।