আয় বৃষ্টি ঝেঁপে

রেইন রেইন গো অ্যাওয়ে

কাম অ্যাগেইন অ্যানাদার ডে।

মাই ব্রাদার্স ওয়ান্ট টু প্লে—,

রেইন রেইন গো অ্যাওয়ে।

ও বৃষ্টি তুই চলে যা,

খেলবে আমার ভায়েরা।

পরে আসিস, এখন না,

ও বৃষ্টি তুই চলে যা।

১১ জুন, ব্রিস্টলে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার খেলাটি অবিশ্রান্ত বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ঘোষিত হলে বাংলাদেশের মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়ে গেলে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ খেলায় ৪ এবং ৪ খেলা শেষে বাংলাদেশ পায় ৩ পয়েন্ট। শ্রীলঙ্কা এগিয়ে যায় বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে। যার কাছ থেকে পূর্ণ ২ পয়েন্ট পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিল বাংলাদেশ, বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে সেই শ্রীলঙ্কাই কিনা বৃষ্টির আশীর্বাদে এক ধাপ এগিয়ে গেল সেমির পথে। মনে হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কা লাভবান হতে চলেছে।

এর আগে বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ থেকেও সে একটি মূল্যবান পয়েন্ট পেয়ে গিয়েছিল। বাকি খেলাগুলোতে বৃষ্টির কারণে আরও কত খেলা পরিত্যক্ত হবে কে জানে? শ্রীলঙ্কার বাকি সব খেলা যদি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা হয়তো আর একটি খেলা না খেলেও পেয়ে যেতে পারে সেমির আসন।

৯ পয়েন্ট মানে তো সাড়ে চার ম্যাচে জয়ের সমান।

হতাশ বাংলাদেশ। জয় দিয়ে শুরু করা এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯ অভিযান এখন সেমির আসন পাওয়া নিয়ে প্রবল অনিশ্চতার মুখে পড়েছে। এখন প্রবলতরের বিরুদ্ধে জয়ের মাধ্যমেই শুধু তার পক্ষে এখনো সেমির স্বপ্ন দেখা সম্ভব হতে পারে।

বৃষ্টি আমাদের জন্য আরও ক্ষতির কারণ হবে কি? কে বলবে?

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে সিডনিতে ১২ মিনিটের বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কাপ জয়ের স্বপ্ন। বৃষ্টি আইনে ইংল্যান্ডের কাছে সেমিতে শেষ বলে হেরে ফেভারিট দক্ষিণ আফ্রিকা বিদায় নিয়েছিল।

কী আর করা যাবে?

১৯৭১ সালে বৃষ্টির মধ্যেই যে এক দিনের ক্রিকেটের জন্ম হয়েছিল, সেই বৃষ্টি তাকে ছাড়বে কেন?

১৯৭১ সালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ড ও অসিদের মধ্যে নির্ধারিত টেস্ট ক্রিকেট টানা চার দিনের বৃষ্টিতে পণ্ড হয়ে গেলে উত্তেজিত দর্শকদের চাপে পড়ে তখন দুই দলের মধ্যে ৪০ ওভারের ক্রিকেট ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুরু হয় এক দিনের সীমিত ওভার ক্রিকেট, যা পরে ওডিআই বা এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হিসেবে আইসিসি প্রচলন করে।

প্রাণের উদ্ভব হয়েছিল জলে, এক দিনের সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্মের পেছনেও তেমনি ছিল বৃষ্টির ভূমিকা। একটানা চার দিনের বৃষ্টির কারণে টেস্ট ম্যাচটি ভেসে না গেলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ধারণাটি আমাদের মাথাতেই আসত না। শুরুতে অবশ্য ৬ বলে নয়, ৮ বলে এক ওভার ধরা হয়েছিল।

এক দিনের ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়ে উঠলে আইসিসি ১৯৭৫ সাল থেকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজন করে।

এই হলো ইতিহাস। বৃষ্টির ওপর লেখা একটা ইংরেজি ছড়া দিয়ে শুরু করেছিলাম, একটি প্রচলিত বাংলা ছড়া দিয়ে লেখাটি শেষ করছি।

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে/ রান দিব মেপে।

ডাকওয়ার্থ ও লুইস সাহেবের আবিষ্কৃত পদ্ধতি বিবেচনায় রেখে ছড়াটিতে ধানের বদলে রান ব্যবহার করলাম, যাতে এই বৃষ্টির ছড়াটি ক্রিকেটের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হয়।

দেখা যাক ইংল্যান্ডের বৃষ্টি আমাদের প্রবল প্রতিপক্ষের কাছ থেকে পয়েন্ট পেতে সহায়ক হয় কি না। হতেও তো পারে!

আসুন বৃষ্টিকে গালাগাল না করে আমরা বৃষ্টির বন্দনা করি।