টিকিটাকা খেলে হারের চেয়ে খারাপ খেলে লক্ষ্য পূরণ ভালো

দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: প্রথম আলো
দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছে ফুটবল দল। ছবি: প্রথম আলো
বিশ্বকাপ প্রাক্‌–বাছাইপর্বে আজ লাওসের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ। প্রথম পর্বে ১-০ গোলে জয় পাওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলের অগ্রগামিতায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। তবে ভালো ফুটবল উপহার দিতে পারেনি দল

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডের মুখে সাধারণত হাসি লেগেই থাকে। কিন্তু জেমির আজকের হাসিমুখের সঙ্গে অতীতের মুহূর্তগুলো মেলানো গেল না। দুলকি চালে স্বস্তির চওড়া হাসির সঙ্গে মুখে খই ফুটিয়ে সংবাদ সম্মেলন মাতিয়ে রাখলেন পুরো সময়। একটু আগেই বুকের ওপর থেকে নেমে গিয়েছে জগদ্দল পাথর। প্রশ্নোত্তরের এক ফাঁকে জানিয়ে দিলেন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা শুধুই উপভোগের।

বিশ্বকাপ প্রাক্‌–বাছাইপর্বে লাওস বাধা পার হতে না পারলে ছিটকে যেতে হতো ফুটবলের মূল স্রোত থেকে। আপাতত শঙ্কার মেঘ কেটে ফুটবলের আকাশে উজ্জ্বল রোদ্দুর। ভিয়েনতিয়েনে প্রথম পর্বের ম্যাচে ১-০ গোলের জয়ে এগিয়ে থাকায় আজকের গোলশূন্য ড্রয়ে বাছাইপর্ব নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। জয় না পেলেও জামাল ভূঁইয়াদের পা থেকে ন্যূনতম আশা ছিল সুন্দর ফুটবল। কিন্তু দর্শকদের সে আশাতেও গুড়েবালি।

আশা পূরণ না হলেও সমর্থকেরা মন খারাপ করে বাড়ি ফিরেছে, এই কথা বলার সুযোগ নেই। বরং মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় তুমুল করতালি পেয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা। আর বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ জেমি তো আজ পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। লক্ষ্য ছিল বাছাইপর্ব নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্য ভালোভাবে পূরণ করতে পারাটাই তাঁর জন্য স্বস্তির, ‘ভালো ফুটবল বা খারাপ ফুটবল বড় কথা নয়। আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আমরা এতেই খুশি। ড্র করে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হয়েছে, এটাই আমার কাছে বড় বিষয়। এখন আমাদের উপভোগের সময়। আগামী ২৪ ঘণ্টা খেলোয়াড়েরা উপভোগ করবে।’

লাওস–বাধা পার হয়ে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হয়েছে, দেশের ফুটবলের জন্য স্বস্তির খবরই বটে। কিন্তু ভালো ফুটবল খেলতে না পারার কৈফিয়ত দিতে হয়েছে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকেও। অধিনায়ক হেঁটেছেন কোচের পথেই, ‘আপনি টিকিটাকা খেললেন, কিন্তু জিততে পারলেন না । কোনো লাভ নেই। ম্যাচে লক্ষ্য পূরণ হওয়াটাই বড় কথা।’ জামাল আকার-ইঙ্গিতে বুঝিয়েও দিয়েছেন বাংলাদেশের আজকে লক্ষ্যই ছিল নেতিবাচক ফুটবল।

ভালো না খেলতে পারার এত কৈফিয়ত দিতে হতো না, যদি পাওয়া যেত জয়। সেটা সম্ভব হয়নি মূলত বাংলাদেশ দলের নম্বর নাইন নাবীব নেওয়াজ জীবনের ব্যর্থতায়। চার চারটি ভালো গোলের সুযোগ পেয়েও গোলের রাস্তা খুঁজে নিতে পারেননি ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা (চলতি প্রিমিয়ার লিগে)। এমন ম্যাচের পর ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতা নিয়ে কথা ওঠাটাই স্বাভাবিক। তবে শিষ্যকে আগলে রাখলেন জেমি, ‘আমি কারও বিপক্ষে কোনো অভিযোগ আনতে চাই না। সবাই সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছে। জীবন তাঁর সেরাটাই দিয়েছে।’