জবাবটা কী দারুণভাবেই না দিলেন ওয়ার্নার!

বহু আকাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির পর ওয়ার্নারের উদযাপনটাও হয়েছে দেখার মতো। ছবি: এএফপি
বহু আকাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির পর ওয়ার্নারের উদযাপনটাও হয়েছে দেখার মতো। ছবি: এএফপি
>ইংলিশ সমর্থকদের দুয়োর জবাবে কিছু বলেননি। ভারতের বিপক্ষে তাঁর ধীরগতির ইনিংস নিয়ে সমালোচনার পরও মুখ খোলেননি। সব সমালোচনার জবাব আজ ব্যাট হাতেই দিয়ে দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর প্রথম সেঞ্চুরিটা তুলে নিলেন প্রিয় প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের বিপক্ষে।

২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে শাহিন আফ্রিদির বলটা ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে দাঁড়ানো আসিফ আলীকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেল বাউন্ডারির বাইরে। পেছন ফিরে একবার দেখেই আর অপেক্ষা করলেন না ডেভিড ওয়ার্নার। শূন্যে লাফিয়ে উঠে সেই পরিচিত উদযাপনটি করলেন। সঙ্গে ওয়ার্নারের মুখের চওড়া হাসিটাই বলে দিচ্ছিল, এই সেঞ্চুরি তাঁর কাছে কতটা আকাঙ্ক্ষিত, কতটা দামি!

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এর আগেও ১৪টি সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু আজকের সেঞ্চুরিটার চেয়ে স্বস্তি সম্ভবত আর কোনো ইনিংসে পাননি। গত কয়েক দিনে তো আর কম সমালোচনা হয়নি। আজকের ইনিংসটি দিয়ে সেসব সমালোচনা যেন এক ঝটকায় বাউন্ডারির বাইরে উড়িয়ে ফেললেন।

ভারতের বিপক্ষে হারের জন্য অনেকেই দুষেছিলেন ওয়ার্নারের ধীরগতির ইনিংসকে। ৩৫৩ তাড়া করতে নেমে করেছিলেন ৮৪ বলে ৫৬। একেবারেই স্বভাববিরুদ্ধ। টেস্টেই যার স্ট্রাইক রেট ৭৫ ছুঁই-ছুঁই, সেই ওয়ার্নারই বাউন্ডারির জন্য কেমন হাঁসফাঁস করছিলেন! নিয়মিত সিঙ্গেলসও নিতে পারছিলেন না। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিফটি করতেও খেলেছিলেন ৭৪ বল। রসিকতা করে অনেকেই বলেছিলেন, আগামী অ্যাশেজের প্রস্তুতিটাই নেওয়া শুরু করলেন কি না! অথচ, সবশেষ আইপিএলে তাঁর স্ট্রাইকরেট ১৪৪।

সব সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য প্রিয় প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকেই বেছে নিলেন ওয়ার্নার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা শেষ দুটি ওয়ানডেতেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম সেঞ্চুরিটাও করলেন সেই পাকিস্তানের বিপক্ষেই। শুধু ওয়ানডেতে নয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা শেষ ৩ টেস্টেও ২টি সেঞ্চুরি আছে ওয়ার্নারের।

তবে সেঞ্চুরির চেয়েও বড় হয়ে উঠছে ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ের ধরন। শুরু থেকেই আজ আড়ষ্ট ভাব ছিল না ব্যাটিংয়ে, অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান তুলেছেন। ফিফটি ছুঁয়েছেন মাত্র ৫১ বলে, তাতে চার ৬টি। ফিফটির পরও একই গতিতে রান তুলেছেন। শেষ পর্যন্ত ১১ চার ও ১ ছয়ে ১০২ বলে তুলে নিয়েছেন বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, শাহিন আফ্রিদির বলেই ফিরেছেন ১১১ বলে ১০৭ রান করে।

এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ইংলিশ দর্শকদের দুয়োর শিকার হয়েছিলেন ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের ব্যক্তিগত ম্যানেজার জেমস আর্সকিন তখন জানিয়েছিলেন, মুখে নয়, সেঞ্চুরি করেই জবাব দেবেন ওয়ার্নার। জবাবটা বোধ হয় এর চেয়ে ভালো উপায়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না!

আরও পড়ুন